সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে আরও ২৩ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
Published: 27th, May 2025 GMT
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী সীমান্ত দিয়ে ২৩ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ মঙ্গলবার ভোরে তাঁদের বাংলাদেশের ভেতরে পাঠানো হয়।
কুশখালী সীমান্তের বিপরীতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থানার খালিশা সীমান্ত। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই ২৩ জনকে আটক করে গতকাল সোমবার স্বরূপনগর এলাকায় রাখা হয়। পরে আজ ভোরে তাঁদের কুশখালী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। এরপর তাঁদের কুশখালী বিজিবি ক্যাম্পে নেওয়া হয়।
এ সম্পর্কে কুশখালী বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে কথা বলছি। বিস্তারিত জানতে হলে ৩৩ বিজিবির সাতক্ষীরার প্রধান কার্যালয়ে কথা বলতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশরাফুল হকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে ৩৩ বিজিবির প্রধান কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাঁদের ভারত থেকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। এ বিষয়ে পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।’
এর আগে ৯ মে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা-সংলগ্ন পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৩ জনকে রেখে যায় বিএসএফ। তাঁদের উদ্ধারের পর যাচাই-বাছাই শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুনসুন্দরবনে বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৩ জনকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর১৩ মে ২০২৫আরও পড়ুনগুজরাট থেকে উড়োজাহাজ-লঞ্চে করে চোখ বেঁধে আনা হয়েছে, জানালেন ভুক্তভোগীরা১২ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রৌমারী সীমান্তে উত্তেজনা, ভারতীয় অংশে সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ বিএসএফের
কুড়িগ্রামের রৌমারীর বড়াইবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ১৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর (পুশইন) চেষ্টার ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। উত্তেজনার একপর্যায়ে সীমান্তে ভারতীয় অংশে সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটনায় বিএসএফ।
আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টার পর থেকে রৌমারী সদর ইউনিয়নের বড়াইবাড়ি সীমান্তে-১০৬৭ সীমানা পিলারের নো ম্যান্স ল্যান্ডে এ উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে এলাকাবাসীর সহায়তায় বড়াইবাড়ি বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
জানা গেছে, পুশইন করা ১৪ জনের মধ্যে ৯ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে অবৈধভাবে ১৪ জনকে বড়াইবাড়ি সীমান্ত দিয়ে পুশইন করার চেষ্টা করে বিএসএফ। বিষয়টি বুঝতে পেরে বাধা দেয় বিজিবি। এ নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় বিএসএফ তাদের সীমান্তে সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটনায়। এ দিকে বিজিবির পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হলেও বিসএফের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।
বড়াইবাড়ী সীমান্তের বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল হক বলেন, ‘ভারত থেকে কয়েকজন ব্যক্তিকে বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছিল বিএসএফ, এতে বাধা দেয় বিজিবি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভোরে বিএসএফ ককটেট বিস্ফোরণ ঘটায়। কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দও শোনা যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি কিছু থমথমে।’
জামালপুর ব্যাটালিয়নের-৩৫ বিজিবির সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডজুটেন্ট শামসুল হক বলেন, ‘বিএসএফ অবৈধভাবে পুশইনের চেষ্টা করলে বিজিবি বাধা দেয়। পুশইন করা ব্যক্তিরা কোন দেশের নাগরিক তা জানা যায়নি, তারা দুই দেশে শূন্য রেখায় রয়েছে। ঘটনাস্থলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গেছে। আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গগত, ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল বড়াইবাড়ি গ্রামে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (তৎকালীন বিডিআর) ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে। ওই সংঘর্ষে বিএসএফের ১৬ জন সৈন্য নিহত হন, যাদের লাশ বাংলাদেশ সীমান্তের ধান ক্ষেতে পড়ে ছিল।