মুক্তিপণ দিয়ে ডোবায় পেল শিশুর লাশ, এখনও নিখোঁজ অপর শিশু
Published: 12th, July 2025 GMT
গফরগাঁওয়ে সিফাত ও সাদাব নামে দুই শিশু নিখোঁজের একদিন পর পরিত্যক্ত একটি ডোবা থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাদাবের সন্ধান মেলেনি। শনিবার চরশাখচূড়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ সিফাতের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে সিফাতের পরিবারের কাছে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চাইলে দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়। সাদাবকেও অপহরণের অভিযোগ করেছে তার পরিবার। পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, পাগলা থানার চরশাখচূড়া ও দীঘিরপাড় গ্রামে গতকাল শুক্রবার দুপুরে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু দুটি। খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পাগলা থানার ওসি মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম।
জানা গেছে, সৌদি প্রবাসী নূর ইসলামের ছেলে ও চরশাখচূড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সিফাত গত শুক্রবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল। দিনভর সাম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন স্বজনরা। কোথাও তার খোঁজ মেলেনি। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশু সিফাতের নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করেন স্বজনরা। এই সুযোগে এক ধরনের প্রতারক চক্র অপহরণের কথা বলে নিহত শিশুটির পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণের নামে কিছু টাকা আদায় করে।
শনিবার সকাল ৭টার দিকে শিশুটির বাড়ি থেকে আনুমানিক ১৫০ গজ দূরে একটি পরিত্যক্ত পুকুরে তার লাশ ভাসতে দেখেন এলাকাবাসী। পরে তারা পাগলা থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী লাশের শরীরে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
নিহত সিফাতের মা সাবিনা আহাজারি করতে করতে বলেন, তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে। তাদের কোনো শক্র নেই। গ্রামের শহিদুলের ছেলে আরমান তাঁর কলেজ পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে বাড়িতে এসে ঝগড়া করে এবং এর পর তাদের ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল। এ ঘটনার পর থেকে আরমান গা-ঢাকা দিয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
নিহত সিফাতের মামা জিসান জানান, তাঁর ভাগনে নিখোঁজ হওয়ার পর যখন খোঁজাখুঁজি করছেন, এমন সময় তাঁর ভগ্নিপতি নুর ইসলাম প্রবাস থেকে ফোন করে বলেন, তাঁর কাছে ২০ হাজার টাকা চেয়েছে ছেলেকে জীবিত উদ্ধারের জন্য। পরে অপহরণকারীদের ফোন নম্বর দিলে যোগাযোগ করা হয়, তখন তাদের দেওয়া নম্বরে প্রথমে ২ হাজার টাকা বিকাশ করেন তিনি। পরে অপহরণকারীরা উল্টাপাল্টা কথা বললে আর টাকা দেননি।
পুলিশ জানায়, শিশু সিফাতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারঘুরিয়া গ্রামের প্রবাসী আল আমিনের ছেলে সাদাব তার মায়ের সঙ্গে গফরগাঁও উপজেলার দীঘিরপাড় গ্রামে নানার বাড়িতে বাস করত। গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খেলার জন্য ঘর থেকে বের হয় শিশুটি। এর পর থেকে নিখোঁজ সে। বাড়ির আশপাশের সব পুকুর ও সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির খোঁজ না পেয়ে উৎকণ্ঠায় আছে পরিবার।
শিশুটির মা সুমাইয়া আক্তার দাবি করেন, তাঁর একমাত্র ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পাগলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন শিশুটির নানা সুলতান মিয়া।
পাগলা থানার ওসি মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেছেন, শিশু সিফাতের ঘটনা অপহরণ ও মুক্তিপণের কোনো বিষয় নয়। এখানে শক্রতাসহ সম্ভাব্য বেশ কয়েকটি কারণ নিয়ে তদন্ত চলছে। শিশু সাদাবকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন তারা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় ৮ দিনেও খোঁজ মেলেনি অপহৃত কিশোরীর
সাতক্ষীরার আশাশুনি থেকে আট দিন আগে অপহরণ হওয়া এক কিশোরীর খোঁজ এখনো মেলেনি। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলেও মেয়েটিকে খুঁজে বের করতে পারেনি পুলিশ। মেয়েকে জীবিত ফেরত পেতে ব্যাকুল হয়ে আছে পরিবার।
বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে অপহৃতের বাবা বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান।
আরো পড়ুন:
আইজিপির সঙ্গে কমনওয়েলথ প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
নির্বাচনে পুলিশকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে: ডিএমপি কমিশনার
মেয়েটির বাবার করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তার ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে কু-প্রস্তাব দেন আশাশুনির খড়িয়াটী গ্রামের পীর আলী সরদারের ছেলে গোলাম কিবরিয়া। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২২ অক্টোবর মাদারাসায় যাওয়ার পথে গোলাম কিবরিয়া তার সহযোগীদের সহায়তায় মেয়েটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে মেয়ের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযুক্তরা তাকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখেছে। এ ঘটনায় আশাশুনি থানায় জিডি করেন মেয়েটির বাবা, যার নং ১৩১২, তাং- ২৭/১০/২৫।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত গোলাম কিবরিয়ার মোবাইলে কল করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সামসুল আরেফিন বলেন, “মেয়েটির পরিবার সাধারণ ডায়েরি করেছে। মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে উদ্ধার করতে পারব।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ