ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন প্রথম সংঘটিত হয় সিলেট শহরে। সময়টা ১৭৮২ সাল। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী দিনটি ছিল ১০ মহররম। সৈয়দ হাদী ও সৈয়দ মাহাদি নামের দুই ভাই সেই দিন সিলেটের তৎকালীন ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর রবার্ট লিন্ডসের সুসজ্জিত বাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘটিত বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়ে শহীদ হন।

লোকমুখের ইতিহাসে ‘হাদা মিয়া’ ও ‘মাদা মিয়া’ নামে খ্যাত দুই ভাইয়ের বীরত্বপূর্ণ অবদান নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘মালজোড়া গানের আসর’ বসেছিল। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের আয়োজনে নগরের পূর্ব শাহী ঈদগাহ এলাকার একাডেমি প্রাঙ্গণে তিন দিনব্যাপী লোকনাট্য উৎসবের উদ্বোধনী দিনে এ পরিবেশনা হয়। একাডেমির প্রশিক্ষণার্থীরা এটি মঞ্চায়ন করেন।

বিকেল পাঁচটায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উৎসবের উদ্বোধন হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.

আনোয়ার উজ জামান। জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জ্যোতি সিনহার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য শামসুল বাসিত শেরো ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের প্রধান পরিচালক অরিন্দম দত্ত।

উদ্বোধনী পর্ব শেষে বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে ‘হাদা মিয়া মাদা মিয়ার পালা’ শীর্ষক মালজোড়া গান পরিবেশন করেন শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষণার্থীরা। টানা ৪৫ মিনিট পালাটি চলে। এটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নাট্যব্যক্তিত্ব ভবতোষ রায় বর্মণ। পালায় মূল দুই গায়ক ছিলেন সুমন চক্রবর্তী ও শুভ রঞ্জন দাস। পরে শিল্পী প্রতীক এন্দের পরিচালনায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির সংগীত সাধারণ বিভাগের প্রশিক্ষণার্থীরা সমবেত কণ্ঠে হাসন রাজার ‘লোকে বলে বলে রে’ গানটি পরিবেশন করেন।

জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা জ্যোতি সিনহা প্রথম আলোকে বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিদের দিয়ে ঐতিহ্যবাহী মালজোড়া গানের পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিন দিনের আয়োজনে আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটায় সারিগান, ধামাইল ও পুথি পাঠ এবং আগামীকাল শনিবার একই সময়ে কবিগানের লড়াই অনুষ্ঠিত হবে। সবশেষে হবে সমাপনী পর্ব।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক ড ম র শ ল পকল পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

সাত দিন ‘অন্যদিন…’

কামার আহমাদ সাইমন পরিচালিত এবং সারা আফরীন প্রযোজিত ‘জলত্রয়ী’ সিরিজের দ্বিতীয় অংশ ‘অন্যদিন…’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল। এদিন থেকে টানা সাতদিন রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সের সীমান্ত সাম্ভার প্রেক্ষাগৃহে টানা সাত দিন প্রদর্শিত হবে।

‘অন্যদিন…’ দেশের অন্যতম বিতর্কিত ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিনেমাগুলোর মধ্যে একটি। বিশ্বের প্রথম সারির চলচ্চিত্র উৎসব ইডফার মূল প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত এই ছবি, কানের সিনেফন্দেশিওনের অফিসিয়াল সিলেকশনে থাকায় বিশেষ নজর কাড়ে। লোকার্নোর পিয়াতজা গ্রান্দায় বাংলাদেশের প্রথম ‘ফিচারড ডিরেক্টর’ হিসেবে সম্মাননা লাভের পাশাপাশি ক্যামডেনের হ্যারেল অ্যাওয়ার্ড ও ফ্রান্সের আর্তে ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজসহ বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে। 

এদিকে, দেশের রাজনৈতিক কারণে ছবি নিষিদ্ধ থাকার দীর্ঘ সময় কাটিয়ে এবার মুক্তি পাওয়া প্রসঙ্গে প্রযোজক সারা আফরীন বলেন, “কান, লোকার্নো, ক্যামডেনসহ আন্তর্জাতিক মঞ্চে যতই স্বীকৃতি ও পুরস্কার পেলেও দেশে ছবিটি দীর্ঘদিন নিষিদ্ধ ছিল। ২০১৪ সালে সানড্যান্স থেকে ‘অন্যদিন…’ গ্রান্ট জেতার পর ২০২১ সালে ইডফায় ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারের সময় তাদের ওয়েবসাইটে ছবিটিকে ‘ক্যালাইডস্কোপিক ও ফিলসফিক্যাল’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল। নিউইয়র্কের মোমি মিউজিয়ামে মাস্টারপিস হিসেবে নির্বাচিত, জুরিখ, সিডনি ও নন্তের ফেস্টিভ্যাল অফ থ্রি কন্টিনেন্টস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণসহ ফিল্ম-ইংক ‘ছবিটা সবচেয়ে বড় পর্দায় দেখানো উচিত’ উল্লেখ করেছে। তবে দেশের সেন্সর বোর্ডের কারণে দীর্ঘদিন আটকে ছিল ‘অন্যদিন…’।”

‘অন্যদিন…’ কামার আহমাদ সাইমনের নির্মিত ‘জলত্রয়ী’র দ্বিতীয় ছবি। এর আগের ছবি ‘শুনতে কি পাও!’ 
প্যারিসের জর্জ পম্পিদ্যু সেন্টারে সিনেমা দ্যু রিলে শ্রেষ্ঠ ছবির জন্য গ্রান্ড প্রাইজ (Grand Prix) অর্জন করেছিল এবং মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণশঙ্খ (Golden Conch) পেয়েছিল। এছাড়াও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে দেশীয় চলচ্চিত্র মহলে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। পরিচালক কামার আহমাদ সাইমন জানান,

“একটা ছবিকে গায়েব করা মানে একজন নির্মাতাকে গুম করে দেওয়া। ২৪ সালের জুলাইয়ের আগে ‘অন্যদিন…’ দেখানো বন্ধ ছিল। তাই ঠিক করেছিলাম এরপর আর কোনো ছবি বানাবো না। কিন্তু জুলাই এসে সব কিছু বদলে দিয়েছে। বিগত সময়ের সেন্সর নিষেধাজ্ঞা ছিল ছবিটিকে আটকে রাখার পেছনে, কারণ ছবিটা প্রফেটিক ছিল। কিন্তু এখন সুযোগ এসেছে, তাই এই জুলাইয়েই ছবিটিকে মুক্তি দিচ্ছি। 

‘অন্যদিন…’ এর মুক্তি দেশের স্বাধীন চিন্তা ও শিল্পের জোরালো প্রতিনিধিত্ব হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চলচ্চিত্রটি যে শুধু একটি সিনেমা নয়, বরং এক সময়ের সামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিবাদ ও মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরে, সেটাই দর্শক ও বিশ্লেষকদের কাছ থেকে এই সিনেমার উচ্চ প্রশংসার অন্যতম কারণ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লস অ্যাঞ্জেলেস মাতাবেন ঢাকার তারকারা
  • ঢাকার একঝাঁক তারকা নিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসে ‘আনন্দমেলা’
  • ঢাকার তারকা নিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসে ‘আনন্দমেলা’
  • টিএসসিতে আনন্দ-আড্ডায় সাংবাদিকতা বিভাগের প্রাক্তন-বর্তমান শিক্ষার্থীরা
  • ঈশ্বরদীতে বর্ষা উৎসবে দুই বাংলার কবি-সাহিত্যিকরা
  • ‘উৎসব’–এর টিকিট নেই...
  • ধানমন্ডিতে প্রাণের আম উৎসব শুরু, দ্বিতীয় দিনের আয়োজন আজ
  • টি–টোয়েন্টিতেও হার দিয়েই শুরু বাংলাদেশের
  • ৬ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি
  • সাত দিন ‘অন্যদিন…’