সাকিব-রিশাদদের ফাইনাল আজ, কখন ও কীভাবে দেখা যাবে
Published: 25th, May 2025 GMT
কাগজে-কলমে অনেকেই এবার লাহোর কালান্দার্সকে ফেভারিট হিসেবে ধরেননি। তার ওপর ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির পর স্যাম বিলিংস, ড্যারিল মিচেল, ডেভিড উইসা না ফেরা এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে সিকান্দার রাজা চলে যাওয়ায় লাহোরের শক্তি অনেক কমে গিয়েছিল।
কিন্তু সব হিসাব উল্টে দিয়ে ফাইনালে উঠে গেছে তারা। আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায় লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে শিরোপা লড়াইয়ে নামবেন রিশাদ-সাকিবরা। গত চার বছরে এটা লাহোরের তৃতীয় ফাইনাল। আগের দুই ফাইনালে শিরোপা জিতেছিল লাহোর। ম্যাচটি বাংলাদেশ থেকে নাগরিক টিভিতে সরাসরি দেখা যাবে।
লাহোরের এই ফাইনালে আসার পেছনে অন্যতম অবদান রিশাদ হোসেনের। বাংলাদেশি এ লেগস্পিনার গত শুক্রবার ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৩ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। আউট করেছেন ইসলামাবাদের মিডল অর্ডারের তিন ভরসা সালমান আগা, শাদাব খান ও জিমি নিশামকে। এ পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষের দেওয়া আইফোন পেয়েছেন রিশাদ।
এলিমেনেটরে কিন্তু তরুণ এ লেগস্পিনার দলে ছিলেন না। কোয়ালিফায়ারে তাঁকে ফেরানো হয়। পাকিস্তানের পেসার জামান খানের জায়গায় বাংলাদেশি এ লেগিকে খেলানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল তারা। পুরস্কার তুলে দেওয়ার আগে রিশাদকে ফেরানোর গল্পটা বলেছেন লাহোর কালান্দার্স পরিচালক সামিন রানা, ‘সত্যিই রিশাদ তুমি আমাদের গর্বিত করেছ। তুমি চাপে ছিলে, তখন তুমি ওদের মূল ব্যাটসম্যানদের আউট করেছ, যারা স্পিনের বিপক্ষে ভালো খেলে বলেই ধরা হয়।’ পিএসএলে রিশাদ এ পর্যন্ত ছয়টি ম্যাচ খেলে পেয়েছেন ১২ উইকেট। তবে ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষবিরতির পর তাঁর দলে যোগ দেওয়াটা একটু কঠিনই ছিল।
ওই সংঘর্ষের মাঝে বিশেষ বিমানে ফেরার সময় রিশাদের কিছু কথায় ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষ নাখোশ হয়েছিল। তবে আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ শেষে ঠিকই তিনি চলে যান লাহোর। ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষও বরণ করে নেয় তাঁকে। লাহোরের আরেক বাংলাদেশি সাকিব অবশ্য খুব একটা ভালো করছেন না। ব্যাট হাতে শুক্রবার রাতেও শূন্য রানে আউট হয়েছেন তিনি। ১৮ মে পেশোয়ারের বিপক্ষে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন তিনি। বল হাতে অবশ্য সময়টা মোটামুটি কাটছে তাঁর। করাচির বিপক্ষে ১ ওভারে ৪ রান দিয়ে ১ উইকেট পেলেও আর বোলিং পাননি। বাকি দুই ম্যাচে পাননি উইকেট।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প এসএল স ক ব আল হ স ন ফ ইন ল উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলে সহকারী শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে প্রাথমিকের পরীক্ষার হলে দায়িত্বে অভিভাবকেরা
পরীক্ষার হলে নেই চেনা শিক্ষকেরা, প্রশ্নপত্র হাতে নিয়ে কক্ষ পরিদর্শকের ভূমিকায় দাঁড়িয়েছেন অভিভাবকেরা। কোথাও বাবা দায়িত্বে, কোথাও মা হাঁটাহাঁটি করছেন বেঞ্চের ফাঁকে। তিন দফা দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির মধ্যে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে আজ সোমবার এই দৃশ্য দেখা গেছে।
অভিভাবকেরা জানান, প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি শুরু হলে উপজেলাজুড়ে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এমন অবস্থায় বাধ্য হয়ে প্রধান শিক্ষকেরা অভিভাবকদের ডাকছেন। আর সেই ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে তাঁরা এই দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন‘স্কুলে আসার পর স্যাররা বলল আজ পরীক্ষা হবে না’৪৮ মিনিট আগেশিক্ষকদের সূত্রে জানা যায়, বেতন গ্রেড উন্নীতকরণসহ তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। কর্মসূচিতে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন তাঁরা। আজ সখীপুর উপজেলার ১৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের নতুন সিদ্ধান্ত না আসায় আন্দোলনকারী সহকারী শিক্ষকেরা বার্ষিক পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন না। তাই বাধ্য হয়ে প্রধান শিক্ষকেরা অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সখীপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষকেরা অফিস কক্ষে বসে আছেন। পরীক্ষার হলগুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন অভিভাবকেরা। তবে দু-একটি কক্ষে অভিভাবক বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ ছিলেন না। পরে প্রধান শিক্ষক আগ্রহী অভিভাবকদের খুঁজে এনে কক্ষের দায়িত্ব দিচ্ছিলেন।
শিক্ষকদের পরিবর্তে অভিভাবক দিয়ে পরীক্ষা চালানো মোটেই ঠিক হচ্ছে না। কারণ, তাঁরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ নন।ফারজানা আক্তার, অভিভাবকউপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে পরীক্ষা চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শাহীনা আখতার। তিনি বলেন, ‘সহকারী শিক্ষকেরা আমাকে কোনো সহযোগিতা করছেন না। এমনকি অভিভাবকদেরও পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালনে বাধা দিচ্ছেন।’ তবে অভিযোগটি অস্বীকার করে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আফরোজা আক্তার বলেন, ‘আমরা পরীক্ষার চালাতে কোনো বাধা দিচ্ছি না, তবে সহযোগিতাও করছি না। প্রধান শিক্ষকই আমাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করছেন না।’
এদিকে পরীক্ষা গ্রহণে এমন বিশৃঙ্খল পরিবেশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন অভিভাবক। তাঁরা বিদ্যালয়টির মূল ফটকের সামনে হইচই করে প্রতিবাদও জানিয়েছেন। ফারজানা আক্তার নামের এক অভিভাবক বলেন, শিক্ষকদের পরিবর্তে অভিভাবক দিয়ে পরীক্ষা চালানো মোটেই ঠিক হচ্ছে না। কারণ, তাঁরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ নন।
আরও পড়ুন‘শিক্ষার্থীদের জিম্মি করা, বাজে নজির হয়ে থাকবে’৩ ঘণ্টা আগেআরেকজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন, এটা ভালো কথা। কিন্তু খুদে শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে নিজেদের দায়িত্ব পালন করা উচিত ছিল।
এ ছাড়া পরীক্ষার হলে অভিভাবকদের দায়িত্ব পালনের সময় নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের কেউ কেউ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, ‘যেসব অভিভাবক পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করেছেন, তাঁরা নিজেদের ও পরিচিত শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর বলে দিয়েছেন।
পরীক্ষা গ্রহণে কোনো ধরনের স্বজনপ্রীতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সখীপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্বরত এক অভিভাবক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই ব্যক্তি বলেন, ‘আমার বাচ্চা যে কক্ষে বসে পরীক্ষা দিচ্ছিল, সে কক্ষে দায়িত্ব পালন করিনি। আমি চেষ্টা করেছি, সহকারী শিক্ষকদের মতোই দায়িত্ব পালন করতে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনুরোধেই মূলত এটি করেছি।’
আমার বাচ্চা যে কক্ষে বসে পরীক্ষা দিচ্ছিল, সে কক্ষে দায়িত্ব পালন করিনি। আমি চেষ্টা করেছি, সহকারী শিক্ষকদের মতোই দায়িত্ব পালন করতে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনুরোধেই মূলত এটি করেছি।পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত এক অভিভাবকআরও পড়ুন‘স্কুলে এসে দেখছি পরীক্ষা স্থগিত’৫ ঘণ্টা আগেউপজেলার দু–একটি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের চাপ প্রয়োগ করে পরীক্ষা গ্রহণের দায়িত্ব পালনে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কালিদাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন কমিটির সক্রিয় কর্মী মুক্তি মালেক। তিনি বলেন, তবে অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা বার্ষিক পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে বিরত ছিলেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক অধিদপ্তর থেকে বার্ষিক পরীক্ষা চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। তবে কিছু বিদ্যালয়ে অভিভাবকেরা পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করেছেন বলে শুনেছি ও দেখেছি। তবে আমি মনে করি, সহকারী শিক্ষকদের অন্তত পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করা উচিত।’