কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেট এলাকা থেকে ৪০টি দেশীয় শালিক পাখি উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন (বিবিসিএফ) কুষ্টিয়া টিম।
রবিবার (১১ মে) সন্ধ্যার পরে মজমপুর গেট সংলগ্ন মজমপুর জামে মসজিদের সামনে থেকে এই পাখিগুলো উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, তারেক নামে একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক তার অটোতে করে শ্যামলী পরিবহনের বাসে তুলে দেওয়ার জন্য পাখিগুলো নিয়ে আসেন।
অটোচালক তারেক জানান, চঞ্চল নামে ভেড়ামারা উপজেলার নয়মাইল কাচারি এলাকার একজন পাখি ব্যবসায়ী ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে শালিকগুলো পাঠিয়েছেন এবং শ্যামলী পরিবহনের বাসে তুলে দিতে বলেছেন।
এ সময় স্থানীয় পাভেল রহমান নামে একজন ব্যবসায়ী বিবিসিএফ কুষ্টিয়া টিমকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাখিগুলোকে উদ্ধার করে। পরে বন বিভাগ এর সদস্যরা এসে ৪০টি শালিকসহ অটোচালককে আটক করে বন বিভাগের অফিসে নিয়ে যায়। এরপর মুচলেকা নিয়ে চালককে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পাখিগুলোকে আজ (সোমবার) দিনের বেলায় অবমুক্ত করার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের (বিবিসিএফ) সহ-সভাপতি শাহাব উদ্দিন মিলন, কুষ্টিয়া টিমের সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক নাব্বির আল নাফিজ, দপ্তর সম্পাদক মীর কুশল, বন বিভাগ কুষ্টিয়ার মিলন ও সোনা সাত্তার উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ এলাকায় বন বিভাগ ও বিবিসিএফ এর যৌথ অভিযান চালিয়ে খাঁচাবন্দি ১৪টি দেশি পাখি উদ্ধার করেছে বন বিভাগ এবং বিবিসিএফ কুষ্টিয়া টিমের সদস্যরা । পাখিগুলোর মধ্যে ছিল- ১টি ঝুঁটি শালিক, ২টি দেশি টিয়া, ৬টি চন্দনা টিয়ার বাচ্চা, ৫টি দেশি ময়না।
ঢাকা/কাঞ্চন/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ব স এফ বন ব ভ গ
এছাড়াও পড়ুন:
সংসার সুখের হয় শাশুড়ির গুণে, কিন্তু কীভাবে
লিখতে বসার আগে ফেসবুকে একটা পোস্টে চোখ আটকে গেল। যৌথ পরিবারে তিন মাস হয় বিয়ে হওয়া এক বান্ধবী লিখেছে, ‘ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, পুত্রবধূ ও নিজের ছেলের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারেন মা। অথচ অনেকে কেবল উল্টোটাই করেন।’
এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি কীভাবে সংসারের বিভিন্ন রকম মানুষ সামলান? উত্তরে বলেছিলেন, ‘আমি সে চেষ্টাই করি না। এ জন্যই বোধ হয় সব ঠিক আছে।’
এখানে উল্লেখ্য, শর্মিলা ঠাকুরের ছেলে বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খান এবং তাঁর পুত্রবধূ আরেক বলিউড তারকা কারিনা কাপুর খান। ওই সাক্ষাৎকারে শর্মিলা আরও বলেন, ‘আমি কারও কাছ থেকে উচ্চাশা রাখি না। ওরা সবাই বড় হয়েছে। ওদের জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেচনা আছে, নিজেদের ব্যক্তিগত জায়গা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে একটু সংবেদনশীল থাকতে হবে। আমি কেবল নিজের দায়িত্বটুকু ভালোভাবে পালন করি।’
যুক্তরাষ্ট্রের সুজু মিগেল প্যারেন্টিং বিশেষজ্ঞ। তিনি ‘এম্পটি নেস্ট ব্লেসড’ নামে সন্তান পালনবিষয়ক একটি অনলাইন পোর্টালে লেখালেখিও করেন। তিনি দুই পুত্র ও এক কন্যার মা। তাঁর ছেলেরা বিবাহিত। ‘হাউ টু বি আ গুড মাদার ইন ল’ নামে একটি বই লিখেছেন সুজু। তিনি বলেন, ‘ভালো শাশুড়ি হওয়ার কোনো আইন, নিয়মকানুন আমি পাইনি। তবে আমার শাশুড়িকে দেখে শিখেছি। আর এখন দুই পুত্রবধূর শাশুড়ি হওয়ার পর প্রতিনিয়ত হাতে–কলমে শিখছি। নিজে ভালো শাশুড়ি হওয়ার কোনো বই পাইনি। তাই নিজের অভিজ্ঞতাই লিখে ফেলেছি। অন্যের যদি কিছুটা হলেও কাজে লাগে…।’
সুজু মিগেল আরও বলেন, ‘ভালো শাশুড়ি হওয়ার জন্য একবাক্যে বলতে গেলে নিজের জীবনে, নিজের কাজে মনোযোগী হওয়া, প্রত্যাশা না রাখা, পরিবারের নতুন সদস্যকে সর্বোচ্চ ইতিবাচকতার সঙ্গে গ্রহণ করা, সহানুভূতিশীল হওয়া, ক্ষমা করা আর উপহার দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।’
আরও পড়ুনবউ–শাশুড়ির সম্পর্ক ভালো করার ৯টি উপায়২২ জানুয়ারি ২০২৪‘হাউ টু বি দ্য বেস্ট মাদার ইন ল ইউ ক্যান বি’ শিরোনামে তিনি যে লেখাটি লিখেছেন, সেখান থেকে ভালো শাশুড়ি হওয়ার কয়েকটি নিয়ম থাকল মিগেলের বিবৃতিতে।
১. যেদিন আপনার ছেলে বা মেয়ের বিয়ে হলো, মনে রাখবেন, সেদিন থেকে আপনি আর তার জীবনের প্রধান ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নন। দুটি মানুষ নতুন জীবন শুরু করতে চলেছে। এখন তারা একজন আরেকজনের প্রথম অগ্রাধিকার। এত দিন ছেলে বা মেয়ের জীবনে আপনার যে ভূমিকা ছিল, সেখান থেকে আপনি অবসর নিন। এক ধাপ পিছিয়ে আসুন। ওদেরকে শুভকামনা জানান, ওদের মতো করে ছেড়ে দিন। নিজের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ভালো শাশুড়ি হওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোন।
২. ছেলে বা মেয়ের সংসার এখন তাদের প্রথম অগ্রাধিকার। তাদেরকে নিজেদের দায়িত্ব বুঝে নিতে দিন। সময়টাকে উপভোগ করতে দিন। নিজেদের বোঝাপড়ার পূর্ণ সুযোগ দিন। তাদের উপার্জিত অর্থ তারা কী করবে বা কোন খাতে খরচ করবে, সেটা একান্তই তাদের ব্যাপার। কবে তারা সন্তান নেবে বা আদৌ নেবে কি না, সে সিদ্ধান্ত একান্তই তাদের। এককথায়, অন্যের সংসারে নাক গলাতে যাবেন না। সেটা আপনার ছেলে বা মেয়ে হলেও না! কেননা ‘ব্যক্তিগত স্পেস’কে সম্মান করতেই হবে। নয়তো জটিলতা তৈরি হবেই।
৩. পুত্রবধূ আর আপনার মধ্যে যতই অমিল থাকুক, মনে রাখবেন, আপনাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মিল হচ্ছে আপনারা দুজনেই একই মানুষকে ভালোবাসেন। আমি যেমন আমার ছেলেকে ভালোবাসি, সে-ও তার জীবনসঙ্গীকে ভালোবাসে। পরিবারের গুরুজন হিসেবে, ছেলে বা মেয়ের মা হিসেবে মেয়েজামাই বা পুত্রবধূকে আপন করে নেওয়ার দায়িত্ব শাশুড়ি হিসেবে একান্তই আমার।
৪. আপনি যেটাতে মনোযোগ দেবেন, সেটাই বেড়ে উঠবে। আপনি যদি আপনার পুত্রবধূর ভুলগুলোতে মনোযোগী হন, সেসব নিয়েই কথা বলেন, ভুল বাড়বে। আপনার চোখে কেবল ভুলই ধরা পড়বে। বরং তার ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে কথা বলুন। প্রশংসা করুন। দৃশ্যপট ইতিবাচকভাবে বদলে যাবে জাদুর মতোই।
আরও পড়ুনবউয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে শাশুড়ি ও ননদের কী করা উচিত১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪৫. পুত্রবধূর সঙ্গে ভালো সময় কাটান। নিজেরা একই ধরনের পোশাক কিনতে পারেন। সেটি পরে কারও জন্মদিন উদ্যাপন করতে পারেন বা বাইরে কোথাও খেতে যেতে পারেন।
৬. মনে রাখবেন, আপনি আপনার পুত্র, কন্যা, পুত্রবধূ, মেয়েজামাই কাউকে যদি ‘প্যারা দেন’, সেটা ‘সুদে–আসলে’ আরও বড় হয়ে আপনার কাছেই ফিরে আসবে। ধরুন, আপনি পুত্রবধূর সম্পর্কে নেতিবাচক কোনো কথা বললেন আপনার ছেলের কাছে। ফলে আপনি কেবল ছেলে আর বউয়ের মধ্যেই ঝামেলা বাধালেন না, পাশাপাশি আপনার সঙ্গে ছেলে ও পুত্রবধূর সম্পর্কেও তৈরি হলো জটিলতা। তাই কোনো নেতিবাচক মন্তব্য নয়!
৭. সব সংসারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কমবেশি ঝামেলা হয়ই। যখন তাদের কেউ একজন আপনার কাছে এ রকম সময় সাহায্য চাইতে আসে, সব কথা না শুনে আগেই উপদেশ বা পরামর্শ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। নিরপেক্ষভাবে সমাধানের উদ্দেশ্যে কথা বলুন।
৮. ভালো শাশুড়ি যে আপনাকে হতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। আপনার কারণে সন্তানের সংসারে যাতে কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি না হয়, কেবল সেটুকু নিশ্চিত করুন। তাতেই আপনি দিব্যি পাস করে গেলেন!
সূত্র: এম্পটি নেস্ট ব্লেসড
আরও পড়ুনভালো শাশুড়ি হবেন কীভাবে০৯ আগস্ট ২০২৩