মহার্ঘ ভাতা কি সরকারি কর্মকর্তাদের খুশি করতে দেওয়া হচ্ছে: সিপিডি
Published: 27th, May 2025 GMT
সরকার মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এখন যে ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয়, তার বদলে এটি দেওয়া হবে। এতে সরকারি ব্যয় প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা বেড়ে যাবে। এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের(সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, এটা কি সরকারি কর্মকর্তাদের খুশি করতে করা হচ্ছে?
ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, অন্যদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া না হলে মূল্যস্ফীতির চাপে পড়বে সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া এই বরাদ্দ দেওয়ার সময় নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার চলতি অর্থবছরে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সিপিডির তৃতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনায় এসব কথা বলেন ফাহমিদা খাতুন। বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান ও গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
এদিকে চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা আদায়ে বছরের বাকি সময়ে ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। অর্থ বছর শেষ হবে আগামী ৩০ জুন। এই সময়ে এটা আদায় করা প্রায় অসম্ভব হবে বলে মনে করছে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
এর আগে মার্চ মাসে তারা জানিয়েছিল, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি হতে পারে ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ৮ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ১০ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়া জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সামগ্রিক রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে তিনি মনে করেন, এনবিআরের চলমান সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখা উচিত।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের নতুন শুল্ক, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আয় ৩০ হাজার কোটি ডলারে উঠতে পারে
চলতি বছর এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলার শুল্ক আয় করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কের কারণে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এই আয় ৩০০ বিলিয়ন বা ৩০ হাজার কোটি ডলারে উঠতে পারে।
হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বক্তব্য দিতে গিয়ে স্কট বেসেন্ট বলেন, ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কল্যাণে মূল আয় শুরু হয়েছে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে। অর্থাৎ গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক আরোপের পর ৯ এপ্রিল তা স্থগিত করে যখন ১০ শতাংশ অতিরিক্ত ন্যূনতম শুল্ক আরোপ করেন, তার পর থেকে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম ও গাড়িতেও শুল্ক আরোপ করেন তিনি।
স্কট বেসেন্ট বলেন, তাই ধারণা করা যায়, বছরের শেষে শুল্ক আয়ের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন বা ৩০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। দেশটির অর্থ বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেন, এই ৩০ হাজার কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া পঞ্জিকা বছরের জন্য ধরা হয়েছে, সরকারের অর্থবছরের (যা শেষ হয় ৩০ সেপ্টেম্বর) জন্য নয়।
সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালেই যদি ৩০০ বিলিয়ন বা ৩০ হাজার কোটি ডলারে উঠে যায়, তাহলে বোঝা যাবে আগামী দিনগুলোতে শুল্ক আদায়ের গতি অনেক বেড়ে যাবে। অর্থাৎ এখনকার তুলনায় শুল্ক আদায় অনেকটা বেড়ে যাবে।
বেসেন্ট আরও বলেন, কংগ্রেশনাল বাজেট অফিসের অনুমান, আগামী ১০ বছরে শুল্ক থেকে আয় হবে প্রায় ২ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন বা ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলার। কিন্তু তাঁর অনুমান, এই হিসাব বাস্তবতার তুলনায় অনেক কম, অর্থাৎ রক্ষণশীল হিসাব।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ জানায়, মে মাসে রেকর্ড পরিমাণ শুল্ক আদায় হয়েছে। এই সময় মোট ২২ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ২ হাজার ২৮০ কোটি ডলার আয় হয়েছে। এই অঙ্ক আগের বছরের মে মাসের তুলনায় প্রায় চার গুণ। সেবার শুল্ক আদায় হয়েছিল ৬২০ কোটি ডলার।
২০২৫ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে মোট শুল্ক আদায় হয়েছে ৮৬ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ৮ হাজার ৬১০ কোটি ডলার। আর ২০২৫ পঞ্জিকা বর্ষের প্রথম ৫ মাসে আদায় হয়েছে ৬৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ৩৪০ কোটি ডলার।
আগামী শুক্রবার জুন মাসের বাজেট দেবে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে শুল্ক আদায়ে বড় প্রবৃদ্ধির তথ্য উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ৩০ জুন পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, অর্থবছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শুল্ক ও আবগারি শুল্ক মিলিয়ে মোট আদায় হয়েছে ১২২ বিলিয়ন বা ১২ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তামার ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে—আবাসন, ইলেকট্রনিকস, যানবাহন, বিদ্যুৎব্যবস্থা ও সামরিক সরঞ্জামে এই ধাতু বহুল ব্যবহৃত। ট্রাম্প আরও জানান, সেমিকন্ডাক্টর ও ওষুধের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আসছে।