ছবি: প্রথম আলো

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘সবচেয়ে ভয়ংকর’ ২০২৪, এক বছরে নিহত ৪৫ হাজার রুশ সেনা

ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরটি ছিল রুশ বাহিনীর জন্য সবচেয়ে মারাত্মক। বছরটিতে কমপক্ষে ৪৫ হাজার ২৮৭ রুশ সেনা নিহত হয়। আক্রমণের প্রথম বছরের তুলনায় এ সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেশি। এমনকি দ্বিতীয় বছর ২০২৩ সালের তুলনায়ও বেশি। ওই বছরটিতে ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘ সময় ধরে চলবে– এমন একটা পর্যায়ের দিকে বাঁক নিয়েছিল।

গতকাল সোমবার বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধ শুরুর দিকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর জন্য লড়াই হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালে রুশ বাহিনী ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়ে। প্রতি মাসেই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছিল। এ সময় রুশ ও তাদের সমর্থিত বাহিনীকে প্রত্যেক কিলোমিটার ভূমি জয় করতে ব্যাপক লড়াই করতে হয়েছে। এতে গড়ে প্রতি কিলোমিটারে রুশ বাহিনীর ২৭ জন নিহত হয়েছে।

স্বাধীন গণমাধ্যম মিডিয়াজোনা, স্বেচ্ছাসেবকদের একটি দলের সহযোগিতা, বিবিসি রাশিয়ান সার্ভিস, রুশ কবরস্থান, সামরিক স্মারক ও মৃত্যুবার্ষিকী থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৬ হাজার ৭৪৫ রুশ সেনা নিহত হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলেও ধারণা করা হয়। সামরিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৬৪ হাজার ২২৩ থেকে ২ লাখ ৩৭ হাজার ২১১ জন।

২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ছিল রুশ বাহিনীর জন্য বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ দিন। ওই দিন চারটি ইউক্রেনীয় দূরপাল্লার এইচআইএমএআরএস ক্ষেপণাস্ত্র অধিকৃত দোনেৎস্কের ভলনোভাখা শহরের কাছে একটি প্রশিক্ষণস্থলে আঘাত হানে। পদক বিতরণকে কেন্দ্র করে তারা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। ইউক্রেনের হামলায় কমান্ডার কর্নেল মুসায়েভসহ ৬৫ জন সেনা নিহত হয়। আহত হয় আরও কয়েক ডজন।

এদিকে বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অভিযোগ, ইউরোপের ‘কিছু লোক’ রেড স্কয়ারে আরও ভালো আসনের জন্য তাঁর দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদের পথ আটকে দিয়েছেন। গত রোববার চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগে দেশটির প্রেসিডেন্ট পিটার পাভেলের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

জেলেনস্কি বলেন, ইউরোপের কিছু ব্যক্তি এ প্রক্রিয়া (ইইউর সদস্য) বাধাগ্রস্ত করছেন। তাদের নিজ দেশের স্বার্থের জন্য নয়, বরং রেড স্কয়ারের মঞ্চে আরও ভালো আসন পাওয়ার জন্য তারা এটা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবার জন্য ইউরোপীয় মূল্যবোধকে সত্যিকার অর্থে প্রাধান্য দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।’ রাশিয়ার রাজধানীতে আসন্ন কুচকাওয়াজের বিষয়ে জেলেনস্কি বলেন, একতরফা যুদ্ধবিরতি নিয়ে মস্কোর প্রতিশ্রুতিতে তাঁর ‘বিশ্বাস নেই’।

ক্রেমলিনের সূত্রের বরাত দিয়ে রোববার এএফপি জানিয়েছে, চলতি মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখ রাশিয়া সফর করবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এ সময় তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর বিরুদ্ধে মিত্র বাহিনীর ঐতিহাসিক বিজয় উদযাপনের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বেইজিং-ওয়াশিংটনের মধ্যে শুল্ক নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে শি এ সফর করছেন।

১৯৪৫ সালের ৯ মে ইউরোপের ‘বিজয় দিবস’ ঘোষণা করা হয়। এর এক দিন আগে জার্মান বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। তবে এদিন ইউরোপে যুদ্ধের অবসান হলেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ফ্রন্টে জাপানের সঙ্গে যুদ্ধ অব্যাহত থাকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ