যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি–বিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে এ বার্তা দিয়েছেন যে ইরান ইস্যুতে দুই দেশের কৌশল যেন একই রকম হয়।

গতকাল সোমবার ইসরায়েল সফর শেষ করেছেন ক্রিস্টি নোয়েম। পরে ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাঁর খোলামেলা ও সরাসরি আলোচনা হয়েছে।

ক্রিস্টি এমন একসময় এ মন্তব্য করলেন, যখন মার্কিন ও ইরানি কর্মকর্তারা রোমে পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে পঞ্চম দফা আলোচনা শেষ করলেন।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রোববার চতুর্থ দফায় আলোচনায় বসছে ইরান১০ মে ২০২৫

ক্রিস্টি নোয়েম বলেন, ‘এসব আলোচনার অগ্রগতি কেমন এবং আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এগোনো কতটা গুরুত্বপূর্ণ—সেসব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর (নেতানিয়াহু) সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশেষভাবে আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন।’

গত রোববার ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, (ইরানের সঙ্গে) আলোচনার অগ্রগতি ইতিবাচক। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইরানের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমি জানি না, দুই দিনের মধ্যে আপনাদের ভালো, না খারাপ খবর দিতে পারব। তবে আমার মনে হচ্ছে, সেটা ভালো কিছুই হবে।’

ইরানের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমি জানি না, দুই দিনের মধ্যে আপনাদের ভালো, না খারাপ খবর দিতে পারব। তবে আমার মনে হচ্ছে, সেটা ভালো কিছুই হবে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

গত সপ্তাহে সিএনএন এক প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চলমান আলোচনার মধ্যেও ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ইরানও যেকোনো ইসরায়েলি হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বানচাল করার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেছে ইরান।

আরও পড়ুননিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে পারমাণবিক চুক্তি সম্ভব: ইরান১৫ মে ২০২৫

ইসরায়েল শুরু থেকেই ইরানের পরমাণু আলোচনার ব্যাপারে সন্দিহান। নেতানিয়াহু অনেক বছর ধরে বলে আসছেন, ইরান শিগগিরই পারমাণবিক বোমা তৈরি করবে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা দেশকে তাঁদের জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখেন। কারণ, তাঁদের দাবি—ইরান এ অঞ্চলে ইসরায়েলবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে।

গতকাল ক্রিস্টি নোয়েম বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র জানে, নেতানিয়াহু ইরানকে বিশ্বাস করেন না। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের জন্য বার্তা হলো, আমাদের এমন একজন প্রেসিডেন্ট আছেন, যিনি শান্তি চান। কিন্তু সেই সঙ্গে এমন একজন প্রেসিডেন্টও চান, যিনি ভবিষ্যতে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র সক্ষমতা কোনোভাবেই সহ্য করবেন না। তারা কোনো পারমাণবিক অস্ত্র পাবে না। প্রেসিডেন্ট তা হতে দেবেন না।’

আরও পড়ুনট্রাম্প একই সঙ্গে শান্তির কথা বলছেন, হুমকিও দিচ্ছেন: ইরানের প্রেসিডেন্ট১৭ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্রান্সে এক্সের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

ফ্রান্সে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্সের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক তদন্ত শুরু হয়েছে। প্ল্যাটফর্মটির অ্যালগরিদমে ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন এনে ‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’ ঘটানো হয়েছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ফরাসি পুলিশ। 

শনিবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া। 

শুক্রবার (১১ জুলাই) প্যারিসের প্রসিকিউটর অফিস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, এক্সের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে দুটি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে- অ্যালগরিদম পরিবর্তন এবং ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে তথ্য সংগ্রহ। এই অভিযোগ ‘সংগঠিত তথ্য সিস্টেম হ্যাকিং’-এর আওতায় পড়ে, যা ফরাসি আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।

আরো পড়ুন:

সংসার ভাঙলো কনার, ন্যান্সি ‘শিয়াল রাণী’ বললেন কাকে?

‘তাণ্ডব’র প্রদর্শনী বন্ধ, আপনি আছেন বন্দর নিয়ে?’ সরকারের প্রতি নিপুণের প্রশ্ন

প্রসিকিউটর লোর বেকো বলেছেন, জাতীয় জেনডারমারিকে এই মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে, প্যারিসের প্রসিকিউটর অফিসের সাইবার ক্রাইম ইউনিট দুটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেয়েছিল। ফরাসি সংসদের একজন সদস্য এবং একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই মামলার অভিযোগ দাখিল করেন। উভয় অভিযোগেই অভিযোগ করা হয়েছে যে, এক্সের অ্যালগরিদম বিদেশি হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  ফরাসি সংসদের আরো কয়েকজন সদস্য সম্প্রতি এক্সের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন, বিশেষ করে প্ল্যাটফর্মের এআই চ্যাটবট ‘গ্রোক’-এর সাম্প্রতিক ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এই মামলায় এক্স প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি আইনি সত্তা এবং কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তদন্তের আওতায় এসেছে।

তদন্তকারীরা এখন প্রমাণ খুঁজছেন- এক্স প্ল্যাটফর্ম কীভাবে কনটেন্ট প্রদর্শনের অ্যালগরিদম পরিবর্তন করে চরম ডানপন্থি মতাদর্শকে এগিয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপের সাম্প্রতিক নির্বাচনে ডানপন্থি প্রার্থীদের পোস্টগুলো বেশি প্রচারিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, এক্স-এ সাম্প্রতিক সময়ে ঘৃণামূলক, বর্ণবাদী, এলজিবিটিকিউ+ বিরোধী ও সমকামবিরোধী রাজনৈতিক কনটেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ফ্রান্সের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে।

এক্স ফ্রান্সের সিইও লরেন্ট বুয়ানেক জানুয়ারিতে একটি পোস্টে বলেছিলেন, ঘৃণামূলক কনটেন্ট ঠেকাতে এক্সের কঠোর ও স্পষ্ট নীতিমালা রয়েছে। তিনি আরো যোগ করেন, প্ল্যাটফর্মটি ‘ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে’ এবং এর অ্যালগরিদম ‘ঘৃণাত্মক কনটেন্ট’ ঠেকাতে ডিজাইন করা হয়েছে।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ