প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দকৃত পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। পূর্বের ন্যায় কোটা বহালের দাবিতে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে লাগাতার কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। অন্যদিকে পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ছেলেদের ১০টি আবাসিক হল ঘুরে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এসময় তারা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নেন। এতে আটকে পড়েন প্রশাসনিক ভবনে অবস্থানরত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, পোষ্য কোটা মানেই অযোগ্যদের সুযোগ করে দেওয়া। পোষ্য কোটা নিয়ে গতকাল প্রশাসন সংস্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। কিন্তু আমরা তা প্রত্যাখান করে অবিলম্বে পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী নিবিড় ভূইয়া বলেন, অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে আমরা অবস্থান নিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী কারোরই পোষ্য কোটার কোনো যৌক্তিকতা নেই। অজপাড়াগাঁয়ের একজন কৃষকের সন্তান যদি মেধার ভিত্তিতে জাহাঙ্গীরনগরে পড়াশোনা করতে পারে, তাহলে একজন শিক্ষার্থী যে জাহাঙ্গীরনগরের ছোট থেকে বড় হয়েছে, ভালো স্কুল কলেজে পড়াশোনা করেছে তার কোনো ধরনের প্রিভিলেজ লাগবে বলে আমরা বিশ্বাস করি না।

এর আগে, বেলা ১১টার দিকে পূর্বের মতো পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেখানে পোষ্য কোটা বাতিল সংক্রান্ত পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ আনেন শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রতিবাদ জানাতে এলে এক শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

এ নিয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি বলেন, পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরা গতকাল অনশন করেছি। আজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোটা বহালের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে আমাদের পোস্টারগুলো ছিঁড়ে ফেলেন। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকে ধাক্কা দেন। আমি এ প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার বিচার চাই।

এদিকে, পৌষ্য কোটা সংক্রান্ত সব শর্ত বাতিল ও পুনরায় বহালের দাবিতে আগামীকাল থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, এ ঘোষণার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সরাসরি ইন্ধন রয়েছে। পোষ্য কোটা বাতিল হোক, তা তারা চাচ্ছেন না।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অবস থ ন ন

এছাড়াও পড়ুন:

বার্লিনে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসছেন ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা

ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য মার্কিন ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদল নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করছে জার্মানি। দেশটির একজন কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন। আগামীকাল সোমবার বার্লিনে ইউরোপীয় নেতারা ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির শীর্ষ সম্মেলনের আগে এই বৈঠক হবে।

একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ এবং তাঁর জামাতা জ্যারেড কুশনার ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিতে জার্মানির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রস্তাব নিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় নেতৃত্ব দেওয়া উইটকফকে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে একটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, ২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর প্রায় চার বছর ধরে চলা এই যুদ্ধ বন্ধে এখন অগ্রগতির একটি সুযোগ দেখতে পাচ্ছে ওয়াশিংটন।

গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল, আলোচনায় যথেষ্ট অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেই কেবল ট্রাম্প কোনো কর্মকর্তাকে আলোচনার জন্য পাঠাবেন।

‘প্যাক্স আমেরিকানা’ যুগ শেষ

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে জার্মান সরকারের একটি সূত্র গতকাল শনিবার বলেছে, ‘এই সপ্তাহান্তে বার্লিনে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেনসহ অন্যান্য দেশের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টাদের নিয়ে ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।’

সোমবার বার্লিনে জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের নিয়ে একটি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস। ইউরোপজুড়ে মিত্রদের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের নেতার প্রতি সমর্থন প্রদর্শনের অংশ হিসেবে এ সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে। এমন এক সময়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যখন ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে একটি শান্তি পরিকল্পনায় সই করার জন্য কিয়েভ চাপের মুখে রয়েছে। এই পরিকল্পনায় প্রাথমিকভাবে মস্কোর প্রধান দাবিগুলোকে সমর্থন করা হয়েছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি মার্কিন প্রস্তাবগুলো পরিমার্জনের জন্য কাজ করছে। গত মাসে ওই প্রস্তাবের একটি খসড়া ফাঁস হয়। এতে কিয়েভকে আরও ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া, ন্যাটোতে যোগদানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ এবং নিজেদের সশস্ত্র বাহিনী সীমিত রাখার কথা বলা হয়েছিল।

শনিবার এক ভাষণে মের্ৎস বলেন, রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে ইউরোপকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি আমূল পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিউনিখে দলীয় এক সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘ইউরোপে আমাদের জন্য এবং একইভাবে জার্মানির জন্যও প্যাক্স আমেরিকানা (পশ্চিমে মার্কিনসমর্থিত স্থিতিশীলতা) যুগ বহুলাংশে শেষ হয়ে গেছে। আমরা যেমনটা জানতাম, সেভাবে এর আর অস্তিত্ব নেই। আর স্মৃতিকাতরতা এই বাস্তবতা বদলাতে পারবে না।’

ইউরোপের প্রভাবশালী দেশটির এই নেতা বলেন, ‘মার্কিনিরা এখন আরও বেশি প্রবলভাবে তাঁদের নিজস্ব স্বার্থের পেছনে ছুটছে। আর এর মানে একটাই হতে পারে—এখন আমাদেরকেও অবশ্যই নিজেদের স্বার্থরক্ষায় কাজ করে যেতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ২১ ডিসেম্বর, দেখে নিন ইউনিটভিত্তিক রুটিন
  • প্রধান উপদেষ্টাকে জাতিসংঘ মহাসচিবের ফোন, সুদান ট্র্যাজেডিতে শোক
  • ‘এখন আমি কার ফোনের জন্য অপেক্ষা করব’
  • বার্লিনে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসছেন ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা
  • শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা
  • বাবার মৃত্যুর পরদিনও পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম
  • শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: পুষ্পস্তবক অর্পণসহ চার বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজন
  • পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে শেষ হলো জাবির জাতীয় বিতর্ক উৎসব 
  • ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনায় জেলায় জেলায় বিক্ষোভ
  • অসহায় রিকশাচালক পরিবারের মুখে হাসি ফোটালো নারায়ণগঞ্জ বসুন্ধরা শুভসংঘ