Samakal:
2025-09-17@23:42:48 GMT

যুদ্ধের দিকে যাত্রা থেমে যাক

Published: 10th, May 2025 GMT

যুদ্ধের দিকে যাত্রা থেমে যাক

সংঘাত বন্ধে ভারত ও পাকিস্তানকে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। দুই দেশকেই বিবেক, বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে জনগণ ও সম্পদের ক্ষতি এড়াতে উত্তেজনা কমাতে হবে। উভয় দেশের জন্য তা হবে মঙ্গলজনক। চলমান সংঘাত পারমাণবিক যুদ্ধে রূপ নিলে সমগ্র বিশ্বেই এর প্রভাব পড়বে। গতকাল শুক্রবার এসব কথা বলা হয় পাকিস্তানের গণমাধ্যম দ্য ডনের সম্পাদকীয়তে।      

এতে বলা হয়, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বিরাজ করছে ভয় ও উত্তেজনা। হামলা-পাল্টা হামলায় উভয় দেশ প্রতিশোধমূলক নতুন নতুন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে। দুই ভূখণ্ডেই এখন বিমানবন্দর বন্ধ; স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত এবং বাজারে ছন্দপতন ঘটেছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ভারত থেকে ছোড়া ইসরায়েলের তৈরি ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এর বাইরে কিছু কিছু ড্রোন হামলায় সম্পদের ক্ষতি ও মানুষ আহত হয়েছে। 

গত ৭ মে ভারত আজাদ কাশ্মীর ও পাঞ্জাবে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। বৃহস্পতিবারও ভারতের ড্রোন সিন্ধু প্রদেশের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এর অর্থ, ভারতের আগ্রাসন আরও এক ধাপ এগিয়েছে। দেশটির সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, জম্মু কাশ্মীরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে।  

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। এটি একটি অপ্রমাণিত অভিযোগ। ইসলামাবাদ মনে করে, মিথ্যা অজুহাতে পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালিত করে ভারত। পাকিস্তান পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে প্রতিশোধ নিয়েছে। এখন সব পক্ষের উচিত যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা থেকে সরে আসা, যাতে উভয় দেশের জনগণের জন্য স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করে। 

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বালদেব সিং গতকাল শুক্রবার  জোর দিয়ে বলেছেন, সংলাপের মাধ্যমে সংকটের সমাধান চান তারা। দেশটির সেনাবাহিনী উত্তেজনা না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ভারত উস্কানিমূলক আচরণ অব্যাহত রেখেছে। এতে সীমান্তের এপারে বেসামরিক নাগরিকের জীবন বিপন্ন করে তুলছে। অতএব সংলাপ ও উত্তেজনা না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। 

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা হলো, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার উভয় দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও ডিজিএমওদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সংযমের আহ্বান জানালেও ভারত যুদ্ধ বন্ধে এগিয়ে আসার আগ্রহ দেখায়নি। তাদের মধ্যে স্পষ্ট উদাসীনতা দেখা গেছে। পারমাণবিক শক্তিধর একটি দেশের এই আচরণ বিভ্রান্তিকর। কারণ শত্রুতা কখনও দ্বিপক্ষীয় বিষয় থাকে না, বরং তা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যকেও প্রভাবিত করবে।  

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, জাতিসংঘ, ইসলামাবাদ ও দিল্লির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে– এমন দেশগুলোর উচিত দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের উত্তাপ কমাতে ভূমিকা রাখা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয় দেশকে সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ ব্যাপারে কথা বলেছেন। উপসাগরীয় রাষ্ট্র ইরান ও অন্যান্য বিদেশি শক্তির উচিত কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়ে দেওয়া, যাতে সংঘাত বন্ধ করা যায়।   

উভয় দেশেই জঙ্গিবাদের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু ভারত এই সমস্যাটি পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। সম্ভবত তারা বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমার প্রেক্ষাপটে যুদ্ধের কথা চিন্তা করছে। সংঘাতের আসল বাস্তবতা ও ক্ষতিকর পরিণাম সম্পর্কে তারা উদাসীন। পারমাণবিক যুদ্ধ হলে কী ঘটবে, তা কল্পনা করাও ভয়াবহ। অতএব, দুই দেশকেই বিবেক ও বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে নিজেদের যুদ্ধের দিকে অগ্রসর হওয়া থামিয়ে দিতে হবে। উত্তেজনাময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি ও আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য দ ধ র প রস ত ত উভয় দ শ দ শট র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • জুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা