মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁর মুক্তির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে স্মারকলিপি দিয়েছেন আইনজীবী, অধিকারকর্মী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার ২৭ বিশিষ্ট নারী। গতকাল রোববার স্মারকলিপিটি ই-মেইলে পাঠানো হয়।

এতে মেঘনাকে যে প্রক্রিয়ায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাতে তাঁর মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, মেঘনা আলমকে গত ৯ এপ্রিল পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও ভাটারা থানার কর্মকর্তারা তাঁর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন ও আদালতের নির্দেশ অবমাননা করে আটক করেন। তাকে বাসা থেকে কোনো পরোয়ানা ছাড়াই আটক করা হয়। সে সময় মেঘনার ফেসবুক লাইভ থেকে বিষয়টি জেনে কয়েক নারী অধিকারকর্মী ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারেন, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার প্রায় ৩০ কর্মকর্তা মেঘনাকে আটকের জন্য এসেছেন। তাঁকে আদালতে তোলা হয় আটকের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি, কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করা এবং দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে অভিযুক্ত করে মেঘনাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় সরকারের কাছ থেকে স্পষ্ট ব্যাখ্যা এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেন এই নারীরা। স্মারকলিপিতে তাঁরা বলেন, এই ঘটনায় গুরুতর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। তাঁরা মেঘনা আলমের মুক্তি এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেছেন।

স্মারকলিপিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী ও অধিকারকর্মী ইশরাত জাহান, তাবাসসুম মেহেনাজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মীর্জা তাসলিমা সুলতানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, নৃবিজ্ঞানী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসরিন সিরাজ, সংগীতশিল্পী ও গীতিকার ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, আলোকচিত্রী পদ্মিনী চাকমা, লেখক ও গবেষক পারসা সানজানা প্রমুখ।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ম রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

টিউলিপের বিচারপ্রক্রিয়া ও অন্তর্বর্তী সরকারের অদূরদর্শিতা

বাংলাদেশের আদালতে গত সোমবার ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের দোষী সাব্যস্ত হওয়াটা যুক্তরাজ্যে একটি বড় খবর ছিল।

বেলা একটায় বিবিসি রেডিও ৪-এর প্রধান সংবাদ বুলেটিনে এটি দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ হিসেবে প্রচার করা হয়। অন্য গণমাধ্যমেও বিষয়টি বড় খবর হিসেবে উঠে আসে।

রায়ের ঠিক এক সপ্তাহ আগে আরেকটি খবর প্রকাশিত হয়েছিল। খবরটি ছিল লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে পাঠানো একটি চিঠি নিয়ে।

এ চিঠি টিউলিপ সিদ্দিকের নিয়োগ করা জ্যেষ্ঠ ব্রিটিশ আইনজীবীরা লিখেছিলেন। দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, চিঠিটিতে মূলত আইনি ‘ডিউ প্রসেস’ বা ন্যায্য বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

ডিউ প্রসেস বলতে কোনো মামলা যে আইনি কাঠামো ও নিয়মের মধ্যে পরিচালিত হয় এবং বিচার হয়, সেই প্রক্রিয়াকে বোঝায়।

এটি মামলার মূল যুক্তি বা প্রমাণের বিষয় নয়; বরং কোন নিয়মে সেই বিচার হচ্ছে, সেটিই এর প্রধান বিষয়।

যথাযথ আইনজীবীর সহায়তা পাওয়া বা না–পাওয়া, এটিও ডিউ প্রসেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

আরও পড়ুনটিউলিপ যেভাবে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনলেন১৬ জানুয়ারি ২০২৫

বাংলাদেশে অনেক বিশ্লেষক ও মন্তব্যকারী টিউলিপ সিদ্দিক আদৌ ন্যায্য বিচারপ্রক্রিয়া পেয়েছেন কি না, তা নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু এখানে আমি সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি না।

আদালতে কে কী যুক্তি দিয়েছেন বা কোন পক্ষের যুক্তি কতটা শক্ত, সেটিও আমি বিবেচনায় আনছি না। তার বদলে আমি এমন একটি দিকের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি, যেটি খুব কম আলোচিত হয়েছে।

সেটি হলো যুক্তরাজ্যের জনপরিসর ও গণমাধ্যমে আলোচিত এ বিষয়কে বাংলাদেশ সরকার যেভাবে সামলেছে, তাকে আসলে গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনার বড় বিপর্যয় বলা যেতে পারে।

এ ছাড়া পুরো ঘটনার সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘমেয়াদি গুরুত্ব কী হতে পারে, সেটিও আমি বিবেচনা করছি।

বাংলাদেশের বাইরে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যসহ বিদেশে থাকা যেকোনো ব্যক্তির কাছ থেকে সম্পদ উদ্ধার করার যে প্রচেষ্টা বাংলাদেশ করছে, এ ঘটনা সেই প্রচেষ্টার ওপর কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, সেটিও আমি বিবেচনা করছি।

সোমবার ব্রিটিশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলো পর্যালোচনা করে স্পষ্টভাবে বোঝা গেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে কোনো শক্ত পাল্টা বর্ণনা বা ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

এর ফলে টিউলিপ সিদ্দিক ও তাঁর জনসংযোগ বা মিডিয়া টিমের জন্য মাঠটা পুরো খালি হয়ে যায়। অন্তর্বর্তী সরকার আদৌ কোনো পাল্টা বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করেছিল কি না, সেটিও স্পষ্ট নয়।

দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপের আইনজীবীদের চিঠিটিতে মূলত আইনি ‘ডিউ প্রসেস’ বা ন্যায্য বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রিমান্ডে
  • নির্বাচনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ
  • ট্রাইব্যুনালে ক্ষমা চেয়ে ফজলুর রহমান বললেন, ‘স্লিপ অব টাং হয়ে যেতে পারে’
  • রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে আমার নামে মামলা হয়েছে: শিশির মনির
  • পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরোটাই বাতিল হওয়া উচিত: আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া
  • বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে প্রথম জাতীয় আইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে শিশির মনিরের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন, তদন্তে ডিবি
  • টিউলিপের বিচারপ্রক্রিয়া ও অন্তর্বর্তী সরকারের অদূরদর্শিতা
  • রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ জনকে শোকজ
  • রাজশাহীতে সারজিস আলমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা