আবেগঘন পরিবেশে আড্ডা’র মোড়ক উন্মোন ও অভয়কে স্মরণ
Published: 27th, May 2025 GMT
আবেগঘন পরিবেশে, বন্ধু, স্বজন, সহকর্মী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতির মাধ্যমে মোড়ক উন্মোচন হলো প্রয়াত লেখক অভয় বিশ্বাস রচিত "আড্ডা" উপ্যনাসের।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকালে ৫ টায় আলী আহাম্মদ চুনকা পাঠাগারের ৫ম তলায় এক্সপ্রেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে আলোচনা, স্মৃতিচারণ, গান, আবৃত্তি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মোড়ক উন্মোচন ও অভয় স্মরন সভা হয়।
সাংস্কৃতিক সংগঠন বটতলার আয়োজনে ও রাকিবুল হাসান জেমস'র সঞ্চালনায় আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অভয় বিশ্বাসের মা রিনা বিশ্বাস, কবি মজিবুল হক কবীর, কবি আরিফ বুলবুল, সাংস্কৃতিক সংগঠক প্রদীপ ঘোষ বাবু, কবি পলল পরাগ, বিশ্বজিৎ বসাক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বীসহ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বগন।
এ সময়ে লেখক অভয় বিশ্বাসকে স্মরন করে স্মৃতিচারণকালে এক আবেগ প্রবণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এবং প্রয়াত লেখকের উপন্যাসের মোড়ক উন্মোচন করতে পরে তার পরিবার, স্বজন, সহকর্মী ও বন্ধুরা আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন।
উলেখ্য, প্রয়াত অভয় বিশ্বাস সংক্ষিপ্ত জীবনী অভয় বিশ্বাস, জন্ম: ২৭ মে ১৯৮৫, বাংলা ১৩ জৈষ্ঠ ১৯৩২ বঙ্গাব্দ। গ্রাম: বন্দর থানার অর্ন্তগত ১নং ঢাকেশ্বরীতে। ছেলেবেলা তার শীতলক্ষা নদীর পাশে সবুজে ঘেরা ঢাকেশ্বরীতেই কাটে।
শিক্ষাজীবনের হাতেখড়ি শুরু হয় ঢাকেশ্বরী মিলস্ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের খুব পছন্দের ছাত্র ছিলেন সদা হাস্যজ্বল অভয়। ২০০০ সালে ঢাকেশ্বরী মিলস্ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.
কলেজেও অভয় বিশ্বাস ছিলেন খুবই দুরন্ত। তার মায়াভরা মুখ, সরল কথাবার্তা আর সদাহাস্যজ্বল মুখ বন্ধুদের কাছে অন্যরকম এক গ্রহনযোগ্যতা তৈরি করে। তোলারাম কলেজে পড়া অবস্থয়ায় বেশিরভাগ সময় থাকতেন টানবাজার মামার বাড়িতে। নারায়ণগঞ্জে থাকার সুবাদে তিনি উন্মেষ সাংস্কৃতিক সংসদে যুক্ত হন।
নাটকে এবং সংগীতে সমানভাবে পারদর্শী ছিলেন তিনি। উন্মেষ সাংস্কৃতিক সংসদ থেকে তিনি এই দেশে এই বেশে, ১৯৭১, অনুকুল ঠাকুরের নাটক সহ বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেন।
পরবর্তিতে তিনি খেলাঘর, ঐকিক থিয়েটার, বটতলা সহ বেশ কিছু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনে যুক্ত হন। ২০০২ সালে এইচ. এস.সি পাশ করে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ইংরেজী সাহিত্যে অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ অভয় বিশ্বাসকে পারিবারিক ও আর্থিক কোনো সংকটই তার লেখাপড়ায় বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি। ২০০৯ সালে তার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সংসারের সম্পূর্ন দায়-দায়িত্ব গ্রহন করেন অভয় বিশ্বাস। তার বেশ কিছুদিন পরেই ২০০৯ সালেই নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল এন্ড কলেজে তার শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন।
২০১৩ সালে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। শিক্ষকতার পাশাপাশি বাংলাদেশ সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড থেকে সংস্কৃত মধ্য পরীক্ষায় উর্ত্তীন হয়ে পন্ডিত ডিগ্রি অর্জন করেন। তিন ভাই বোনের মধ্যে অভয় বিশ্বাস ছিলেন সকলের বড়। ছোটবেলা থেকেই সবুজের কাছাকাছি এবং নদীর তীড়ে বেড়ে ওঠা অভয় ভালোবাসতেন গ্রাম্য পরিবেশ, বন্ধুদের সাথে আড্ডা ছিলো তার জীবনের সঞ্জীবনী।
আড্ডার মঝে অট্ট হাসি আর গান গাওয়া ছিলো তার প্রধান আকর্ষন। শিক্ষকতা শুরুর পরে বন্ধুরা তাকে ডাকতো “মাষ্টর” বলে। বই পড়ার প্রতি ছিলো তার বিশেষ ঝোঁক, ক্লাসের ব্রেক বা টিউশোন সব সময় তার সাথে বই থাকতো, স্কুলের শিক্ষকদের বই পড়া জড়িপে অভয়ের নাম ছিলো এক নম্বারে।
শিক্ষকতা কালীন সময় থেকেই লেখালেখির প্রতি তার ঝোঁক তৈরী হয়। সিনিয়র শিক্ষক কবি মুজিবুল হক কবীরের উৎসাহে ও সহযোগীতায় ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই প্রথম উপন্যাস “অশনি স্রোত” প্রকাশিত হয়।
এছাড়া নতুন নতুন স্থানে ভ্রমন করা, ক্রিকেট, বেডমিন্টন খেলা ছিলো তার খুব পছন্দের। ২০১৭ সালের বই মেলায় প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিলো তার ২য় উপন্যাস “আড্ডা” কিন্তু ২০১৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অনন্তকালের পথে যাত্রা করেন এই সম্ভাবনাময় মানুষটি। মৃত্যুকালে তিনি এক পুত্র সন্তান সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ অভয় ব শ ব স ঢ ক শ বর শ ক ষকত পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
সাত খুন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি এবং ত্বকী হত্যা মামলার অবস্থান জেনে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বার ভবনে বিচারক ও আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ আশ্বাস দেন তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, “বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ ও কক্সবাজারে মেজর সিনহা হত্যা মামলা যেভাবে দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তি করা হয়েছে, একইভাবে গুরুত্ব দিয়ে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন ও ত্বকী হত্যা মামলা দুটি ত্বরান্বিত করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।”
জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা মামলা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা গুরুত্ব সহকারে বিষয়গুলো দেখছি। ভুক্তভোগীদের পরিবার যাতে ন্যায়বিচার পান এবং নিরপরাধ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেদিকে লক্ষ্য রেখে যথাযথভাবে তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হবে।”
দীর্ঘদিন ধরে চলমান মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয় থেকে ফৌজদারি কার্যবিধিতে একটি সংশোধিত প্রস্তাব করার কথাও জানিয়েছেন মো. আসাদুজ্জামান।
ঢাকা/অনিক/রফিক