ইউনূস সরকারের অস্থিরতার দায় বিএনপি নেবে না: ফারুক
Published: 23rd, May 2025 GMT
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অস্থিরতার দায় বিএনপি নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
শুক্রবার (২৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াও দেশবাসী’ শীর্ষক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, “আপনি (মুহাম্মদ ইউনূস) নাকি বলেছেন, জুলাইয়ে নির্বাচন হবে। জুলাইয়ে হবে না ডিসেম্বরে হবে… রোডম্যাপ দিয়ে দিলেই তো যারা আন্দোলনে ছিল, যারা হাসিনার আমলে আয়নাঘরে ছিল, লক্ষ মামলা খেয়েছে, তারা আপনার সঙ্গে বসতে পারত। কিন্তু, এখনো নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা হয়নি। যদি এই অস্থিরতা সৃষ্টি আপনারা করে থাকেন, তবে তার দায় বিএনপি কখনোই গ্রহণ করবে না।”
অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে যেন একটা অস্থিরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এই অস্থিরতার মূল হোতা কারা? কারা নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চাচ্ছে? এই বিষয়গুলো অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মতো মহান ব্যক্তির কাছে আমরা জানতে চেয়েছিলাম।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার করেন, কিন্তু এমন সংস্কার কইরেন না, যে সংস্কারের মধ্য দিয়ে করিডোর হবে, চট্টগ্রাম বন্দর অন্যের হাতে চলে যাবে…। এমন সংস্কার কইরেন না, যে সংস্কারের মধ্যে দিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা নির্বাচনকে বিলম্বিত করে আপনাদের (মুহাম্মদ ইউনূস সরকার) অস্থির করে তুলবে। তাই, আপনার অস্থিরতা কাটাতে হলে আপনাকেই আজ-কাল-পরশুর মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
তিনি বলেন, “এই দেশ আমাদের। এই দেশ থেকে আমাদের কেউ খেদিয়ে দিতে পারবে না। আমরা কেবল নির্বাচন চাই।”
পত্রিকায় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের আলোচনার খবরের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, “আপনি নন্দিত লোকটি নিন্দিত হয়ে বিদায় নিলে আমরা মনে কষ্ট পাব। ইতিহাসে আপনার নামটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকুক যে, আপনি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের মতো একটি নির্বাচন দিয়েছেন, আপনি দিনের ভোট দিনে করেছেন, আমার ভোটের অধিকার আপনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন…। ইতিহাস লেখা থাকবে। সেই ইতিহাসে আমাদের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আপনাকে নিয়ে অহংকার করতে পারবে। তাই, আপনার কাছে অনুরোধ অনতিবিলম্বে তিনজনকে (আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, মাহফুজ আলম ও খলিলুর রহমান) উপদেষ্টা পরিষদ থেকে আপনি চিঠি দিয়ে দেন…। অনুরোধ করেন, তারা যেন পদত্যাগ করে। নইলে আপনাকে এই তিনজনকে বিদায় করতে হবে।”
‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’-এর সহ-সভাপতি এম এ আজাদ চয়নের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন সিরাজীর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/এম/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপন র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগেতবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।