মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার উপজেলার ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন খালে জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে প্রায় শতাধিক গরু। একের পর এক ভেসে উঠছে মরা গরু। বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক। ভুক্তভোগীদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের পরিবেশ।

খবর নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে হোসেন্দী ইউনিয়নের ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন খালে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার মত আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগী কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, কৃষক মহসিনের ৪টি, নাহিদের ৩টি, ইয়ানূরের ৩টি, এমার ২টি, মাসুমের ১টি, আবুল হোসেনের ৩টি, শাহজালালের ৩টি, কবির হোসেন খানের ৩টি, শরিফ শরিফ হোসেনের ৩টি, তরিকুল ইসলামের ২টি সহ শতাধিক গরু পানির তোড়ে ভেসে যায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল খান বলেন, আজকের দিনটি আমাদের গ্রামবাসীর জন্য একটি দুঃখের দিন হয়ে থাকবে। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। সবারই গরু রয়েছে। ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন চরে খাস খাইয়ে গরুগুলো লালন-পালন করে সবাই। গ্রাম এবং চরের মধ্যে ছোট একটি খাল রয়েছে। খাল পাড়ি দিয়ে চরে গিয়ে ঘাস খেয়ে প্রতিদিন বিকালে গরুগুলো আবার গোয়ালে ফিরে আসে। শুক্রবার বিকালে খাল পাড় হবার সময় হঠাৎ জোয়ারের পানির তোড়ে এবং কচুরিপানার চাপে শতাধিক গরু ভেসে যায়। এর মধ্যে বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ৪১টি মৃত গরু উদ্ধার করা হলেও এখনো পর্যন্ত প্রায় ৬০টির মত গরু নিখোঁজ। লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকরা পাগল প্রায়।

ভুক্তভোগী কৃষক মহসিন বলেন, এমন ঘটনা জীবনেও ঘটে নাই। এমন কিছু ঘটতে পারে তা আমরা চিন্তাও করি নাই। আমার ৪টি গরু পানির তোড়ে ভেসে গেছে। আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি, পথের ফকির হয়ে গেছি।

ভুক্তভোগী আবু তালেব সুজন খান বলেন, ভাটি বলাকী গ্রামের ২৫-৩০টি পরিবারের পাঁচ শতাধিক গরু আছে। গরুগুলো গ্রামের পার্শ্ববর্তী চরে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে ঘাস খেয়ে চর থেকে গ্রামের দিকে ফেরার পথে তীব্র স্রোতে শতাধিক গরু পানির সাথে ভেসে যায়। এখনো পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত গরুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নেয়ামূল হক বলেন, দেখলাম কচুরিপানার চাপে ও জোয়ারের পানির তোড়ে একের পর এক গরু ভেসে যাচ্ছে। এরকম অদ্ভুত ঘটনা কখনো দেখিনি আমরা।

বিষয়টি সম্পর্কে হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, এ রকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.

ফয়সাল আরাফাত বিন ছিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে রয়েছি আমরা। আমাদের অবস্থান থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা তাদের সাহায্য করবো।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলমের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত আমরা ৩৬টি মরা গরু উদ্ধারের খবর পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা সহায়তা করব।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ২

যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের চুড়ামনকাটি এলাকায় শনিবার (২৪ মে) সকালে ঘটে যাওয়া মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দুজনে দাঁড়িয়েছে।

দুর্ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রিয়াল নামের এক যুবক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে ঘটনাস্থল থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর পুলিশ কনস্টেবল ফজলুল হককে মৃত ঘোষণা করা হয়।

নিহত রিয়াল ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের ইমান উদ্দিনের ছেলে। তিনি ছিলেন আহত মামুনের ভগ্নিপতি।

যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান জানান, পুলিশ সদস্য ফজলুল হক মোটরসাইকেলে ঝিনাইদহ যাচ্ছিলেন। ছাতিয়ানতলা এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা রিয়ালের মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে তিনজনই গুরুতর আহত হন।

ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে প্রথমে ফজলুল হকের মৃত্যু হয়। পরে রিয়ালও মারা যান। আহত মামুনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

ঢাকা/রিটন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ