কারাফটকে বিক্ষোভের পর মুক্তি পেলেন মাওলানা মুহিবুল্লাহ
Published: 4th, February 2025 GMT
মাওলানা মুহিবুল্লাহ উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও মুক্তি না দেওয়া এবং আটক রেখে জেলার ও জেল সুপার কর্তৃক আদালতের রায় অবমাননার প্রতিবাদে বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে। বিক্ষোভের পর মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সোয়া ৪টায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
মাওলানা মহিবুল্লাহ ভোলার সদর থানার চরসিফলি গ্রামের আব্দুর রব মাস্টারের ছেলে।
আন্দোলনকারীরা জানান, ভোলা জেলার একটি মাদ্রাসার জনপ্রিয় শিক্ষক মাওলানা মুহিবুল্লাহ ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ বিলাইছড়ি থানার সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় গ্রেপ্তার হন। ওই মামালয় গত ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তিনি।
আরো পড়ুন:
সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি আজিজ কারাগারে
রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক রেলমন্ত্রী সুজন
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ডেমরা থানা ও বিলাইছড়ি থানায় দুটি মামলা ছিল। ওই দুই মামলায় আগেই তিনি জামিন পান। হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর জামিনের কাগজপত্র গত চার দিন আগে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়। জামিনের নথি পাওয়ার পরও তাকে কারাকতৃপক্ষ মুক্তি না দিয়ে আটকে রাখে। তার মুক্তি না দেওয়া এবং আটক রেখে জেলার ও জেল সুপার কর্তৃক আদালতের রায় অবমাননার প্রতিবাদে বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের ব্যানারে মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন শুরু করে। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলাকালীন প্রিজন ভ্যান, অ্যাম্বুলেন্সে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। কারাগারের মুল ফটকের সামনে তারা নামাজ আদায় করেন। আন্দোলনকারীরা কাশিমপুর কারাফটকের সামনে পলিথিন বিছিয়ে জোহরের নামাজও আদায় করেন। একপর্যায়ে বিকাল ৪টার দিকে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি দেয়।
মুক্তিরপর মাওলানা মুহিবুল্লাহ বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘কারাগারে সাবেক জেলসুপার সুব্রত কুমার বালা আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করেছেন। তাকে নাকি রাখা হয়েছিল আমাদের নির্যাতন করার জন্য। এত কিছুর পরও তাকে বদলি করা হয়েছে সেটি কি যথেষ্ট? তাকে চাকরিচ্যুত করে তার বিরুদ্ধে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’
মানববন্ধনে বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘‘জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছার পরে তাকে ২৪ ঘণ্টার বেশি আটকে রাখার সুযোগ নেই। মাওলানা মহিবুল্লাহকে নিয়েই আমরা বাড়ি ফিরেছি। আমাদের আন্দোলনের মুখে পৌনে ৪টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’’
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলসুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তাদের নিয়মের মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। জামিনের কাগজ পাওয়ার পর তা যাচাই বাছাই করে তাকে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির ঘটনায় ঝাড়ু-জুতা মিছিল
সোনারগাঁয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে গোপনে বিক্রির ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবীতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান–সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া, সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম এবং একাধিক অভিযোগের মুখে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এ ইউনিয়নকে যেন ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে মাসুম ও মনিরুজ্জামান নিজেদের ইচ্ছেমতো সব কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
তাদের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়। পরে এলাকাবাসী মালামাল ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু এখন উল্টো ভালো মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ মোল্লা বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল চুরি করে বিক্রি করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের ইউনিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
স্কুলের মতো পবিত্র জায়গায় দুর্নীতি ও অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকাবাসী রাতেই মালামাল আটকে দিয়ে প্রমাণ করেছে—এ এলাকার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে।”
এলাকাবাসীরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও পরিচালনা কমিটিতে সৎ-নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি।
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা প্রদর্শন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম জানান, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবে আমাদের বিতর্কিত করতে বিক্রি করা মালামাল চুরির ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গতকাল মিটিং করেছি৷
অভিযুক্ত বর্তমান কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া জানান, আমরা স্কুলের একটি কমিটি করে বিক্রি করেছি। তবেমাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে কোনো অনুমতি নেই নি। বিক্রি করার পর গাড়িতে উঠাতে রাত হয়ে যায়। এখানে কোনো চুরির ঘটনা ঘটে নি।
উল্লেখ্য, গত (৯ সেপ্টেম্বর) শনিবার স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের নির্দেশে রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে পঞ্চমীঘাট স্কুলের মালামাল বিক্রি করা হয়। যা স্থানীয় এক ভাঙ্গারীর পিক-আপ ভ্যানে নেয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।