বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ নির্বাচনকেন্দ্রিক একটি সংকটের মধ্যে রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারছে না। ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে আমরা নানা ধরনের অসহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব দেখতে পাচ্ছি। শুধু ভারত ইস্যুই নয়, জাতীয় নিরাপত্তা থেকে শুরু করে দেশের যাবতীয় সংকট দূর করতে একটি নির্বাচিত সরকার দরকার।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ এলাকায় শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান এ কথা বলেন।

কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে লৌহজং উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি শাহজাহান ব্যাপারীর সভাপতিত্বে ও উপজেলা যুবদলের সদস্য আলামিন দেওয়ানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য মোশাররফ হোসেন ও জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক আতাউর রহমান খান।

আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘সরকার গঠন করার জন্য যত দ্রুত সম্ভব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দরকার। সেটি অবশ্যই এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। আমরা আগেই বলেছি, ২০২৫ সালের মধ্যে আমরা নির্বাচন চাই। এটি দেশের জন্য ভালো, জনগণের জন্য ভালো, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য ভালো। আর নির্বাচন করার জন্য একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করারও প্রয়োজন হবে। আমরা প্রত্যাশা করব, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানও ড.

ইউনূস হবেন।’

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে ভারতের সেনাপ্রধানের বক্তব্য প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ভারতের সেনাপ্রধান বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকার এলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে। ভারত গত ১৫ বছর কোন নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করছে? বাংলাদেশে তো গত ১৫ বছর কোনো নির্বাচিত সরকার ছিল না। শেখ হাসিনা বাংলাদেশে কখনো নির্বাচিত সরকার ছিল না।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘তারা (ভারত) নির্বাচিত সরকার বলতে যদি শেখ হাসিনার সরকারকে বুঝিয়ে থাকে, তাহলে বলতে চাই, হাসিনা ভোট ডাকাতির সরকার ছিলেন। তিনি (শেখ হাসিনা) দিনের ভোট রাতে দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। আমি ভারতের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, ভারত কি অনির্বাচিত সরকার এবং জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে ক্ষমতার দখল করেছিল, সেই ধরনের সরকারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী কি না। যদি এমনটা হয়, তাহলে তাদের আমরা জানিয়ে দিতে চাই, হাসিনা এ দেশে আর আসবেন না। ভারতকে বাংলাদেশের জনগণের সরকারের সঙ্গেই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে হবে। বর্তমানে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে যে সরকারটি আছে, সেটি নির্বাচিত সরকার না হলেও এটা আপামর জনগণের সমর্থিত সরকার। সুতরাং ভারতে এ সরকারের সঙ্গেই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে হবে।’

শ্রীনগরে থানা থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারেক রহমানের নির্দেশ—দলের দুর্নাম হয়, দলের গঠনতন্ত্র ও আইনবিরোধী কাজ যে–ই করুক, তার বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের নেতা বা কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। শ্রীনগরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল দায়ী যুবদল নেতা তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সেদিন যাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

পুলিশের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘পুলিশকে আমরা বাংলাদেশের জনগণের পুলিশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। পুলিশের মনোবল যেন ভেঙে না পড়ে, আমাদের দল নিঃসন্দেহে পুলিশের পাশে আছে। জনগণ তাদের পাশে আছে।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘শেখ হাসিনার কাঠামোয় নির্বাচন হলে জনগণ মেনে নেবে না’

শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া কাঠামোয় যদি নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার কোটাপাড়া মোড়ে গণসংযোগকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মাওলানা জালালুদ্দীন বলেন, “জুলাই সনদের আইনিভিত্তি প্রতিষ্ঠা না হলে দেশে আবারো ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে। এই মুহূর্তে ইসলামী দলগুলোর ঐক্যের চেয়ে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠায়। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার জন্য এটি আমাদের জন্য একটা রাজনৈতিক দলিল।” 

তিনি বলেন, “আমাদের স্পষ্ট দাবি, রাষ্ট্রের বিশেষ একটি আদেশের মাধ্যমে এটি কার্যকর শুরু হবে এবং নভেম্বর মাসের মধ্যে গণভোট আয়োজন করে এই আইনি ভিত্তির চূড়ান্ত রূপ দিতে হবে।”

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, “আমরা আটটি ইসলামী দল এই একটি দাবিতে আন্দোলন করছি। আমাদের মূল লক্ষ্য, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি। এরপর জাতীয় নির্বাচন এবং জোট গঠন প্রসঙ্গ।”

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ে তিনি বলেন, “বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় মারামারি হচ্ছে, আগুন সন্ত্রাস হচ্ছে। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় তাদের চক্রান্ত এটি। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের আরো সক্রিয় হওয়া দরকার। কারণ, এ অবস্থা থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস শরীয়তপুর জেলার সভাপতি মাওলানা সাব্বির আহমেদ উসমানী, সাধারণ সম্পাদক ও শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ দবির উদ্দিন শেখসহ জেলা ও উপজেলার সব ইউনিটের নেতারা।

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনগণের সঙ্গে এটা প্রতারণা: মির্জা ফখরুল
  • গণমাধ্যমের সংস্কারের সুযোগ এখনো আছে: রেজওয়ান উল আলম
  • ভিন্ন কোনো দেশের কারণে ঢাকা–বেইজিং সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না: চীনের রাষ্ট্রদূত
  • যত দিন যাচ্ছে আমরা ততই বিভক্ত হয়ে পড়ছি: মির্জা ফখরুল 
  • আইন উপদেষ্টার ওপর জনগণের আস্থা নেই: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
  • বিএনপি–জামায়াত বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নির্বাচন করতে চাচ্ছে, দাবি নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর
  • তাইওয়ানের রোল মডে ইসরায়েল: প্রেসিডেন্ট লাই চিং
  • ধর্মকে বিকৃত করে নির্বাচন বানচাল জনগণ মানবে না: ফারুক
  • উন্নয়নের বয়ান ও মেগা প্রকল্পের রাজনীতি
  • ‘শেখ হাসিনার কাঠামোয় নির্বাচন হলে জনগণ মেনে নেবে না’