আমি যুদ্ধের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে: কবীর সুমন
Published: 7th, May 2025 GMT
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। এ হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। তারপর থেকে পারমাণবিক ক্ষমতাধর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তারই ফল স্বরূপ গতকাল রাতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। পাকিস্তানের ৬টি জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। জবাবে পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানও।
ভারত এই হামলার নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। এ পরিস্থিতিতে ভারতীয় শোবিজ অঙ্গনের তারকারা যুদ্ধের পক্ষে মতবাদ ব্যক্ত করেছেন। সেখানে উল্টা স্রোতে গা ভাসালেন কলকাতার বরেণ্য সংগীতশিল্পী কবীর সুমন।
ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে কবীর সুমন বলেন, “আমি যুদ্ধের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে। সে যুদ্ধ যেই করুক, যারাই করুক, যেভাবেই করুক, আমি যুদ্ধ বিরোধী ব্যক্তি। আমি তো লিখেছিলাম আমার গানে গানে এই যুদ্ধ বন্ধের কথা। সেই গান আজ সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মনে পড়বে।”
আরো পড়ুন:
ভারত আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করেছে: পাকিস্তান
আমরা কেউ যুদ্ধ চাই না, তবে পাকিস্তানকে আগে বন্দুক নামাতে হবে: ওমর আব্দুল্লাহ
প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে কবীর সুমন বলেন, “এই দেশ যখন ভাগ হয়েছিল আমার অনুমতি নিয়েছিল কেউ? দেশের কোনো মানুষের অনুমতি নিয়েছিল কেউ? দেশের নেতারা কোনো জনগণের অনুমতি নিয়েছিল? আমি উপমহাদেশের নাগরিক! কীসের ভিত্তিতে আমার দেশ ভাগ হয়েছিল? আমি ১৯৪৯ সালে জন্মেছিলাম। আমি কোথায় জন্মালাম? তখন তো আমার কোনো ব্যক্তিগত পছন্দ ছিল না! আমি তখন থেকেই সব জিনিস সন্দেহের চোখে দেখি। দেশপ্রেম আমার কাছে একটা বুজরুকি। সেখানে মানবপ্রেম নেই। মানুষের জন্য প্রেম নেই, প্রাণীদের জন্য প্রেম নেই।”
নিরপরাধ মানুষ মারা যাচ্ছে। তা জানিয়ে কবীর সুমন বলেন, “একবার ভেবে দেখুন বন্ধু, একটা যুদ্ধ হচ্ছে অস্ত্র চালাচ্ছি আমরা। অথচ কতগুলো প্রাণ হারাচ্ছে, যারা এই পৃথিবীর কোনো ক্ষতি করেনি। কতগুলো গাছ পুড়ে যাচ্ছে, গাছ ধ্বংস নিয়েও কোনো নেতার মাথাব্যথা নেই। আর যারা দেশপ্রেম দেখাচ্ছেন, তারা এই গাছেদের পুড়ে যাওয়া, গাছের সঙ্গে কত নিরীহ পাখি, পোকামাকড় মারা যাওয়া নিয়ে কিছু বলছেন না। জল বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে কারো হেলদোল নেই।”
ক্ষুব্ধ কবীর সুমন বলেন, “সিঁদুর দেখাচ্ছে? কীসের ‘অপারেশন সিঁদুর’! আর বেশি বলতে চাই না। আমার মুখ দিয়ে এবার আর বললে খারাপ খারাপ কথা বেরোবে! আমি ৭৭ বছরের বৃদ্ধ। আমি সম্পূর্ণভাবে এই ‘দেশপ্রেমের’ বিরুদ্ধে এবং এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে।”
“যে ধর্মের নামে যুদ্ধ হয় আমি সেই ধর্মকে স্বীকার করি না। সেই ধর্মকে আমি ধিক্কার জানাই। যে মতবাদ যুদ্ধ ঘটায় আমি তাকে ধিক্কার জানাই।” বলেন কবীর সুমন।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পলিটেকনিকের শাটডাউন কর্মসূচি শিথিল
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শাটডাউন কর্মসূচি সাময়িকভাবে শিথিলের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিকেলে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সমকালকে বলেন, শিক্ষকদের অনুরোধ ও কারিগরি শিক্ষার স্বার্থে আমরা সাময়িকভাবে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি শিথিল করেছি।
এর আগে গতকাল সকালে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) উদ্যোগে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে যৌথ বৈঠক হয়। বৈঠকে আইডিইবি, পলিটেকনিক শিক্ষক সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ এবং ছাত্র প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সবাই আন্দোলন শিথিল করে শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
১৬ এপ্রিল থেকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে জোরালো আন্দোলন শুরু করেন। ২৯ এপ্রিল থেকে শাটডাউন কর্মসূচি শুরু হয় এবং অধিকাংশ ইনস্টিটিউটে তালা ঝুলিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়। এর আগে বিক্ষোভ মিছিল, গণসমাবেশ ও আইডিইবি অফিসে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন আইডিইবির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক প্রকৌশলী মো. কবীর হোসেন। বক্তব্য দেন আইডিইবি ও পলিটেকনিক শিক্ষক ও ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
সরকারের পদক্ষেপের (হাইকোর্টের রায় স্থগিত, অধ্যক্ষ বদলি, উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন) প্রশংসা করেন বক্তারা। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আশা করেন তারা।
সভা শেষে ছাত্র প্রতিনিধিরা নেতাদের সঙ্গে গিয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের কার্যালয়ের তালা খুলে দেন। এতে করে প্রতীকীভাবে শাটডাউন কর্মসূচির শিথিলতা শুরু হয়।