ভারতে পাচার হওয়া ৩৬ কিশোর-কিশোরীকে হস্তান্তর
Published: 27th, May 2025 GMT
ভালো কাজের প্রলোভনে দালালদের খপ্পরে পড়ে ভারতে পাচার হওয়া এক নারী এবং ৩৫ জন শিশু, কিশোরী ও কিশোর ছয় মাস থেকে দেড় বছর জেল খেটে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন।
ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকাল ৫টার দিকে তাদের বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তবে এ সকল শিশু, কিশোর-কিশোরীদের অনেকের বাবা ও মা এখনো ভারতের জেলখানায় আটক রয়েছে। এ সময় শার্শা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) শওকাত মেহেদী সেতু উপস্থিত ছিলেন।
পাচারের শিকার তাহমিনা বলেন, ‘‘আমরা যারা আজ দেশে ফিরেছি, আমাদের অনেকের বাবা ও মা এখনো অনেকে ভারতের জেলখানা, শেল্টার হোমে রয়েছে। আমরা দালালদের মাধ্যমে বেনাপোলসহ বিভিন্ন সীমান্ত পথে অভিভাবকদের সঙ্গে ভারতে গিয়ে আটক হই। এরপর আদালতের রায়ে আমরা কারাগারে যাই। সেখানকার এনজিও সংস্থা আমাদের ছাড় করিয়ে বিভিন্ন শেল্টার হোমে রাখে। সেখানে ৬ মাস থেকে ১৮ মাস পর্যন্ত থেকে আজ দেশে ফিরেছি।’’
আরো পড়ুন:
ভারতে একই পরিবারের ৭ জনের আত্মহত্যা
বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের দুশ্চিন্তা বাড়ছে: অধীর চৌধুরী
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপপরিদর্শক সাহাদত হোসাইন জানান, এরা বিভিন্ন সীমান্ত পথে পাচার হয়ে ভারতে যায়। এরপর সেই দেশে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে কারাগারে যায়। তারপর সেখান থেকে সেদেশের বিভিন্ন এনজিও তাদের ছাড় করিয়ে শেল্টার হোমে রাখে। দুই দেশের চিঠি চালাচালির মাধ্যমে তারা ছাড়া পেয়ে আজ বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে বেনাপোল দিয়ে দেশে ফিরে আসে।
ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তাদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বেনাপোল পোর্ট থানা ওসি জানান, তাদের থানার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিভিন্ন এনজিও এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যশোর মহিলা আইনজীবী সমিতির এরিয়া কোঅডিনেটর রেখা রাণী বলেন, ‘‘পাচার শিকার শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের আমরা সেদেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশে ফেরত এনেছি। এর মধ্যে আমরা সাতজন, পাচারের শিকার মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থা ছয় জন, যশোর রাইটস ১০ জন এবং জাস্টিস এন্ড কেয়ার ১৩ জনকে গ্রহণ করেছি। আমরা নিজেদের শেল্টার হোমে রেখে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করব। কেউ যদি আইনি সাহায্য নেয়, তবে তাদের সহায়তা দেয়া হবে।’’
ঢাকা/রিটন/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’