মেহেরপুরে মাদকাসক্ত জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে চাচা শ্বশুর নিহত
Published: 8th, May 2025 GMT
মেহেরপুরের গাংনীতে ইলিয়াস হোসেন (৪৪) নামে এক ব্যাক্তি ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি সম্পর্কে ছুরিকাঘাতকারীর চাচা শ্বশুর।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভোরে গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের স্কুল পাড়ায় এ ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে।
নিহত ইলিয়াস হোসেন গাড়াবাড়িয়া স্কুল পাড়ার মৃত লেকসার আলীর ছেলে। ছুরিকাঘাতকারী জামাই সবুজ একই উপজেলার ষোলটাকা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ময়নাল আলীর ছেলে।
নিহত ইলিয়াসের ভাই ইমদাদুল হক বলেন, “জামাই সবুজ ভোর রাতে বাড়িতে এসে শ্যালক আব্দুল্লাহ ও স্ত্রী সালমা খাতুনের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। ইলিয়াস পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে সবুজ তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ছুরিকাঘাত করে। পেটে ছুরিকাঘাত করলে ভুড়ি বের হয়ে যায়। আহতবস্থায় পরিবারের সদস্যরা মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।”
সবুজের শ্যালক আব্দুল্লাহ বলেন, “বোন জামাই মাদকাসক্ত, টাকা চেয়ে অত্যাচার নির্যাতন করে আমার বোনকে তিন দিন আগে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে বোন আমাদের বাড়ি চলে এসেছে। বোনকে নিয়ে যাবার অজুহতে গত রাতে আমাদের বাড়ি আসে সবুজ। সকালে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কোমরে থাকা ছুরি দিয়ে আমার চাচাকে কুপিয়েছে সবুজ। আমি ঠেকাতে গেলে আমাকেও আঘাত করেছে। আমি সবুজের ফাঁসি চাই।”
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল বলেন, “খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘাতক সবুজকে পরিবার ও স্থানীয়রা আটক করে একটি ঘরের মধ্যে আটকিয়ে রাখে, পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/ফারুক/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় শতাধিক ‘জঙ্গি’কে হত্যা করা হয়েছে: সর্বদলীয় বৈঠকে রাজনাথের দাবি
পাকিস্তানে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ সামরিক অভিযানে শতাধিক জঙ্গি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দিল্লিতে ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে রাজনাথ সিং এই দাবি করেন।
রাজনাথ সিং বলেন, অভিযান এখনো শেষ হয়নি। তবে ভারত আর কোনো হামলা চালাতে চায় না। কিন্তু পাকিস্তান পাল্টা হামলা চালালে তার উপযুক্ত জবাব দিতে ভারত প্রস্তুত।
ভারতের দাবি অনুযায়ী, পাকিস্তানের কোন কোন স্থানে সন্ত্রাসী ঘাঁটি নষ্ট করা হয়েছে—বৈঠকে বিরোধী নেতাদের বিস্তারিতভাবে তা জানানো হয়।
বৈঠকের পর অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে যা জানানো হয়েছে, তা আমরা শুনেছি। গোপনীয়তার স্বার্থে কিছু তথ্য সরকার জানাতে চায়নি। এই সন্ধিক্ষণে আমরা সরকারের সঙ্গে আছি।’
সরকারি সূত্রের বরাতে বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক বার্তা পাঠ করা হয়। তাতে তিনি এই কঠিন পরিস্থিতিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলার পর প্রধানমন্ত্রী সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন। কিন্তু নিজে সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠকের দিন চলে যান বিহার। সেই থেকে বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পরদিনই সরকার সর্বদল বৈঠক ডাকে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ডাকা সেই বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী মোদি উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন রাজনাথ সিং। তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু প্রমুখ।
বিরোধী নেতাদের মধ্যে বৈঠকে ছিলেন কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী, তৃণমূল কংগ্রেসের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিএমকের টি আর বালু, আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিং, উদ্ধব সেনার সঞ্জয় রাউত, এনসিপির সুপ্রিয়া সুলেরা।
সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, বিরোধী নেতারা সবাই পরিণতবোধের পরিচয় দিয়েছেন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সবাই মোটামুটিভাবে রাজনৈতিক দিক থেকে ঐক্যবদ্ধ।
বৈঠক শেষে খাড়গে অবশ্য দ্বিতীয়বারেও প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের তিনি বলেন, ‘প্রথম বৈঠকের মতো দ্বিতীয় বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন না। উনি নিজেকে সংসদের চেয়েও বড় মনে করেন। এ বিষয়ে তাঁকে পরে আমরা প্রশ্ন করব। এখন এই সংকটকালে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করব না।’
সন্ত্রাসবাদীদের প্রত্যাঘাতের পর দেশের উত্তর ও পশ্চিম প্রান্তের সীমান্তবর্তী বিমানবন্দরগুলোয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী শনিবার পর্যন্ত দেশের ২৭টি বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে।
এ কারণে বিমান চলাচলেও নানা ধরনের অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ৪৩০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়। পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী, এয়ার ইন্ডিয়া, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস, ইন্ডিগো, স্পাইসজেট, আকাশ এয়ারসহ বেসামরিক বিমান সংস্থাগুলোর প্রত্যেককেই বহু ফ্লাইট বাতিল করতে হচ্ছে।
উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিমানবন্দরগুলো বন্ধ রাখার ফলে দিল্লি বিমানবন্দরের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ফ্লাইটরাডার-এর তথ্য অনুযায়ী, জম্মু-কাশ্মীর থেকে গুজরাট পর্যন্ত আকাশসীমা প্রায় বন্ধই বলা যায়।