ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে দুই শিশু বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। আজ বুধবার সকালে বাসার অদূরে একটি পুকুরে তাদের লাশ ভাসতে দেখেন পথচারীরা। খবর পেয়ে স্বজনেরা শিশু দুটিকে শনাক্ত করেন। পরে আশুলিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করে।

লাশ উদ্ধার হওয়া দুই শিশুর নাম লিমন হোসেন (১০) ও মানিক হোসেন (৮)। লিমন পাবনার আমিনপুর থানার রতন মিয়ার ছেলে এবং মানিক জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার জিয়াউল হোসেনের ছেলে। তারা আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ত।

দুই শিশুর পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল দুপুরে মাদ্রাসা থেকে বাসায় ফেরে লিমন হোসেন ও মানিক হোসেন। দুপুরের পর বিভিন্ন সময়ে তারা বাসা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা ও আড্ডা দিতে বের হয়। রাতে বের হয়ে রাত নয়টার পর বাসায় না ফেরায় তাদের খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ ভোরে পথচারীরা আশুলিয়ার বাইপাইলের শান্তিনগর এলাকায় একটি পুকুরে তাদের লাশ ভাসতে দেখেন। খবর পেয়ে স্বজনেরা সেখানে গিয়ে লাশ দুটি শনাক্ত করেন। পরে আশুলিয়া থানার পুলিশকে জানালে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে তারা।

লিমনের চাচা মো.

নাজমুল হুদা বলেন, লিমন ও মানিক একই মাদ্রাসায় পড়ত। বাসায় এসে দুজনে একসঙ্গেই খেলাধুলা করত। গতকাল দুপুরে মাদ্রাসা থেকে বাসায় এসে খাওয়াদাওয়া করে। রাত নয়টার দিকে লিমনের খালা লিমনকে মগ হাতে বাসার সামনে দেখতে পান। কেউ একজন তাকে চা আনতে পাঠিয়েছিল। এর পর থেকে লিমনকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ সকালে জানতে পারেন, পুকুরে লিমন ও মানিকের লাশ পাওয়া গেছে।

মানিকের চাচাতো বোন জেমি আক্তার বলেন, রাত নয়টার পর থেকে মানিককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে পুলিশকে বিষয়টি জানানোর জন্য বাসা থেকে বের হলে এক ব্যক্তি জানান, জামগড়া থেকে বাইপাইল সড়কে দুই শিশুকে খেলতে দেখেছেন তিনি। পরে মানিকের স্বজনেরা সেখানে গিয়ে কাউকে না পেয়ে বাসায় ফিরে আসেন।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন বলেন, স্থানীয় মানুষের থেকে খবর পেয়ে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তে জন্য লাশ দুটি রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত শিশু দুটির পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পর ব

এছাড়াও পড়ুন:

প্রবাসীদের চাঁদার হার কমছে, বাড়বে বেসরকারি চাকরিজীবীদের চাঁদা

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে প্রবাসীদের চাঁদার হার কমবে এবং বেসরকারি চাকরিজীবীদের চাঁদার হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বুধবার (১৪ মে) সচিবালয়ে জাতীয় পেনশন পর্ষদের চেয়ারম্যান ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন  আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

পেনশন স্কিমকে গতিশীল করতে কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। প্রবাসীদের জন্য চালু করা প্রবাস স্কিমের সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার হার ২ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১ হাজার টাকা করা হবে। সেই সঙ্গে বেসরকারি চাকরিজীবীদের মাসিক সর্বোচ্চ জমার পরিমাণ ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করা হবে।

আরো পড়ুন:

সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টা
দুটি নোবেল পাওয়ার জন্য চবি গর্ববোধ করতে পারে

১৭ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক
জাতীয় স্বার্থের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না: বিডা চেয়ারম্যান

পাশাপাশি একজন চাঁদাদাতা পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হওয়ার পর আগ্রহী হলে তাকে তার মোট জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন আর্থিক সুবিধা হিসেবে দেওয়ার সুযোগ রাখা হবে।

সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে-
(১) একজন চাঁদাদাতা পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হওয়ার পর আগ্রহী হলে তাকে তার মোট জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন আর্থিক সুবিধা হিসেবে দেওয়ার সুযোগ রাখা হবে।
(২) প্রবাস এবং প্রগতি পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী অনেকের মাসিক আয় তুলনামূলকভাবে অনেক কম হওয়ায় এ দুটি স্কিমে সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার হার দুই হাজার টাকার পরিবর্তে এক টাকা করার সিদ্ধান্ত হয় এবং প্রগতি পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একটি অংশের মাসিক আয় বেসরকারি খাতের কর্মকর্তাদের গড় মাসিক আয়ের তুলনায় বেশি হওয়ায় তাদের সুবিধার্থে মাসিক সর্বোচ্চ জমার পরিমাণ ১০ হাজার টাকার পরিবর্তে ১৫ হাজার টাকায় উন্নীত করা হবে।
(৩) আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা চুক্তির আওতায় নিয়োজিত সেবাকর্মীদের প্রগতি পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্তকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

(৪) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশনের (আইএসএসএ) সদস্যপদ গ্রহণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে করবে।
(৫) পেনশন স্কিমে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য গৃহীত প্রচার কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়া (ফেসবুক) এবং ইউটিউবে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে। পাশাপাশি টেলিভিশনের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান, টকশো ও আন্তর্জাতিক ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচারকালে বিজ্ঞাপন প্রচার ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের চলমান প্রচার কার্যক্রম জোরদার করা হবে।
(৬) সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ইসলামিক ভার্সন চালুর বিষয়টি পরীক্ষা করে পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ