Samakal:
2025-09-18@15:21:34 GMT

যুদ্ধের দিকে যাত্রা থেমে যাক

Published: 10th, May 2025 GMT

যুদ্ধের দিকে যাত্রা থেমে যাক

সংঘাত বন্ধে ভারত ও পাকিস্তানকে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। দুই দেশকেই বিবেক, বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে জনগণ ও সম্পদের ক্ষতি এড়াতে উত্তেজনা কমাতে হবে। উভয় দেশের জন্য তা হবে মঙ্গলজনক। চলমান সংঘাত পারমাণবিক যুদ্ধে রূপ নিলে সমগ্র বিশ্বেই এর প্রভাব পড়বে। গতকাল শুক্রবার এসব কথা বলা হয় পাকিস্তানের গণমাধ্যম দ্য ডনের সম্পাদকীয়তে।      

এতে বলা হয়, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বিরাজ করছে ভয় ও উত্তেজনা। হামলা-পাল্টা হামলায় উভয় দেশ প্রতিশোধমূলক নতুন নতুন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে। দুই ভূখণ্ডেই এখন বিমানবন্দর বন্ধ; স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত এবং বাজারে ছন্দপতন ঘটেছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ভারত থেকে ছোড়া ইসরায়েলের তৈরি ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এর বাইরে কিছু কিছু ড্রোন হামলায় সম্পদের ক্ষতি ও মানুষ আহত হয়েছে। 

গত ৭ মে ভারত আজাদ কাশ্মীর ও পাঞ্জাবে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। বৃহস্পতিবারও ভারতের ড্রোন সিন্ধু প্রদেশের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এর অর্থ, ভারতের আগ্রাসন আরও এক ধাপ এগিয়েছে। দেশটির সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, জম্মু কাশ্মীরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে।  

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। এটি একটি অপ্রমাণিত অভিযোগ। ইসলামাবাদ মনে করে, মিথ্যা অজুহাতে পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালিত করে ভারত। পাকিস্তান পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে প্রতিশোধ নিয়েছে। এখন সব পক্ষের উচিত যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা থেকে সরে আসা, যাতে উভয় দেশের জনগণের জন্য স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করে। 

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বালদেব সিং গতকাল শুক্রবার  জোর দিয়ে বলেছেন, সংলাপের মাধ্যমে সংকটের সমাধান চান তারা। দেশটির সেনাবাহিনী উত্তেজনা না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ভারত উস্কানিমূলক আচরণ অব্যাহত রেখেছে। এতে সীমান্তের এপারে বেসামরিক নাগরিকের জীবন বিপন্ন করে তুলছে। অতএব সংলাপ ও উত্তেজনা না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। 

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা হলো, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার উভয় দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও ডিজিএমওদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সংযমের আহ্বান জানালেও ভারত যুদ্ধ বন্ধে এগিয়ে আসার আগ্রহ দেখায়নি। তাদের মধ্যে স্পষ্ট উদাসীনতা দেখা গেছে। পারমাণবিক শক্তিধর একটি দেশের এই আচরণ বিভ্রান্তিকর। কারণ শত্রুতা কখনও দ্বিপক্ষীয় বিষয় থাকে না, বরং তা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যকেও প্রভাবিত করবে।  

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, জাতিসংঘ, ইসলামাবাদ ও দিল্লির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে– এমন দেশগুলোর উচিত দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের উত্তাপ কমাতে ভূমিকা রাখা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয় দেশকে সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ ব্যাপারে কথা বলেছেন। উপসাগরীয় রাষ্ট্র ইরান ও অন্যান্য বিদেশি শক্তির উচিত কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে দেওয়া, যাতে সংঘাত বন্ধ করা যায়।   

উভয় দেশেই জঙ্গিবাদের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু ভারত এই সমস্যাটি পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। সম্ভবত তারা বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমার প্রেক্ষাপটে যুদ্ধের কথা চিন্তা করছে। সংঘাতের আসল বাস্তবতা ও ক্ষতিকর পরিণাম সম্পর্কে তারা উদাসীন। পারমাণবিক যুদ্ধ হলে কী ঘটবে, তা কল্পনা করাও ভয়াবহ। অতএব, দুই দেশকেই বিবেক ও বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে নিজেদের যুদ্ধের দিকে অগ্রসর হওয়া থামিয়ে দিতে হবে। উত্তেজনাময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য দ ধ র প রস ত ত উভয় দ শ দ শট র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।

জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।

এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।

জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।

জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিআরেরও দু–একটা সাইড এফেক্ট আছে, কিন্তু অধিকাংশই ভালো দিক: ইসলামী আন্দোলন
  • আস্থা রাখতে চাই, ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হবে: টুকু
  • ‘আমরা ভুগছি আর রাজনীতিবিদেরা ধনী হচ্ছেন, তাই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকার ফেলে দিয়েছি’
  • জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন ১৮ কোটি মানুষের দাবি: জামায়াত
  • ‘ভোটারদের আস্থা নিশ্চিত করা বিএনপির দায়িত্ব’
  • পটুয়াখালীতে সালিস বৈঠকে অংশ নিলে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিএনপি
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি