মুন্সীগঞ্জে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেল শতাধিক গরু
Published: 24th, May 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার উপজেলার ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন খালে জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে প্রায় শতাধিক গরু। একের পর এক ভেসে উঠছে মরা গরু। বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক। ভুক্তভোগীদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে গ্রামের পরিবেশ।
খবর নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে হোসেন্দী ইউনিয়নের ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন খালে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার মত আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগী কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, কৃষক মহসিনের ৪টি, নাহিদের ৩টি, ইয়ানূরের ৩টি, এমার ২টি, মাসুমের ১টি, আবুল হোসেনের ৩টি, শাহজালালের ৩টি, কবির হোসেন খানের ৩টি, শরিফ শরিফ হোসেনের ৩টি, তরিকুল ইসলামের ২টি সহ শতাধিক গরু পানির তোড়ে ভেসে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল খান বলেন, আজকের দিনটি আমাদের গ্রামবাসীর জন্য একটি দুঃখের দিন হয়ে থাকবে। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। সবারই গরু রয়েছে। ভাটি বলাকী গ্রাম সংলগ্ন চরে খাস খাইয়ে গরুগুলো লালন-পালন করে সবাই। গ্রাম এবং চরের মধ্যে ছোট একটি খাল রয়েছে। খাল পাড়ি দিয়ে চরে গিয়ে ঘাস খেয়ে প্রতিদিন বিকালে গরুগুলো আবার গোয়ালে ফিরে আসে। শুক্রবার বিকালে খাল পাড় হবার সময় হঠাৎ জোয়ারের পানির তোড়ে এবং কচুরিপানার চাপে শতাধিক গরু ভেসে যায়। এর মধ্যে বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ৪১টি মৃত গরু উদ্ধার করা হলেও এখনো পর্যন্ত প্রায় ৬০টির মত গরু নিখোঁজ। লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষকরা পাগল প্রায়।
ভুক্তভোগী কৃষক মহসিন বলেন, এমন ঘটনা জীবনেও ঘটে নাই। এমন কিছু ঘটতে পারে তা আমরা চিন্তাও করি নাই। আমার ৪টি গরু পানির তোড়ে ভেসে গেছে। আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি, পথের ফকির হয়ে গেছি।
ভুক্তভোগী আবু তালেব সুজন খান বলেন, ভাটি বলাকী গ্রামের ২৫-৩০টি পরিবারের পাঁচ শতাধিক গরু আছে। গরুগুলো গ্রামের পার্শ্ববর্তী চরে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে ঘাস খেয়ে চর থেকে গ্রামের দিকে ফেরার পথে তীব্র স্রোতে শতাধিক গরু পানির সাথে ভেসে যায়। এখনো পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত গরুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নেয়ামূল হক বলেন, দেখলাম কচুরিপানার চাপে ও জোয়ারের পানির তোড়ে একের পর এক গরু ভেসে যাচ্ছে। এরকম অদ্ভুত ঘটনা কখনো দেখিনি আমরা।
বিষয়টি সম্পর্কে হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, এ রকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলমের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত আমরা ৩৬টি মরা গরু উদ্ধারের খবর পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা সহায়তা করব।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।
জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’
অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।
জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া