Samakal:
2025-10-29@11:05:53 GMT

যুদ্ধের দিকে যাত্রা থেমে যাক

Published: 10th, May 2025 GMT

যুদ্ধের দিকে যাত্রা থেমে যাক

সংঘাত বন্ধে ভারত ও পাকিস্তানকে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। দুই দেশকেই বিবেক, বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে জনগণ ও সম্পদের ক্ষতি এড়াতে উত্তেজনা কমাতে হবে। উভয় দেশের জন্য তা হবে মঙ্গলজনক। চলমান সংঘাত পারমাণবিক যুদ্ধে রূপ নিলে সমগ্র বিশ্বেই এর প্রভাব পড়বে। গতকাল শুক্রবার এসব কথা বলা হয় পাকিস্তানের গণমাধ্যম দ্য ডনের সম্পাদকীয়তে।      

এতে বলা হয়, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বিরাজ করছে ভয় ও উত্তেজনা। হামলা-পাল্টা হামলায় উভয় দেশ প্রতিশোধমূলক নতুন নতুন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে। দুই ভূখণ্ডেই এখন বিমানবন্দর বন্ধ; স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত এবং বাজারে ছন্দপতন ঘটেছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ভারত থেকে ছোড়া ইসরায়েলের তৈরি ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এর বাইরে কিছু কিছু ড্রোন হামলায় সম্পদের ক্ষতি ও মানুষ আহত হয়েছে। 

গত ৭ মে ভারত আজাদ কাশ্মীর ও পাঞ্জাবে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। বৃহস্পতিবারও ভারতের ড্রোন সিন্ধু প্রদেশের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এর অর্থ, ভারতের আগ্রাসন আরও এক ধাপ এগিয়েছে। দেশটির সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, জম্মু কাশ্মীরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে।  

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। এটি একটি অপ্রমাণিত অভিযোগ। ইসলামাবাদ মনে করে, মিথ্যা অজুহাতে পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালিত করে ভারত। পাকিস্তান পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে প্রতিশোধ নিয়েছে। এখন সব পক্ষের উচিত যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা থেকে সরে আসা, যাতে উভয় দেশের জনগণের জন্য স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করে। 

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বালদেব সিং গতকাল শুক্রবার  জোর দিয়ে বলেছেন, সংলাপের মাধ্যমে সংকটের সমাধান চান তারা। দেশটির সেনাবাহিনী উত্তেজনা না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ভারত উস্কানিমূলক আচরণ অব্যাহত রেখেছে। এতে সীমান্তের এপারে বেসামরিক নাগরিকের জীবন বিপন্ন করে তুলছে। অতএব সংলাপ ও উত্তেজনা না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। 

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা হলো, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার উভয় দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও ডিজিএমওদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সংযমের আহ্বান জানালেও ভারত যুদ্ধ বন্ধে এগিয়ে আসার আগ্রহ দেখায়নি। তাদের মধ্যে স্পষ্ট উদাসীনতা দেখা গেছে। পারমাণবিক শক্তিধর একটি দেশের এই আচরণ বিভ্রান্তিকর। কারণ শত্রুতা কখনও দ্বিপক্ষীয় বিষয় থাকে না, বরং তা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যকেও প্রভাবিত করবে।  

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, জাতিসংঘ, ইসলামাবাদ ও দিল্লির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে– এমন দেশগুলোর উচিত দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের উত্তাপ কমাতে ভূমিকা রাখা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয় দেশকে সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ ব্যাপারে কথা বলেছেন। উপসাগরীয় রাষ্ট্র ইরান ও অন্যান্য বিদেশি শক্তির উচিত কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে দেওয়া, যাতে সংঘাত বন্ধ করা যায়।   

উভয় দেশেই জঙ্গিবাদের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু ভারত এই সমস্যাটি পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। সম্ভবত তারা বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমার প্রেক্ষাপটে যুদ্ধের কথা চিন্তা করছে। সংঘাতের আসল বাস্তবতা ও ক্ষতিকর পরিণাম সম্পর্কে তারা উদাসীন। পারমাণবিক যুদ্ধ হলে কী ঘটবে, তা কল্পনা করাও ভয়াবহ। অতএব, দুই দেশকেই বিবেক ও বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে নিজেদের যুদ্ধের দিকে অগ্রসর হওয়া থামিয়ে দিতে হবে। উত্তেজনাময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য দ ধ র প রস ত ত উভয় দ শ দ শট র

এছাড়াও পড়ুন:

অবৈধ অর্থ উদ্ধারে আইন বাস্তবায়নের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের

পাচার হওয়া ‘অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমুখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা’ গঠনে প্রস্তাবিত আইন বাস্তবায়নসহ চার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশ। ২৯ নভেম্বরের মধ্যে এসব দাবি না মানলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ‘অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশ’র নেতারা সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হবেন এবং নির্বাচিত হয়ে নিজেরাই আইন বানিয়ে নেবেন।

সোমবার রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে সংগঠন দুটি এই ঘোষণা দেয়। সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের সভাপতি আবুল বাশার বক্তব্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি তুলে ধরে আবুল বাশার বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য চব্বিশের অভ্যুত্থানের একটা সেরা অর্জন হতে পারে পাচাররোধী আইন। সরকারকে এ লক্ষ্যে সর্বোচ্চ উদ্যোগী হতে হবে।’

পরে তিনি ‘অবৈধ অর্থ উদ্ধার ও গণমুখী বিনিয়োগ জাতীয় সংস্থা’ গঠনে প্রস্তাবিত আইন বাস্তবায়ন, ‘অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশ’–এর নেতাদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণে কৃষকের মতামত নেওয়া এবং রাষ্ট্রের ক্ষমতা ও সম্পদের ওপর জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্রের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করার দাবি জানান।

এসব দাবিতে ৩১ অক্টোবর দুপুরে ঠাকুরগাঁও বড় মাঠে রংপুর, ৪ নভেম্বর ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার আলমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে খুলনা, ৮ নভেম্বর সকালে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউস মাঠে, ১৩ নভেম্বর দুপুরে চাঁদপুরের বাবুরহাট সরকারি কলেজ মাঠে চট্টগ্রাম বিভাগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তা ছাড়া ১৪ নভেম্বর দুপুরে শরীয়তপুরের জাজিরা থানার বিকেনগর হাইস্কুল মাঠেও একটি সমাবেশ এবং ২৯ নভেম্বর সকালে ঢাকায় জাতীয় সমাবেশ করার ঘোষণা দেন আবুল বাশার।

একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়ে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের নেতা-কর্মীরা দেশের সবচেয়ে নিরীহ মানুষ। তাঁদের দাবিও খুব যৌক্তিক। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো হাসিনা সরকার যেমন অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের নেতাদের হামলা-মামলা করে নাজেহাল করেছিল, এই সরকারের আমলেও তাঁরা হামলা–মামলার শিকার হয়েছেন। সরকার ভুল বুঝতে পেরে গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের জামিনের সুযোগ করে দিয়েছেন। ভবিষ্যতেও অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের কর্মসূচি যেন নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে করা সম্ভব হয়, সেটা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।

চার দফা দাবি পূরণ না হলে অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের নেতারা নিজেরাই সংসদ সদস্য পদে প্রার্থিতার ঘোষণা দেবেন উল্লেখ করে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, সরকারকে আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে অহিংস গণ–অভ্যুত্থানের চার দফা দাবি পূরণের আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে ঢাকায় জাতীয় সমাবেশ থেকে আগামী নির্বাচনে অহিংস গণ-অভ্যুত্থানের নেতারা সংসদ সদস্য পদে প্রার্থিতার ঘোষণা দেবেন। নির্বাচিত হয়ে তাঁরা নিজেরা নিজেদের দাবি অনুযায়ী আইন বানাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যত দিন যাচ্ছে আমরা ততই বিভক্ত হয়ে পড়ছি: মির্জা ফখরুল 
  • আইন উপদেষ্টার ওপর জনগণের আস্থা নেই: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
  • বিএনপি–জামায়াত বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নির্বাচন করতে চাচ্ছে, দাবি নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর
  • তাইওয়ানের রোল মডে ইসরায়েল: প্রেসিডেন্ট লাই চিং
  • ধর্মকে বিকৃত করে নির্বাচন বানচাল জনগণ মানবে না: ফারুক
  • উন্নয়নের বয়ান ও মেগা প্রকল্পের রাজনীতি
  • ‘শেখ হাসিনার কাঠামোয় নির্বাচন হলে জনগণ মেনে নেবে না’
  • কোটি টাকার অব্যবহৃত যানে গজিয়েছে গাছ 
  • দল যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তাদের ভোট চাওয়ার দরকার নেই: ফরিদ আহমেদ
  • অবৈধ অর্থ উদ্ধারে আইন বাস্তবায়নের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের