চার সীমান্ত দিয়ে আরও ১৫৩ জনকে পুশইন বিএসএফের
Published: 25th, May 2025 GMT
সিলেটের বিয়ানীবাজার, মৌলভীবাজারের বড়লেখা ও মেহেরপুরের মুজিবনগরসহ চার সীমান্ত এলাকা দিয়ে আরও ১৭২ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এর মধ্যে বিয়ানীবাজার ও বড়লেখার তিন সীমান্ত দিয়ে পুশইন করা হয়েছে নারী-শিশুসহ ১৫৩ জনকে। মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ১৯ জনকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তাদের সবাইকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিজিবি আটক করে হস্তান্তর করেছে পুলিশের কাছে। গত ৪ মে থেকে রোববার পর্যন্ত বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মোট ৬৪৬ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিল বিএসএফ।
বিয়ানীবাজারের নয়াগ্রাম সীমান্তে রোববার ভোরে ৩২ জনকে সীমান্তের ৫৩৮ একর অমীমাংসিত ভূমির একটি বিলে ছেড়ে দেয় বিএসএফ। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন পুরুষ, ৯ জন নারী ও ১৪ জন শিশু। ভোরে বিজিবির টহল দল ও স্থানীয়রা তাদের দেখতে পেয়ে আটক করে নয়াগ্রাম প্রগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে আসেন। সেখানে তাদের পরিচয় শনাক্ত করার পর বিয়ানীবাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়।
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের বিয়ানীবাজার সদরদপ্তর সূত্র জানায়, একই ভোরে উপজেলার বড়লেখার লাতু বিওপি এলাকায় ৭৯ জন এবং পাল্লাথল বিওপি এলাকায় আরও ৪২ জনকে পুশইন করে বিএসএফ। এর মধ্যে লাতু সীমান্তে আটক ৭৯ জনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, নারী ১৯ জন এবং শিশু ২০ জন এবং পাল্লাথল সীমান্তে আটক ৪২ জনের মধ্যে রয়েছেন পুরুষ ২৪ জন, নারী ১৬ জন ও শিশু ১৭ জন। তাদের বড়লেখা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়ন বিয়ানীবাজারের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান বলেন, আটক ১৫৩ জনের সবাই বাংলাদেশি। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের কাঁটাতারের পাশঘেঁষা শূন্য রেখার একটি বিলে ছেড়ে দেয় বিএসএফ। আটক বেশির ভাগের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়।
একই দিন মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৯ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ। ভোরে উপজেলার সোনাপুর মাঝপাড়া সীমান্ত দিয়ে তাদের পুশইন করা হয়। এই ১৯ জন সীমান্ত পার হয়ে উপজেলার কেদারগঞ্জ বাজারে অবস্থান করার খবর পেয়ে মুজিবনগর থানা পুলিশ তাদের আটক করে হেফাজতে নেয়। খবর পেয়ে মুজিবনগর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা সেখানে যান। আটকদের মধ্যে পুরুষ ৯ জন, শিশু ৫ জন ও নারী ৫ জন। তারা সবাই বাংলাদেশি বলে জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আটকরা হলেন– কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার কাঠগিরি গ্রামের আব্দুল জলিলের মেয়ে মোমেনা খাতুন, মোজাম্মেল হক, মোস্তাক আহমেদ ও কাবিল; কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার জয় মঙ্গল, মাথা গ্রামের জালালউদ্দিনের ছেলে মইনুল ইসলাম, স্ত্রী কাঞ্চন ও ছেলে কারণ, রবিউল এবং মেয়ে মরিয়ম; লালমনিরহাট সদর থানার চুঙ্গগাড়া গ্রামের মৃত গণেশ চন্দ্র পালের ছেলে নিতাই চন্দ্র পাল, তাঁর স্ত্রী গীতা রানী পাল, মেয়ে পার্বতী পাল, পূজা রানী পাল ও আরতী পাল; কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার কুঠিচন্দ্রখানা গ্রামের মো.
মুজিবনগর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করায় বিজিবি আটকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের রোববার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত প্রাপ্তবয়স্কদের জেলা হাজতে পাঠাতে এবং শিশুদের সার্বিক বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প শইন ম জ বনগর ব এসএফ বড়ল খ প শইন
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ