শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতির মামলা বাতিলের রায় নিয়ে লিভ টু আপিলের শুনানি ১৫ জুলাই
Published: 18th, May 2025 GMT
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন দুর্নীতির মামলা বাতিল করে এক যুগের বেশি সময় আগে হাইকোর্ট রায় দিয়েছিলেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ৫ হাজার ৪৫২ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের এই আবেদনের ওপর শুনানির জন্য আগামী ১৫ জুলাই তারিখ ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ আজ রোববার এই তারিখ ধার্য করেন।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক সাব্বির হাসান বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন। মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে শেখ হাসিনা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৩ এপ্রিল হাইকোর্ট মামলাটি বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ৫ হাজার ৪৫২ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে চলতি বছরের ৫ মার্চ লিভ টু আপিল করে দুদক। লিভ টু আপিলটি গত ১৭ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ১৮ মে নির্ধারণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় বিষয়টি আজ আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ২৬ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী আসিফ হাসান শুনানিতে ছিলেন। পরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্ট শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে মামলাটি বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ৫ হাজার ৪৫২ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে লিভ টু আপিলটি করা হয়। আপিল বিভাগ লিভ টু আপিলটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনবেন। শুনানির জন্য আগামী ১৫ জুলাই তারিখ রেখেছেন আপিল বিভাগ।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপ ল ব ভ গ
এছাড়াও পড়ুন:
৪০ রোহিঙ্গাকে আটকের পর সাগরে ফেলে দিয়েছে ভারত
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে থেকে অন্তত ৪০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আটকের পর তাদেরকে জোর করে মিয়ানমারের কাছে সাগরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাইকমিশনের অফিস (ওএইচসিএইচআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এসব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের সমুদ্র সীমান্তের কাছে ভারতীয় নৌবাহিনী ফেলে দিয়েছে। এদের মধ্যে শিশু, মহিলা এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা ছিলেন। শরণার্থীরা সাঁতরে তীরে উঠে এসেছেন, তবে মিয়ানমারে তাদের অবস্থান এখনো অজানা।
শুক্রবার পাঁচজন রোহিঙ্গা শরণার্থী অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে নিশ্চিত করেছেন যে তাদের পরিবারের সদস্যরা ৬ মে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে আটককৃতদলের অংশ ছিলেন। ১৫ জন খ্রিস্টানকে সহ এই দলটিকে ৮ মে ভারতীয় নৌবাহিনী সমুদ্রে ফেলে দেয়।
শরণার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী দিলওয়ার হুসেন জানিয়েছেন, পরিবারগুলো ভারতের শীর্ষ আদালতে একটি আবেদন দায়ের করেছে, যাতে ভারত সরকারকে তাদের নয়াদিল্লিতে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানানো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা শরণার্থী জানিয়েছেন, ফিরে আসাদের মধ্যে তার ভাইও রয়েছে। ৮ মে মিয়ানমারের একটি দ্বীপে পৌঁছানোর পর স্থানীয় এক জেলের কাছ থেকে ফোন ধার করে তার ভাই কল করেছিল। ভাই তাকে জানিয়েছে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদের হাত ও চোখ বেঁধে ফেলেছিল। তাদের লাইফ জ্যাকেট দিয়ে মিয়ানমারের ভূখণ্ডের একটি দ্বীপে সাঁতারে চলে যেতে বলেছিল।
ভারতের নৌবাহিনী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস বলেছে, তারা এই ‘বিবেকহীন, অগ্রহণযোগ্য কাজ’ তদন্ত করার জন্য একজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়েছেন।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদনকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করছে না। এ সংক্রান্ত এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিস্ময় প্রকাশ করে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত নানা প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিং জরুরি শুনানির আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন।
শরণার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী সিনিয়র আইনজীবী কলিন গঞ্জালভেস প্রমাণ হিসেবে ‘মিয়ানমার উপকূল’ থেকে প্রতিবেদন এবং একটি অডিও রেকর্ডিং উপস্থাপনের প্রস্তাব দেন। তবে, আদালত জোর দিয়ে বলেছে যে এই ধরনের উপাদান জমা দেওয়া গেলেও, ‘বিদেশী প্রতিবেদনগুলো ভারতীয় সার্বভৌমত্বকে অগ্রাহ্য করতে পারে না।’
বিচারপতি কান্ত উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, “প্রতিবারই, আপনাদের কাছে একটি নতুন গল্প থাকে। এখন (কোথা থেকে) এই সুন্দরভাবে তৈরি গল্পটি আসছে?... ভিডিও এবং ছবি কে ধারণ করছিল? সে কীভাবে ফিরে এল? রেকর্ডে কী উপাদান আছে?”
ঢাকা/শাহেদ