চাঁদা দাবির অডিও ফাঁসের পর জামায়াত নেতা বহিষ্কার
Published: 11th, February 2025 GMT
ফেনীতে এক মাদ্রাসাশিক্ষকের কাছ থেকে চাঁদা দাবির অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর নাম জাকির হোসেন মিয়া। তিনি জামায়াতের রুকন এবং দলের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ফেনী পৌরসভা শাখার সাবেক সহকারী সেক্রেটারি। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ফেনী জেলা শাখার প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক আ ন ম আবদুর রহিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাকির হোসেনকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলা ও নীতিবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় দলীয় গঠনতন্ত্রের ৬২ নম্বর ধারার ২ উপধারা অনুসারে জাকির হোসেন মিয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে রোববার রাতে জামায়াত নেতা জাকির হোসেন মিয়ার সঙ্গে ফেনী আলিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসানের কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মাহমুদুল হাসান আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। গত বছরের ৫ আগস্টের পর অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে অধ্যক্ষের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। কয়েকটি মামলায়ও আসামি হন মাহমুদুল। জামায়াত নেতার সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিওটি ২ মিনিট ৭ সেকেন্ডের। সেখানে মাদ্রাসায় স্বপদে ফিরে যাওয়া ও মামলা থেকে অব্যাহতির বিষয়ে জাকির হোসেনকে আগে একজনের মাধ্যমে টাকা দেওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন মাহমুদুল। এ ছাড়া জাকির হোসেন নতুন করে চাঁদা দাবি করেন।
জানতে চাইলে জেলা জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নান প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে জাকির হোসেন মিয়াকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জামায়াত ইসলামী কোনো ধরনের অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। কোনো অনৈতিক কাজে জামায়াতের কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অডিওর সত্যতার বিষয়ে জানতে মাহমুদুল হাসানকে কল করা হলেও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। জাকির হাসান কল কল রিসিভ করেননি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যারা সন্ত্রাসে মদদ দেয়, তাদেরও প্রতিরোধ করা হবে
রাজধানীর পুরান ঢাকায় নৃশংসভাবে ব্যবসায়ীকে হত্যা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পশ্চাদ্গামী ধারারই অংশ। এ হত্যাকাণ্ড বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। যারা এ ধরনের সন্ত্রাসে মদদ দেয়, তাদেরও প্রতিরোধ করা হবে।
আজ শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মশালমিছিল ও সমাবেশ থেকে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি রিফাত রশিদ। মশালমিছিলটি শাহবাগ থেকে রাজু ভাস্কর্য হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় মিছিল থেকে ‘চাঁদাবাজদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’; ‘চাঁদাবাজদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’; ‘যেই হাত মানুষ মারে, সেই হাত ভেঙে দাও’ এবং ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’সহ নানা স্লোগান দেওয়া হয়।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ বলেন, ‘মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ড বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এটি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পশ্চাদ্গামী ধারারই অংশ, যেখানে ছাত্ররাজনীতিকে চাঁদাবাজি ও খুনের পৃষ্ঠপোষক বানানো হয়েছে। আমরা বিএনপিকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নাম করে যারা সন্ত্রাসে মদদ দেয়, তাদেরও প্রতিরোধ করা হবে।’
রিফাত রশিদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে পুলিশি ব্যবস্থা ও জননিরাপত্তা দেখে মনে হয়, এটি শেখ হাসিনার আমলের পুলিশ। (স্থানীয় সরকার) উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে পোস্ট দেন—দেশকে প্রস্তর যুগে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনি সরকারে বসে থেকে কীভাবে এমন কথা বলেন। (ব্যবস্থা নিতে) আপনাদের বাধা কোথায়, আমাদের বলুন। জুলাইয়ের ছাত্র-জনতা এখনো ঘরে ফিরে যায়নি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম বলেন, ‘জুলাইর গণ-অভ্যুত্থান দেখিয়েছে, এ দেশের মানুষ দখলবাজদের বিরুদ্ধে কতটা সোচ্চার হতে পারে। আজ সেই ঐক্য আবার গড়ে তুলতে হবে দলের মুখোশধারী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে, নিপীড়নের রাজনীতির বিরুদ্ধে। ছাত্রসমাজকে এই সংগ্রামে এক হতে হবে।’
গত বুধবার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার মিটফোর্ড (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালের সামনের সড়কে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) নামের এক ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ীকে হত্যা করে একদল ব্যক্তি। এ ঘটনায় যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল থেকে চারজনকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।