রাজবাড়ীর পদ্মার চরে ১৯ বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ
Published: 25th, May 2025 GMT
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার পদ্মার চরে ১৯টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে একদল মানুষ। শনিবার (২৪ মে) বিকেলে উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের চর শাহামীরপুর এলাকার পদ্মার চরে ঘটনাটি ঘটে।
রবিবার (২৫ মে) দুপুরে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পাংশা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হাসেম শেখ জানান, তারা গত ৪০ বছর ধরে পদ্মার চরে বসবাস করছেন। পাবনা জেলার লোকজন দাবি করছে, এই চর তাদের। শনিবার ১০০ মানুষ দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। এসময় তারা ভয়ে পাশের বনে লুকিয়ে ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ডিআরইউতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা মামলায় স্ত্রীসহ জাকির কারাগারে
ডিআরইউতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, স্ত্রীসহ সন্ত্রাসী জাকির গ্রেপ্তার
তিনি বলেন, “আমার একটা পাওয়ার টিলার, একটা সেলো মেশিন, ৪০ মণ ধান ও নগদ এক লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে তারা।”
আমজাদ খান বলেন, “আমার বাপ এখানে থাকছেন। আমার জন্মও এখানে। আমরাও বুড়ো হয়ে যাচ্ছি। আমাদের জমির কাগজপত্র সবই আছে। পাবনা আওলারা বলতেছে, জমি তাদের। শনিবার ১০০ জন এসে আমাদের বাড়ি ভাঙচুর করে ও একটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিছে।”
ক্ষতিগ্রস্ত মো.
তিনি বলেন, “১৯টি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট শেষে হামলাকারীরা একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। এখন আমরা আতঙ্কে আছি। আমরা আশাকরি, ডিসি স্যার ও এসপি স্যার আমাদের পাশে দাঁড়াবেন।”
ফুলি বেগম বলেন, “লোকজন আমাদের কাছে এসে বলে এ জমি তাদের, আমরা দখল করে আছি। আমি তখন বললাম, আমাদের কাগজ আছে । আপনারা কাগজ থাকলে নিয়ে আসেন। তারা কোনো কথা শুনলো না, বাড়ি ভেঙে দিল। আমার ঘরে গরু বিক্রির টাকা ছিল, ৫০ মণ ধান ছিল ওরা সব নিয়ে গেছে।”
পাংশা মডেল থানার ওসি (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বলেন, “হামলার মূল কারণ জমির সিমানা নির্ধারণ নিয়ে। এপারের মানুষের দাবি জমি তাদের, ওপারের মানুষের দাবি জমি তাদের। খবর পেয়ে পুলিশ শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/রবিউল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ পদ ম র চ র
এছাড়াও পড়ুন:
স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার
২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।
মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।
ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।
স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।
শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’
তার জন্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”
"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।
প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"
ঢাকা/ইয়াসিন