পুতিনকে নিয়ে ‘হতাশ’ ট্রাম্পের পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী হবে
Published: 13th, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শুক্রবার আবারও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দুই দিনের মধ্যে এটি ছিল দ্বিতীয় বৈঠক। তাঁদের এসব বৈঠকের মূলে রয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ। আগের দিন মালয়েশিয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সম্মেলনের ফাঁকে লাভরভের সঙ্গে ৫০ মিনিট বৈঠক হয় রুবিওর।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করবেন। কিন্তু চার মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা আগের মতোই দূরের বিষয় বলে মনে হচ্ছে। একই সঙ্গে রাশিয়া সম্প্রতি ইউক্রেনের ওপর ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পর রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার দিক থেকে আরও নমনীয়তা না দেখানোয় ট্রাম্প ‘হতাশ ও বিরক্ত’।
তাহলে কি যুদ্ধের ব্যাপারে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে আর এ নিয়ে তাঁর পরবর্তী বিকল্পগুলোই বা কী?
রাশিয়ার বিষয়ে কি ট্রাম্পের অবস্থান বদলেছেএমন সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও এসব কথা বললেন, যখন প্রকাশ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচনা বাড়িয়েছেন ট্রাম্প। এর আগে ইউক্রেন শান্তি চায় না বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
গত মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিন আমাদের উদ্দেশে অনেক আজেবাজে কথা বলেছেন। তিনি সব সময় খুব ভালো ব্যবহার করেন, কিন্তু দেখা যায় শেষ পর্যন্ত সেগুলো অর্থহীন।’
গত ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালে রাশিয়ার সর্বাত্মক হামলার প্রথম মাসগুলোর পর সর্বশেষ মে মাসে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে প্রথমবারের মতো দুই দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনার আয়োজন করে ওয়াশিংটন।
কিন্তু পুতিন সাময়িক অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দিলেও ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। ইউক্রেন অবশ্য এই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। রাশিয়ার যুক্তি, ইউক্রেন এই যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে সেনাদের নতুন উদ্যমে মোতায়েন এবং নিজেদের আরও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করতে পারে।
গত সপ্তাহে সাংবাদিকেরা ট্রাম্পের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তিনি পুতিনের প্রতি তাঁর হতাশা থেকে কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি আপনাদের বলব না। আমরা কি একটু চমক চাই না?’
অবশ্য ট্রাম্প রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত—এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। লন্ডনভিত্তিক চিন্তন প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের সিনিয়র কনসালটিং ফেলো কিয়ার জাইলস আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে পুতিনের বিষয়ে ট্রাম্পের পরিবর্তনশীল অবস্থান নিয়ে মন্তব্যে ভরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই, কোনো কিছু একেবারে বদলে গেছে।’
কিয়ার জাইলস বলেন, ‘সারা বিশ্বে আশাবাদের একটি ঢেউ বইছে যে এটি অবশেষে মার্কিন নীতির পরিবর্তন ঘটাতে পারে। কিন্তু এর আগের প্রতিটি ঘটনাতেই এমন কিছু ঘটেনি।’
প্রকৃতপক্ষে রুবিও ও লাভরভের মধ্যে বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পর উভয় পক্ষই ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা কূটনৈতিকভাবে যুক্ত থাকতে ইচ্ছুক।
ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহজুলাই মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্প প্রশাসন কিয়েভে অস্ত্র সরবরাহ ‘স্থগিত’ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল। এক সপ্তাহ পরে ট্রাম্প এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। ৮ জুলাই তিনি বলেন, ‘আমরা আরও কিছু অস্ত্র পাঠাতে যাচ্ছি। আমাদের তা করতেই হবে। তাদের (ইউক্রেন) নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হতে হবে। তারা এখন খুব কঠিন হামলার শিকার হচ্ছে।’
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এনবিসিকে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেন, এ অস্ত্রগুলো ন্যাটোর কাছে বিক্রি করা হবে। ন্যাটো এর সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করবে। ন্যাটো এরপর সেগুলো ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করবে।
ন্যাটো মার্কিন নেতৃত্বাধীন একটি সামরিক জোট। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা ন্যাটোতে অস্ত্র পাঠাচ্ছি। ন্যাটো সেই অস্ত্রের মূল্য পরিশোধ করছে, শতভাগ মূল্য।’ যুক্তরাষ্ট্র এই জোটকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করবে বলেও জানান তিনি।
ট্রাম্প বলেন, জুনে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অনুষ্ঠিত ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে এই চুক্তি হয়েছিল।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এক তিক্ত বৈঠকের পর ট্রাম্প ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সাহায্য পাঠানো স্থগিত করেছিলেন। জেলেনস্কিকে অভিযুক্ত করে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে এমন একটি যুদ্ধে ৩৫ হাজার কোটি ডলার খরচ করার জন্য প্ররোচিত করেছেন, যা জেতা সম্ভব নয়।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোটের (আসিয়ান) সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রমন ত র য ক তর ষ ট র র প ট র ম প বল ইউক র ন র প রস ত ল ভরভ
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণা পুরস্কার এবং লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডের আবেদন করুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার’ ও ‘রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ইন ফিজিক্স’ প্রদানের জন্য দেশের পদার্থবিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
কোন সালের জন্য পুরস্কার —ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্ট ফান্ড থেকে ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের গবেষণা কাজের জন্য এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
পুরস্কার মল্যমান কত —১. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য পুরস্কার পাওয়া গবেষককে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার হিসেবে নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।
২. পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে আজীবন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একজন বিজ্ঞানী বা গবেষককে নগদ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের রাজ্জাক শামসুন নাহার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ —আগ্রহী প্রার্থীদের আগামী ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) বরাবর আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে—আবেদনকারীদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তিন কপি আবেদনপত্র, তিন প্রস্থ জীবনবৃত্তান্ত, তিন প্রস্থ গবেষণাকর্ম এবং তিন কপি ছবি আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
দরকারি তথ্য—১. জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকাশিত গবেষণাকর্ম পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে।
২. যৌথ গবেষণা কাজের ক্ষেত্রে গবেষণা পুরস্কারের অর্থ সমান হারে বণ্টন করা হবে। এ ক্ষেত্রে সহযোগী গবেষক বা গবেষকের অনুমতি নিয়ে আবেদন করতে হবে।
৩. আবেদনকারী যে বছরের জন্য আবেদন করবেন পাবলিকেশন ওই বছরের হতে হবে।
৪. একই পাবলিকেশন দিয়ে পরবর্তী বছরের জন্য আবেদন করা যাবে না।
৫. কোন কারণে একজন প্রার্থী পুরস্কারের জন্য আবেদন করলে প্রার্থিতার স্বল্পতা বিবেচনা করে তাঁর আবেদন বিবেচনা করা হবে।
৬. পরীক্ষক তাঁর গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য সুপারিশ না করলে তাঁকে পুরস্কারের বিষয়ে বিবেচনা করা হবে না।
৭. পদার্থবিজ্ঞানে রাজ্জাক শামসুন নাহার গবেষণা পুরস্কার একবার প্রাপ্ত গবেষকও পরবর্তী সময়ে আবেদন করতে পারবেন।
৮. নতুন গবেষককে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৯. যদি মানসম্মত গবেষণা কাজ না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে পূর্বের পুরস্কার পাওয়া গবেষকের নতুন গবেষণা কাজের পুরস্কারের জন্য পরীক্ষকের সুপারিশের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে।
# আবেদন জমা দেওয়ার ঠিকানা: প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।