‘কৃষ্ণচূড়ায় রঙে পত্তান রাঙেয়ে, তর জিংহানি হদু যেনো নিজিয়ে, আদি যের সমারে পাওর-জর বোয়েরে, রঙে রঙে মনানিরে রাঙেয়ে।’ (কৃষ্ণচূড়া পথ রাঙিয়েছে, রঙে রঙে মনে রং লেগেছে।) চাকমা গানের কথার মতোই বিলাইছড়ির পথগুলো সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার রঙে।  উপজেলা সদরের পথে পথে গাছের ফাঁকে উঁকি দেয় কৃষ্ণচূড়া ফুল। সবুজ কচি পাতার ফাঁকে যেন রূপের আগুন ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া। শুধু কি কৃষ্ণচূড়া? কনকচূড়া, জারুল ফুলও রঙের মায়া ছড়াচ্ছে দুর্গম বিলাইছড়ির ফুলবনে। ফুলের রূপ আর সূর্যাস্ত দেখতে প্রতিদিন হাজারো মানুষ জড়ো হচ্ছেন ধুপ্যাচর সেতু এলাকায়। এলাকাটি এখন বিনোদন স্পটে পরিণত হয়েছে। 
জানা যায়, কয়েক যুগ আগে বিলাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে ধুপ্যাচর সেতু এলাকা পর্যন্ত সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য রাস্তার দুই ধারে কৃষ্ণচূড়া, কনকচূড়াসহ হরেক প্রজাতির গাছ রোপণ করে। উপজেলা প্রশাসনের রোপিত গাছগুলো এখন বড় হয়েছে। প্রতিবছরের মতো এ বছরও রাস্তার দুই ধারে কৃষ্ণচূড়া, কনকচূড়া ও জারুল ফুলের সমাহার ঘটেছে। উপজেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে ধুপ্যাচর সেতু এলাকা পর্যন্ত রাস্তার ধারে এসব ফুল দ্যুতি ছড়াচ্ছে। চলতি পথে হঠাৎ করে পথিকের সামনে এনে দিচ্ছে শিল্পের দ্যোতনা। সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে  প্রকৃতি ও ফুলপ্রেমী লোকজন ধুপ্যাচর সেতু এলাকায় ভিড় জমাচ্ছেন। আবার এ সেতু থেকে দেখা যায় সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য। দর্শনাথীরা বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে আড্ডা দেন আর প্রৃকতির সৌন্দর্য উপভোগ করেন। তিশা চাকমা, অর্পণা চাকমা, অমর চাকমা বলেন, ‘ধুপ্যাচর সেতু এলাকায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য দেখে আমরা আনন্দিত। বন্ধু-বান্ধুবদের সঙ্গে এখানে ফুলের রূপ দেখেছি, সূর্যাস্তের সৌন্দর্য উপভোগ করেছি। স্মৃতি হিসেবে ছবিও তুলে রেখেছি।’
নমিতা চাকমা বলেন, ‘ধুপ্যাচর সেতু এলাকার কয়েকটি কৃষ্ণচূড়া গাছে টকটকে লাল ফুল ফুটেছে, যা অত্যন্ত সুন্দর। দূরদূরান্ত থেকে লোকজন ফুলের রূপ দেখতে আসছে, আমরাও আসছি। বিকেল বেলায় এলাকাটি মোহনীয় হয়ে ওঠে।’
স্থানীয় সাংবাদিক অসীম চাকমা বলেন, ‘ভাইবোনছড়া সেতু থেকে শুরু করে ধুপ্যাচর সেতু হয়ে উপজেলা পরিষদ কার্যালয় পর্যন্ত এলাকা এখন ফুলের গ্রাম। কৃষ্ণচূড়া, কনকচূড়া, রাধাচূড়া, জারুল ফুলের সমাহার মানুষকে বিমোহিত করছে। তপ্ত গরমের মধ্যেও বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ফুলের রূপ দেখতে আসছেন।’   
বিলাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান বলেন, ‘ধুপ্যাচর সেতু এলাকা এখন বিনোদনকেন্দ্র। এখানে পরিকল্পিতভাবে সৌন্দর্য বর্ধনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ধ প য চর স ত স ন দর য ব ল ইছড় কনকচ ড় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ