রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রাথমিক আবেদন: প্রতি বছর আয় প্রায় ২ কোটি
Published: 13th, January 2025 GMT
স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রাথমিক আবেদনের মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রতি বছর প্রায় ২ কোটি টাকা আয় হয়। গত ৫ বছরে এ খাত থেকে ৮ কোটি ৮৬ লাখ ২৭ হাজার ৯৩৫ টাকা আয় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এই বিশাল অঙ্কের আয়ের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
তাদের দাবি, বাংলাদেশের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিক সিলেকশনের জন্য টাকা নেওয়া হয় না। শুধু রাবিতে এ পদ্ধতি চালু আছে। এ ফি নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। শুধু টাকা আয়ের উদ্দেশ্যেই এই সিলেকশন পদ্ধতি। এর কোন যৌক্তিকতা নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক আবেদন জমা পড়ে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০টি, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ৪ লাখ ১৪ হাজার ১৪টি, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৩ লাখ ৯৮ হাজার, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ৩ লাখ ৫ হাজার এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯০৩টি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৫৫ টাকা দিয়ে প্রাথমিক আবেদন করতে হয়।
ফলে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক আবেদন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় হয় ১ কোটি ৯৬ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ২ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার ৭৭০ টাকা, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ১ কোটি ৬৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৭৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৬৫ টাকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পদ্ধতি অনুযায়ী, নির্দিষ্ট জিপিএধারী শিক্ষার্থীদের প্রথমে ৫৫ টাকা দিয়ে প্রাথমিক আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক সিলেকশনের পর যারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন কেবলমাত্র তারাই ইউনিটভিত্তিক চূড়ান্ত আবেদন ফি জমা দিবেন। বিগত বছরগুলোতে প্রতি ইউনিটে ৭২ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারতেন। তবে এ বছর এক ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারবেন ৯২ হাজার শিক্ষার্থী। কিন্তু প্রাথমিক আবেদন পড়ে তার তিন-চার গুন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও প্রায় লাখো শিক্ষার্থীকে দিতে হয় ৫৫ টাকা করে।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আহমিদুর রহমান তামিম বলেন, “অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে রাবিতে আবেদন ফি বেশি। তারপর আবার প্রাথমিক আবেদনে ৫৫ টাকা নেওয়ার কোনো মানেই হয় না। এর কোন যৌক্তিকতা নেই। আর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে তো এ নিয়ম নেই। এ পদ্ধতি তুলে দেওয়া উচিত।”
তামিমের বাবা মো.
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক ড. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিক সিলেকশন পদ্ধতি আসলে তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ আমাদের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ার সক্ষমতা নেই। একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার ক্যাপাসিটি আছে। ফলে সিলেকশন রাখার বিকল্প নেই।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যদি কম আবেদন পড়ে তাহলে এটা সম্ভব। কিন্তু আমাদের আবেদন তো পড়ে অনেক। সেখান থেকে বাছাই করে নেওয়া হয়। জিপিএ এর যে লিমিট দেওয়া থাকে, সে পর্যন্ত কখনো যায় না।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, “প্রাথমিক সিলেকশন ছাড়া তো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সম্ভব নয়। আমাদের পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে আসন সীমাবদ্ধ। প্রাথমিক আবেদন তুলে কতজন আবেদন করবে এটা তো বোঝা সম্ভব নয়। এছাড়া বারবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়াও সম্ভব না। এখন যে প্রক্রিয়ায় সিলেকশন করা হয়, সেটা আমার কাছে মনে হয় বেস্ট ওয়ে। তবে যে ফি নেওয়া হয় সে বিষয়ে কথা বলার জায়গা আছে। আমি এ বিষয়ে কথা বলব।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাবরের সেঞ্চুরি ৮৩ ইনিংস ও ৮০৭ দিন পর, অনুরোধ করে রেখে শ্রীলঙ্কাকে হারাল পাকিস্তান
এক নয়, দুই নয়, তিন নয়। ১০, ২০, ৩০ নয়। গুনে গুনে ৮৩টি ইনিংস! কী দীর্ঘ অপেক্ষাই না করতে হয়েছে বাবর আজমকে। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান হলো আজ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৮৩ ইনিংস অপেক্ষার পর সেঞ্চুরি পেলেন বাবর। ঠিক যেন বিরাট কোহলির গল্প! ভারতের ব্যাটসম্যানও তাঁর ক্যারিয়ারে ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর থেকে ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ সাল পর্যন্ত খরা কাটিয়ে ৮৩ ইনিংস পর সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে।
বাবরের সেঞ্চুরি খরা শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট থেকে। এর আগের দিন তিনি সর্বশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন নেপালের বিপক্ষে। এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচটিতে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যান করেছিলেন ১৫১ রান। আজ দীর্ঘ খরা কাটিয়ে তাঁর সেঞ্চুরি পাওয়ার দিনে রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। রাওয়ালপিন্ডিতেই প্রথম ওয়ানডেতেও জিতেছিল তারা। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০তে এগিয়ে থেকে জয় নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকেরা।
৮০৭ দিন অপেক্ষার পর বাবরের সেই মাহেন্দ্রক্ষণটি আসে ইনিংসের ৪৮তম ওভারের প্রথম বলটিতে। প্রমোদ মাধুশানের করা বলটি মিডউইকেটের দিকে ঠেলে দিয়ে সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। এরপর মাঠে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ান তাঁকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করেন। রাওয়ালপিন্ডির গ্যালারি আর পাকিস্তানের ড্রেসিংরুমেও এ সময় বয়ে যায় আনন্দের বন্যা।
রাওয়ালপিন্ডিতে আবার জমেছে বাবর–রিজওয়ানের সেই পুরোনো জুটি