ভৈরবে ছিনতাই প্রতিরোধে সড়ক পাহারা দেবেন স্থানীয় বাসিন্দারা
Published: 27th, May 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ছিনতাই প্রতিরোধে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত প্রধান প্রধান সড়কগুলো পাহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভৈরব প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ছিনতাই প্রতিরোধ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখানে সভাটির আয়োজন করে ভৈরব নাগরিক সমাজ সভা। বেলা সোয়া একটা পর্যন্ত চলমান সভায় সভাপতিত্ব করেন পৌর বিএনপির সহসভাপতি মারুকি শাহিন।
আরও পড়ুনভৈরবে ছিনতাইয়ের প্রতিবাদে সভা, ঠিক তখনই আরেক ছিনতাইয়ের ঘটনা২৩ মে ২০২৫বক্তারা জানান, দেশের অন্য স্থানের সঙ্গে ভৈরবের ছিনতাইকারী ও ছিনতাইয়ের ধরনের বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য আছে। সাধারণত ছিনতাইকারীদের প্রধান লক্ষ্য থাকে সর্বস্ব হাতিয়ে নেওয়া। কিন্তু ভৈরবের ছিনতাইকারীরা এতেও পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়। সবকিছু কেড়ে নেওয়ার সময় আক্রান্ত ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আহত করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রাণও হারান ভুক্তভোগী। সর্বশেষ চলতি বছরের ২ মে প্রাণ হারান পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বট কাজল গ্রামের সজীব। তিনি রাজধানী থেকে ট্রাক নিয়ে সিলেটের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ভৈরবে নামামাত্রই তিনি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন।
সভায় বক্তব্য দেন ভৈরব উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, ভৈরব প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব সোহেলুর, গণ অধিকার পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ, ভৈরব চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক তানভীর আহমেদ, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আক্তারুজ্জামান, মাহিন সিদ্দিকী, ভৈরব টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজ্জামান ফারুক প্রমুখ।
আরও পড়ুনপ্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে নেমে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে ট্রাকচালক নিহত২১ মে ২০২৫ছিনতাইয়ের সঙ্গে মাদকের সরাসরি সম্পর্ক আছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, অনেক আগে থেকেই ভৈরবে মাদকের ছড়াছড়ি। বেশির ভাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে নেশার টাকার জোগাড়ের জন্য। আর ছিনতাইয়ে নামার আগে দুর্বৃত্তরা ইয়াবা সেবন করে থাকে। এ কারণেই ভৈরবের ছিনতাইকারীরা বেশি বেপরোয়া। ছিনতাই প্রতিরোধে প্রশাসন ব্যর্থ। এ অবস্থা উন্নতির জন্য প্রশাসনিক তৎপরতা বাড়াতে হবে। কমিউনিটি পুলিশি কার্যক্রম আগের চেয়ে জোরদার করতে হবে এবং নাগরিক সমাজকে নিজেদের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকতে হবে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দিনরাত কাজ করছি। এই কয়েক দিনে চিহ্নিত ১০ জন ছিনতাইকারীকে ধরেছি। ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।’
ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শবনম শারমিন বলেন, ছিনতাইয়ের জন্য স্পর্শকাতর জায়গার একটি সৈয়দ নজরুল সড়ক সেতুর ভৈরব প্রান্ত। স্থানটি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ছ নত
এছাড়াও পড়ুন:
নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত
পাবনায় নামাজরত অবস্থায় নিজাম প্রামানিক (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামানিককে আটক করেছে পুলিশ। তাকে আটক করতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন সদর থানার তিন উপ-পরিদর্শক (এসআই)।
রবিবার (২ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের পুরাতন ভাদুরডাঙ্গী গ্রামে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর, থানায় অভিযোগ
মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের গুলিতে যুবক নিহত
নিহত নিজাম প্রামাণিক একই গ্রামের মৃত ইন্তাজ প্রামানিকের ছেলে। তিনি কৃষি কাজ করতেন। অভিযুক্ত মোস্তফা প্রামাণিকও কৃষকের কাজ করতেন। নিহত এবং অভিযুক্ত সম্পর্কে বাবা-ছেলে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত নিজাম প্রামানিক নতুন বাজারে দুধ বিক্রি করে রবিবার সন্ধ্যার পর বাসায় ফেরেন। খাবার শেষে এশার নামাজ পড়তে দাঁড়ান তিনি। এ সময় ঘরে প্রবেশ করে দরজা আটকিয়ে হাঁসুয়া দিয়ে নিজাম প্রমানিককে কুপিয়ে হত্যা করেন মোস্তফা। পরে তিনি পাশের ঘরে গিয়ে বসে থাকেন। অভিযুক্তকে ঘরের ভেতরে তালাবদ্ধ রেখে পুলিশকে খবর দেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আটকের সময় অভিযুক্তের ছুরিকাঘাতে সদর থানার এসআই আবু বকর সিদ্দিক, এসআই জিয়াউর রহমান, এসআই আবু রায়হান আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে এসআই জিয়াউর রহমানকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
নিহতের অপর ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা খাবার শেষে রুমে শুয়ে ছিলাম। এমন সময় রুম আটকিয়ে নামাজরত অবস্থায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে মোস্তফা। এর আগেও সে আমাকে মেহগনি ঢাল দিয়ে মারধর করে মারাত্মক আহত করেছিল। আজকে (রবিবার) হত্যা করতে গামছার মধ্যে হাঁসুয়া নিয়ে আমাকে মাঠের মধ্যে গিয়ে খুঁজাখুঁজি করেছে। বাড়ির লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে আমাকে সতর্ক করে।”
তিনি আরো বলেন, “সে মাদকের জন্য প্রায়ই বাবা ও আমাদের থেকে টাকা চাইতো। না দিলেই বাড়িতে ভাঙচুর চালাতো। তার শাস্তি হওয়া উচিত।”
পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। তাকে আটক করতে গিয়ে তিনজন এসআই আহত হয়েছেন।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ