সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলায় দ্বিতীয়বারের মতো কোনো সাক্ষী উপস্থিত না হওয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।

মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকারের আদালতে মামলা দুটির পৃথক সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ছিল। আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো.

আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় পাঁচজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।

এদিকে মামলার জামিনে থাকা আসামিদের মধ্যে অসুস্থ থাকায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সময় প্রার্থনা করেছেন। জামিনে থাকা অন্য আসামি সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জি কে গৌছ এবং কারাগারে থাকা আসামিরা সাক্ষ্য গ্রহণকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে একটি জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। হামলায় তাঁর ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত হন। আহত হন অন্তত ৭০ জন।

ঘটনার পরদিন হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অভিযোগপত্রের বিষয়ে আদালতে নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ। পরে মামলা পুনঃতদন্তের পর ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা ১৬ থেকে বাড়িয়ে ২৬ জনের নামে দ্বিতীয় দফা অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এটি নিয়েও আপত্তি জানায় নিহত কিবরিয়ার পরিবার।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে নতুন করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের সাবেক মেয়র জি কে গৌছ, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৩ জন জামিনে আছেন। বাকি আসামিদের মধ্যে সাতজন পলাতক এবং মিজানুর রহমান, হাফেজ সৈয়দ নাঈম আহমদ আরিফ ওরফে নিমু, মাওলানা শেখ ফরিদ আহমদ, আবদুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, আবু জান্দালসহ অন্যরা কারাগারে আছেন। আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কিবরিয়া হত্যা মামলায় ১৭১ জন সাক্ষী। এর মধ্যে মোট ৭১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

এদিকে ২০০৪ সালের ২১ জুন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাইবাজারে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। সেদিন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। গ্রেনেড বিস্ফোরণে যুবলীগের এক কর্মী ঘটনাস্থলে নিহত হন এবং ২৯ জন আহত হন। হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এ ঘটনায় দিরাই থানার এসআই হেলাল উদ্দিন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা করেন। ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর লুৎফুজ্জামান বাবর, আরিফুল হক চৌধুরীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ১২৩ জন সাক্ষী আছেন। এর মধ্যে ৫৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ক ষ য গ রহণ জন স ক ষ ক বর য়

এছাড়াও পড়ুন:

ড. ফরিদ আহমদ সোবহানীকে সংবর্ধনা দিল গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) হিসেবে অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী নিয়োগ পাওয়ায় তাকে সংবর্ধনা জানিয়েছে পেশাদার মানবসম্পদ উন্নয়নভিত্তিক সংগঠন ‘গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশ’।

সংগঠনটির ৩০৯তম পাঠচক্র শেষে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ড. সোবহানীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশের সদস্য, উপদেষ্টা এবং কর্পোরেট ও শিক্ষাজগতের বিভিন্ন পেশাজীবী।

অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শিক্ষাবিদ ও গবেষক। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার কিম্বারলেতে অবস্থিত সোল প্লাতজে ইউনিভার্সিটির ইকোনমিক্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস অনুষদের ভিজিটিং প্রফেসর, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক অস্ট্রেলিয়ান একাডেমি অব বিজনেস লিডারশিপের একজন রিসার্চ ফেলো এবং মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি এমএআরএ এর অ্যাকাউন্টিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটেরও ভিজিটিং প্রফেসর।তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের নিয়োগ বোর্ডে এক্সটারনাল মেম্বার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

অধ্যাপক সোবহানীর শিক্ষা জীবনের শুরু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, যেখানে তিনি অ্যাকাউন্টিংয়ে মেজরসহ বিবিএ ও এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্প বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি সায়েন্স মালয়েশিয়া থেকে এইচআর অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে পিএইচডি অর্জন করেন।তিনি দেশে-বিদেশে সম্মানিত জার্নাল ও ম্যাগাজিনে প্রায় ১০০টিরও বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে একাডেমিক জগতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. রওশন আলী বুলবুল। তিনি বলেন, “ড. সোবহানী আমাদের সংগঠনের অ্যাডভাইজার হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে জ্ঞান ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছেন। আমরা গর্বিত যে তিনি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এটি আমাদের সবার জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা।”

তিনি আরো জানান, গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশ দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে গ্রিন এইচআর ধারণা ছড়িয়ে দিতে এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সংগঠনটি ইতোমধ্যে ৫৫টিরও বেশি বই পাঠের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে ৩০৯টি পাঠচক্র সম্পন্ন করেছে, যেখানে সফট স্কিল, পাওয়ার বিআই, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং সমসাময়িক উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৮টি ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রোগ্রাম এবং তিনটি ট্রেইনার অব ট্রেইনার্স (টিওটি) প্রোগ্রাম সম্পন্ন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে “গ্রীন এইচআর ফাউন্ডেশন” গঠনের মাধ্যমে আরো সুসংগঠিত কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনাও রয়েছে।

সংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির চিফ অ্যাডভাইজার ড. মোশাররফ হোসেন, মো. নুরুল ইসলাম (সাবেক হেড অব এইচআর, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ), এস এম জাহিদ হাসান (সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ওয়ালটন গ্রুপ), রানা চক্রবর্তী (সিওও, বাংলাদেশ স্পেশালিস্ট হসপিটাল), মোহাম্মদ ইকরাম হোসেন, সৈয়দ আকরাম হোসেন, সৈয়দ মো. আসিফ রহমান, সাইফুল আমিন হাসানাত, প্রণব চন্দ্র, এমরান হোসেন, তৌহিদ হোসেনসহ কোর মেম্বাররা।

সংবর্ধনায় অংশ নেওয়া সদস্যরা জানান, “গ্রীন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশ শুধু পেশাগত উন্নয়নের প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি একে অপরকে শেখার ও সহমর্মিতার বন্ধনে আবদ্ধ করার একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ।”

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রী হেনস্থার প্রতিবাদ করায় ঢাবির ২ শিক্ষার্থীকে মারধর
  • ড. ফরিদ আহমদ সোবহানীকে সংবর্ধনা দিল গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস
  • ঢাবি উপাচার্যের হাতে সাম্য হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন 
  • শাহরিয়ার হত্যার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা
  • শেখ হাসিনা-জয়সহ ২৯ জনের গ্রেপ্তার প্রতিবেদন ১৭ জুন
  • ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির নতুন উপাচার্য ফরিদ আহমদ সোবহানী
  • ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের পদত্যাগের সুযোগ নেই’