গবেষকদের ওপর আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ দুঃখজনক: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
Published: 25th, May 2025 GMT
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আমাদের দেশে গবেষকদের ওপর আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কম সুযোগ-সুবিধার মধ্যেও নীরবে-নিভৃতে গবেষণা করে যাচ্ছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা হচ্ছে কৃষিতে। কৃষি গবেষণা প্রযুক্তি সবচেয়ে বেশি কাজে লেগেছে। এর মাধ্যমে ফসল ও খাদ্য চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণ করা সম্ভব হয়েছে।
রোববার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (সাউরেস) আয়োজিত বার্ষিক রিসার্চ রিভিউ ওয়ার্কশপ ২০২৪-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের চতুর্থ তলার কনফারেন্স কক্ষে দুই দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
উপদেষ্টা বলেন, এর আগে কোনো সরকার এত অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করেনি। এবারের নিয়োগে দলমত দেখা হয়নি। এই প্রথমবারের মতো প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা ও একাডেমিক প্রোফাইল দেখে নিয়োগ হয়েছে। গবেষণার যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষকদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেন– এবারও বাজেট গতানুগতিক হচ্ছে কেন, শিক্ষা ও গবেষণায় বাজেট কম কেন। কিন্তু বাজেট তো গতানুগতিক করতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ, চলমান প্রকল্প বন্ধ করে শিক্ষা ও গবেষণায় নতুন বাজেট দেওয়া সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে আগের প্রকল্প শেষ হলে অন্তত দুই বছর পর নতুন বাজেট প্রণয়ন করা সম্ভব।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. এফ এম আমিনুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ আবুল বাশার।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’