রুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা, ১২৩৫ আসনে পরীক্ষাপদ্ধতিসহ জেনে নিন বিস্তারিত
Published: 11th, January 2025 GMT
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) স্নাতক প্রথম বর্ষ ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন আবেদন চলছে। আবেদন চলবে ১৪ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত। রুয়েটের ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৪ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি (প্রাক্–নির্বাচনী, এমসিকিউ) এবং লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২০ ফেব্রুয়ারি।
গুচ্ছ থেকে বের হয়ে এবার এককভাবে পরীক্ষা নিচ্ছে রুয়েট। স্নাতক ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি এবং তড়িৎ ও কম্পিউটারকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো.
প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোনো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২১ অথবা ২০২২ সালের মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ–৪.০০ অথবা সমতুল্য গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোনো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও ইংরেজি বিষয়ের প্রতিটিতে ন্যূনতম জিপিএ–৪.০০–সহ মোট ন্যূনতম জিপিএ–১৮.০০ পেতে হবে।
প্রার্থী GCE ‘O’ লেভেল এবং ‘A’ লেভেল পরীক্ষায় পাস করে থাকলে তাঁর ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য GCE ‘O’ লেভেল পরীক্ষায় কমপক্ষে পাঁচটি বিষয়ে ন্যূনতম ‘B’ গ্রেড পেয়ে পাস করতে হবে। GCE ‘A’ লেভেল পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে পৃথকভাবে কমপক্ষে ‘B’ গ্রেড পেয়ে পাস হতে হবে। উল্লেখ্য, প্রার্থীকে ২০২৩ সালের নভেম্বর বা তারপরে ‘A’ লেভেল সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত হতে হবে।
পরীক্ষার্থী বাছাইপ্রক্রিয়া কীভাবেনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রাপ্ত সব বৈধ আবেদনপত্রের মধ্য থেকে উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও ইংরেজি—এ চার বিষয়ে প্রাপ্ত মোট গ্রেড পয়েন্টের ভিত্তিতে একটি মেধাতালিকা তৈরি করা হবে। প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হলে এ তালিকা থেকে প্রথম ২৪ হাজার প্রার্থীকে প্রাক্-নির্বাচনী (MCQ) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে ২৪ হাজারতম প্রার্থী একাধিক হলে উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় যথাক্রমে গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও ইংরেজিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রাক্-নির্বাচনী (MCQ) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থীর সংখ্যা চূড়ান্ত করা হবে।
এই শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে প্রাক্-নির্বাচনী (MCQ) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের সর্বোচ্চ তিন শিফটে বিভক্ত করে প্রাক্-নির্বাচনী (MCQ) পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রতিটি শিফটে প্রার্থীদের উপস্থিতির আনুপাতিক হারে পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নির্বাচনী পরীক্ষার জন্য যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করা হবে।
নির্বাচনী (লিখিত) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত আবেদনকারীদের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হবে।
আরও পড়ুনআইইএলটিএস পরীক্ষায় বড় পরিবর্তন, কার্যকর জানুয়ারিতে২৪ ডিসেম্বর ২০২৪আসন কত২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে পুরকৌশল; তড়িৎ ও কম্পিউটারকৌশল এবং যন্ত্রকৌশল অনুষদগুলোর মোট ১৪টি বিভাগে সংরক্ষিত ৫টিসহ মোট ১ হাজার ২৩৫টি আসন রয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলো এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ নিয়ে ‘ক’ গ্রুপ; ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলো, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং স্থাপত্য বিভাগ নিয়ে ‘খ’ গ্রুপ গঠিত।
আরও পড়ুন২০২৫ সালের স্কুলের ছুটির তালিকা প্রকাশ, ছুটি ৭৬ দিন২৩ ডিসেম্বর ২০২৪পরীক্ষার বিষয় ও নম্বর বণ্টনএবারের ভর্তি পরীক্ষায় ২০২৪ সালের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও ইংরেজি বিষয়ের ওপর লিখিত পদ্ধতিতে ‘ক’ গ্রুপের জন্য ৩৫০ নম্বরের এবং ‘খ’ গ্রুপের জন্য ৩৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি অতিরিক্ত মুক্তহস্ত অঙ্কনের ১০০ নম্বরসহ মোট ৪৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। পরীক্ষায় সময় থাকবে আড়াই ঘণ্টা। তবে অতিরিক্ত মুক্তহস্ত অঙ্কনের জন্য পরীক্ষায় বাড়তি ১ ঘণ্টা দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রাক্-নির্বাচনী (MCQ) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১০০ নম্বরে। প্রতিটি ভুলের জন্য ২৫ শতাংশ নম্বর কাটা হবে। পরীক্ষার সময় থাকবে ১ ঘণ্টা।
আবেদন ফিগ্রুপ ‘ক’ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলো এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে আবেদনের ফি ১ হাজার ২৫০ টাকা; গ্রুপ ‘খ’ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলো, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং স্থাপত্য বিভাগ-এ ১ হাজার ৪৫০ টাকা। প্রাক্-নির্বাচনী পরীক্ষার পর নির্বাচনী (লিখিত) পরীক্ষায় যোগ্য না হলে শিক্ষার্থী কিছু টাকা চার্জ বাদে ফেরত পাবেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
আরও পড়ুনব্রুনেই দারুসসালাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, মাসে ভাতা ২ লাখ টাকার সঙ্গে নানা সুবিধা০৮ জানুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সেমিনার: ১৫ বছরে গুম শিবিরের ২৫৫ জন, সাতজন ফেরেননি এখনো
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ২৫৫ জন নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছে সংগঠনটির মানবাধিকার বিভাগ।
ছাত্রশিবির বলছে, গুমের শিকার সাতজন এখনো ফেরেননি।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন ঘিরে সরগরম কেরাণীগঞ্জের রাজনীতি
হেভিওয়েটদের বিপক্ষে এনসিপির প্রার্থী হচ্ছেন যারা
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিভাগের আয়োজনে এক সেমিনারে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।
সেমিনারে ছাত্রশিবির জানায়, গত ১৫ বছরে তাদের ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩১২ নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছিল। মামলার সংখ্যা ১৮ হাজার ৩৫টি, যার মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ৬৬ হাজার ২৪০ জন। এর মধ্যে রিমান্ডে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৯ হাজার ৭২২ জন; তারা মোট রিমান্ডে ছিলেন ২৯ হাজার ৯৭১ দিন। আহত হয়েছিলো ৩১ হাজার ৭১৫ নেতাকর্মী, পঙ্গু হয়েছেন ৩২৪ জন, আর নিহত হয়েছেন ১০৩ জন।
সেমিনারে বলা হয়, গুমের শিকার হন ২৫৫ নেতাকর্মী, যাদের মধ্যে সাতজন এখনো ফেরেনি। সেই সাতজন হলেন মোহাম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, মুহাম্মদ মুকাদ্দাস আলী, হাফেজ জাকির হোসাইন, জয়নুল আবেদীন, মো. কামারুজ্জামান, মো. রেজওয়ান ও শফিকুল ইসলাম।
ছাত্রশিবিরের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় তুলে ধরে ছাত্রশিবির বলছে, ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নিরবচ্ছিন্ন পথচলার সূচনা। প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই সংগঠনটির যাত্রা ছিল বাধা-বিপত্তিতে পরিপূর্ণ। বিগত ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত বিপ্লব পর্যন্ত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।
সংগঠনটির অভিযোগ, ছাত্রশিবিরের অফিস, মেস, সম্পদ সবকিছু থেকেই তাদের উৎখাত করা হয়েছে। ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসেন এবং শফিকুল ইসলাম মাসুদকে গ্রেপ্তার করে দিনের পর দিন রিমান্ড নিয়ে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়। সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলামকে বুয়েট ক্যাম্পাস থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে ছাত্রলীগ চরমভাবে নির্যাতন করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
সেমিনারে শিবির জানায়, ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী বুয়েটের শহীদ আবরার ফাহাদকে সারারাত নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও একটি করুণ উদাহরণ। এ রকম হাজারো আবরার ফাহাদের মতো ছাত্রদের শুধু ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নির্যাতন করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হতো। ঝিনাইদহের শহীদ সোহানকে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ নির্মমভাবে হত্যা করে। শুধু হত্যাই নয়, তার দু-চোখ পর্যন্ত উপড়ে ফেলা হয়। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের পূর্ব পর্যন্ত বিগত ১৬ বছরে ছাত্রশিবিরের মোট ১০৩ জনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে শহীদ করা হয়। সাবেক ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি ইবনুল পারভেজ, সাবেক সাতক্ষীরা শহর সেক্রেটারি আমিনুর রহমানসহ সারাদেশে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষী প্রায় ৮৬ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পুলিশ বাহিনী।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম বলেন, “একটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে সরকার নাগরিকদের নিরাপত্তার বিপরীতে গুম করেছে। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল। শুধু একটি ছাত্রসংগঠনের ওপর কী নির্যাতন চালানো হয়েছিল, তা ছাত্রশিবিরের দিকে তাকালে বোঝা যায়। বিগত সময়ে সরকার দল ছাড়া বিরোধী দল ও মতের প্রায় সকলেরই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।”
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, “স্বাধীনতার পরপরই আওয়ামী লীগ কর্তৃক দেশের মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হতে থাকে। রক্ষীবাহিনী থেকে শুরু করে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেছিল। দুর্নীতি, দুঃশাসনের পর দেশকে দুর্ভিক্ষের রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।”
তিনি বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে ইসলামী ছাত্রশিবির একক সংগঠন হিসেবে ৩১ শতাংশ গুমের শিকার হয়েছিল। এখনো সাতজন নেতাকর্মী গুম অবস্থায় রয়েছেন। গত ১৫ বছরে ন্যূনতম মানবাধিকার ছাত্রশিবিরের ছিল না। কোনো বিরোধী দল বা মতের মানুষের মানবাধিকার ছিল না।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আজমী, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল হাসিনুর রহমান এবং গবেষক আলী আহমেদ মাবরুর প্রমুখ।
ঢাকা/রায়হান/রাসেল