ছবি: কবির হোসেন

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হজে গিয়ে সুস্থ থাকতে করণীয়

প্রতিবছরের মতো এবারও হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন। হজযাত্রীদের বড় অংশই বয়স্ক। তাঁদের অনেকেরই আছে নানা ক্রনিক রোগ, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, হাঁপানি ইত্যাদি। হজে গিয়ে যেন তাঁরা সুস্থ থাকতে পারেন, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। প্রতিবছর হজে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসল্লি অসুস্থ হয়ে পড়েন, অনেকে মারাও যান।

সংক্রমণ

হজে লাখ লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটে। তাই এখানে যেকোনো সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া সহজ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয় শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ। কারণ, এই জীবাণু বাতাসে ড্রপলেট আকারে ছড়ায়। বয়স্ক ও ডায়াবেটিসের রোগীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকে বলে সহজেই আক্রান্ত হতে পারেন। তাই ফ্লু, নিউমোনিয়া এড়াতে মুখে মাস্ক পরুন, বারবার হাত পরিষ্কার করুন। হাঁচি–কাশির আদবকেতা মেনে চলুন। সম্ভব হলে যাওয়ার আগে ফ্লু ও নিউমোনিয়ার টিকা দিয়ে নিন। আরেকটি জটিল সংক্রমণ হলো মেনিনজাইটিস বা মস্তিষ্কের পর্দার প্রদাহ, যা প্রাণঘাতী হতে পারে। এটিও ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ছড়ায়। হজে যাওয়ার আগে মেনিনজাইটিসের টিকা নেওয়া জরুরি। যেকোনো জ্বর, কাশি, জ্বরের সঙ্গে ঘাড় শক্ত হওয়া, শরীরে র‌্যাশ দেখা দিলে দ্রুত মেডিকেল ক্যাম্পের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রস্রাবে সংক্রমণ হলে জ্বরের সঙ্গে প্রস্রাবে জ্বালা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক লাগবে।

ডায়রিয়া

বাইরের খাবার খেতে হয় বলে বদহজম বা ডায়রিয়া হতে পারে। এমন হলে মুখে খাওয়ার স্যালাইন খাবেন, বমি থাকলে শিরায় স্যালাইন নিতে হবে। ডায়রিয়া বা বমি হলে কী ওষুধ খাবেন, তা জেনে নিয়ে সঙ্গে বহন করুন। বাসি–পচা খাবার খাবেন না।

হজযাত্রীদের বড় অংশই বয়স্ক। হজে গিয়ে যেন তাঁরা সুস্থ থাকতে পারেন, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।

পানিশূন্যতা

সৌদি আরবে অনেক গরম, তাই পানিশূন্যতা হতে পারে যে কারও। প্রচুর পানি পান করতে হবে। যদি মাথা ব্যথা করে, চোখ বসে যায় ও প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়, তবে বুঝবেন ডিহাইড্রেশন হচ্ছে। পানির সঙ্গে অন্যান্য তরলও পান করবেন। অনেকে টয়লেটে যাওয়ার ভয়ে পানি কম খান, যা একেবারেই ঠিক নয়। হিট স্ট্রোক এড়াতে ছাতা বা হ্যাট ব্যবহার করবেন। ঢিলেঢালা কাপড় পরবেন।

দীর্ঘমেয়াদি রোগে সতর্কতা

যাঁদের হাঁপানি আছে, তাঁরা যথেষ্ট ইনহেলার ও ওষুধ সঙ্গে নেবেন। ডায়াবেটিসের রোগীরা থার্মোফ্লাস্কে ইনসুলিন নিতে পারেন। গ্লুকোমিটারে মাঝেমধ্যে রক্তে শর্করা পরীক্ষা করবেন ও সে অনুযায়ী মাত্রা ঠিক করবেন। সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করতে চেষ্টা করবেন। উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা রক্তচাপ মাপার যন্ত্র নিতে পারেন। অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার খেলে রক্তচাপ বাড়তে পারে।

পায়ের যত্ন

অনেক হাঁটতে হয় বলে পায়ে আঘাত, ঘা হতে পারে। সঠিক মাপের আরামদায়ক জুতা পরতে হবে। একাধিক জুতা সঙ্গে নেওয়া ভালো। খালি পায়ে হাঁটার জায়গায় মোজা পরে নেওয়া উচিত। বারবার অজু করার পর পায়ের আঙুলের ফাঁকগুলো মুছে নেবেন। পায়ে কোনো ক্ষত হলে অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগান বা ড্রেসিং করে নিন।

অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ, ইমেরিটাস অধ্যাপক, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ

সম্পর্কিত নিবন্ধ