Samakal:
2025-09-17@22:33:46 GMT

মানবতার ‘জলধারা’ মিরসরাইয়ে

Published: 24th, May 2025 GMT

মানবতার ‘জলধারা’ মিরসরাইয়ে

এক কলস পানি ভর্তি করতে প্রায় ঘণ্টাখানেক নলকূপ চাপতে হতো মনোয়ারাদের। এখন মুহূর্তে পানিতে ভর্তি হচ্ছে কলস। মিরসরাইয়ে করেরহাট আজিজনগরে সৌরবিদ্যুৎচালিত একটি গভীর নলকূপ বসানোর সুফল পাচ্ছে ৪০টি পরিবার। আব্দুর রহিম মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সহযোগিতা ও অর্থায়নে এই নলকূপ বসানো হয়েছে।
জানা গেছে, আজিজনগর গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সুপেয় পানির অভাবে ভুগছিলেন। অগভীর নলকূপে পানি পাওয়া যেত না। এলাকার ৪০টি পরিবারের অন্তত ২০০ মানুষ মাটি খনন করে ৩০ ফুট গভীরে স্থাপন করা একটি নলকূপ থেকে পানি সংগ্রহ করতেন। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে নলকূপটির পানিও শুকিয়ে যেত, বর্ষাকালে নলকূপটি বৃষ্টির পানিতে ডুবে যেত। ফলে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিত। আব্দুর রহিম মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এলাকার সুপেয় পানির সংকট সমাধানে উদ্যোগ নেয়, আজিজনগর গ্রামে সৌরবিদ্যুৎচালিত একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে। 
গত সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, গভীর নলকূপের পাশে লোহার অ্যাঙ্গল দিয়ে বসানো হয়েছে ৫০০ লিটারের একটি পানির ট্যাঙ্ক। পাশে স্থাপন করা হয়েছে সৌরবিদ্যুতের সোলার। ট্যাঙ্কের পানি শেষ হলে দ্রুত স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবার পানি ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। এ সময় কথা হয় পানি নিতে আসা মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘তীব্র পানির সংকটে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। সারাটা বছর পানির জন্য কষ্ট করতে হতো। 

টানা কয়েক দিন গোসল করা হয়নি এমনও সময় গেছে। আজ সেই সমস্যা নেই, আমরা দারুণ খুশি।’ সাবিনা বেগম বলেন, ‘আমাদের গ্রামে বিদ্যুৎ নেই। উপজেলা প্রশাসন থেকে একটি গভীর নলকূপ বসানোর চেষ্টা করা হলেও বিদ্যুৎ না থাকায় বসানা যায়নি। পরে আব্দুর রহিম মেমোরিয়াল ট্রাস্ট আমাদের জন্য সৌরবিদ্যুৎ চালিত একটি গভীর নলকূপের বসিয়ে দিয়েছে। এ নলকূপ থেকে আমরা নিয়মিত পানি পাচ্ছি।’
আব্দুর রহিম মেমোরিয়াল ট্রাস্ট সুপার স্টার গ্রুপের একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। ওই ট্রাস্টের ‘জলধারা’ নামে একটি প্রকল্প রয়েছে। । মূলত ‘জলধারা’ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সুপেয় পানির সংকট নিরসনে কাজ করে ট্রাস্ট।
সুপার স্টার গ্রুপের কর্মকর্তা রবিউল হাসান বলেন, ‘‘আব্দুর রহিম মেমোরিয়াল ট্রাস্ট দেশের যে সকল স্থানে পানির তীব্র সংকট রয়েছে ‘জলধারা’ প্রকল্পের মাধ্যমে ওই সকল স্থানে গভীর নলকূপ বসিয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় আজিজনগর গ্রামে একটি সৌরবিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপ স্থাপন করে পানি সংকট নিরসন করা হয়েছে।’
আব্দুর রহিম মেমোরিয়াল ট্রাস্টের জলধারা প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘গণমাধ্যমে আজিজনগর গ্রামের সুপেয় পানি সংকটের বিষয়টি নজরে এলে সুপার স্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের উদ্যোগে প্রায় ৪ লাখ টাকা ব্যায়ে গভীর নলকূপটি স্থাপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গভীর নলকূপটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আমরা জলধারা প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলায় ১১৪টি গভীর নলকূপ স্থাপন করেছি। এটি শুধু পানি সরবরাহ নয়, এটি একটি মানবিক দায়বদ্ধতা।’
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স রব দ য ৎ প রকল প র

এছাড়াও পড়ুন:

হাওরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সাদা শাপলা

হাওরের বুক চিরে চলে গেছে পিচঢালা আঁকাবাঁকা রাস্তা। দুই ধারে থৈ থৈ স্বচ্ছ পানি। তাতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সবুজ গোল পাতার ওপর নয়নাভিরাম সাদা শাপলা। 

প্রকৃতিতে শরৎ এসেছে। তবে, হাওরে এখনো বর্ষার আমেজ। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে এখনো পানিতে টইটুম্বুর হাওর। পথে যেতে যেতে দেখা মেলে শিল্পীর আঁকা ছবির মতো দৃশ্য। 

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার রাজনগর-বালাগঞ্জ সড়কের পাশে কাউয়াদিঘি হাওরে পানির কমতি নেই। পানির ওপরে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে সাদা শাপলা। স্বচ্ছ জলে ভাসছে হংস-মিথুন। এ যেন অপরূপ ছবির ক্যানভাস, রূপসী বাংলার শাশ্বত চিত্র।  

এমন দৃশ্য দেখে হয়ত কেউ মনের অজান্তেই গুনগুনিয়ে  গাইছেন, ‘যখন তোর ঐ গায়ের ধারে/ঘুঘু ডাকা নিঝুম কোনো দুপুরে/ হংস-মিথুন ভেসে বেড়ায়/শাপলা ফোটা টলটলে ঐ পুকুরে’।  

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কাউয়াদিঘি হাওরের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। বিশেষ করে, সাদা শাপলা সবার মন কাড়ে। দূর-দূরান্ত মানুষ ছুটে আসেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

সম্প্রতি হাওরপাড়ে দেখা হয় বেড়াতে আসা ফাহিম ও সুমন নামের দুই কিশোরের সঙ্গে। তারা বলে, অবসর পেলে একটু প্রশান্তির জন্য কাউয়াদিঘি হাওরপাড়ে আসি। প্রকৃতির রূপ দেখে মন ভরে যায়। 

হাওর পাড়ের বাসিন্দা বেতাহুঞ্জা মৌজার গেদন মিয়া বলেন, এবার দেরিতে বৃষ্টি হওয়ায় শরৎকালেও বর্ষার ভাব আছে। হাওরের পেট ভরে আছে বর্ষার জলে। এখনো সাদা শাপলা (স্থানীয় নাম ভেট বা হালুক ) ভালোভাবে ফোটেনি। ভালোভাবে ফুটলে আরো সুন্দর লাগবে। 

হাওরের ভুরভুরি বিলের ধারে গেলে দেখা হয় প্রকৃতিপ্রেমী আবু বকরের সঙ্গে। তিনি বলেন, সাদা শাপলা হাওরের শোভা বাড়িয়েছে। স্বচ্ছ জলের মাঝে হংস-মিথুন ভেসে বেড়াচ্ছে। এ যেন কোনো শিল্পীর রঙ-তুলির আঁচড়। সাদা শাপলার জৌলুস প্রকৃতিকে আরো মনোহর করে তোলে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অভিদপ্তরের রাজনগর উপজেলা কার্যালয়ের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লা আল আমিন বলেন, শাপলা সপুষ্পক পরিবারের জলজ উদ্ভিদ। সাদা শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই ফুল আমাদের দেশের হাওর, বিল ও দিঘিতে বেশি ফোটে। 

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাওরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সাদা শাপলা