ইতালিতে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দুই বাংলাদেশি আটক
Published: 11th, May 2025 GMT
ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর পালেরমোতে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দুই বাংলাদেশি যুবককে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। আদালতের নির্দেশে তাদের গৃহবন্দি রাখা হয়েছে এবং শরীরে ইলেকট্রনিক জিপিএস ট্র্যাকার পরানো হয়েছে। খবর ইতালির বার্তা সংস্থা এএনএসএ।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানা গেছে, আটককৃত দুই যুবকের নাম হিমেল আহমেদ (২১) ও মুন্না তফাদার (১৮)। তবে ইতালির আইন অনুযায়ী আদালতের আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জিহাদের ডাক দেওয়ার অভিযোগে গত শুক্রবার তাদের আটক করা হয়। ইতালির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পরিবহনমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি শনিবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, এই দেশে কোনো সন্ত্রাসীর জায়গা নেই। যত দ্রুত সম্ভব আদালতের আদেশ অনুযায়ী তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
তদন্ত কর্মকর্তাদের দাবি, হিমেল ও মুন্নার টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে গত মার্চ ও এপ্রিলে ধারাবাহিকভাবে ধর্মীয় উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধকারী, পশ্চিমবিরোধী ও জিহাদ-সম্পৃক্ত ভিডিও প্রকাশ করা হয়। এসব ভিডিওতে ফিলিস্তিনের গাজা সংকট নিয়ে একপাক্ষীয় ও জিহাদি মতাদর্শ প্রচারের অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টে ওসামা বিন লাদেনের ছবি ও প্রচারণামূলক উপাদান পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে তারা কীভাবে সন্ত্রাসী হামলা চালানো যায়, তা নিয়েও অনুসন্ধান চালিয়েছিল বলে ধারণা করছে তদন্তকারী দল। বিষয়টি নিয়ে এখনও তদন্ত চলমান রয়েছে এবং প্রয়োজন হলে আরও ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আটক ব ল দ শ
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, আহত ৫
নোয়াখালীতে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা তারেকেশ্বর দেবনাথ ওরফে নান্টুসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
গত ৩০ এপ্রিল শহরের টাউন হল মোড় এলাকার সমবায় বিপণিকেন্দ্রের নিচতলায় সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা কার্যালয়ে তালা দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল দলটি। ওই কর্মসূচি পালন করতে যাওয়ার পথে হামলার ঘটনা ঘটে বলে দলের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন।
সাম্যবাদী আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঘটনার জন্য জেলা বিএনপির সদস্য আবদুল মোতালেব ওরফে আপেলের লোকজনকে দায়ী করা হয়েছে। তবে আবদুল মোতালেব এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। আজ দুপুরে নোয়াখালী প্রেসক্লাবে নোয়াখালী সমবায় ব্যাংকের সদস্যদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাম্যবাদী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলায় তাঁর কোনো লোক জড়িত নন বলে আবদুল মোতালেব দাবি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁরা জেলা শিল্পকলা একাডেমির দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের সড়ক অতিক্রম করার সময় ১০-১২ জন তরুণ অতর্কিতে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালান। হামলায় সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন।
সেখানে উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হামলাকারীদের হামলা ও ধাওয়ার শিকার হয়ে সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বরত বেসরকারি একাধিক টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান দৌড়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলায় আশ্রয় নেন। তখন হামলাকারীরা সেখানে গিয়েও হামলার চেষ্টা চালান। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনবাহিনীর সদস্যরা সেখানে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
হামলার শিকার মুক্তিযোদ্ধা তারেকেশ্বর দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আবদুল মোতালেবের লোকজন গত ৩০ এপ্রিল তাঁদের দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে মানববন্ধন করার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাওয়ার পথে অতর্কিতে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় তিনিসহ দলের পাঁচজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা আবদুল মোতালেব প্রথম আলোকে বলেন, তারেকেশ্বর দেবনাথের সঙ্গে কিংবা তাঁদের সংগঠনের সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ নেই। তাঁরা যে কক্ষে দলের কার্যালয় করেছেন, সেটি সমবায় ব্যাংকের। কক্ষের ভাড়া না পেয়ে ব্যাংকের লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এর সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ গিয়ে হামলাকারীদের কাউকে পায়নি। পরে হামলার শিকার মুক্তিযোদ্ধা তারেকেশ্বর দেবনাথসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা থানায় এসে তাঁকে ঘটনা জানিয়ে গেছেন। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ দেননি।