তামিল-মালায়ালাম সিনেমার জনপ্রিয় খলনায়ক বিনায়কনকে গ্রেপ্তার করেছে কেরালা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৮ মে) মদ্যপ অবস্থায় কেরালার কোলাম হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এই অভিনেতাকে।
পিটিআই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অভিনেতা বিনায়কন তার পরবর্তী সিনেমার শুটিংয়ের জন্য গত ২ মে থেকে হোটেলে ছিলেন। গতকাল মদ্যপ অবস্থায় হট্টগোল শুরু করেন। পরে হোটেল কর্তৃপক্ষ আঞ্চালুমুড়ু থানায় ফোন করেন।
আঞ্চালুমুড়ু থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “তিনি অতিরিক্ত মদ্যপান করেছিলেন। এরপর হোটেলের সবার সঙ্গে চিৎকার করতে থাকেন। এমনকি পুলিশ যাওয়ার পর তাদের সঙ্গেও চিৎকার করছিলেন।”
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানে ভারতের হামলা: তারকারা কী বলছেন?
বাবা-মা হতে যাচ্ছেন তারকা দম্পতি
পুলিশ বিনায়কনকে আঞ্চালুম্মুডু থানায় নেওয়ার আগে তাকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়। কেরালা পুলিশ আইনের ১১৮(ক) ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। যদিও একজনের হেফাজতে অভিনেতাকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
অভিনেতা বিনায়কন হোটেলে কেমন আচরণ করেছেন, তার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এ ভিডিওতে তাকে ক্রমাগত কথা বলতে দেখা গেছে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়াতে দেখা যায়।
মদ্যপানজনিত আচরণের কারণে অভিনেতার আইনি ঝামেলা এই প্রথম নয়। অতীতেও একই রকম ঘটনা ঘটেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে, গোয়ার রাস্তায় হট্টগোল সৃষ্টি করেছিলেন। সেই ভিডিওতে এক দোকানদারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়াতে দেখা যায়।
অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক ব্যবসাসফল সিনেমায় অভিনয় করেছেন বিনায়কন। ‘জেলার’, ‘মার্কো’, ‘কালি’, ‘আড়ু টু’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করে নজর কাড়েন।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’