Prothomalo:
2025-05-28@23:05:02 GMT

সচিবালয়ে বিক্ষোভ চলছেই

Published: 26th, May 2025 GMT

সচিবালয়ে আজ সব ধরনের দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকবে।

ডিএমপি বলেছে, সচিবালয়, যমুনা এবং আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল সোমবার টানা তৃতীয় দিনের মতো সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। নিজেদের দপ্তর ছেড়ে বিপুলসংখ্যক কর্মচারী এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।

কর্মচারী নেতারা সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশকে কালো আইন আখ্যায়িত করে বলেছেন, এই অধ্যাদেশ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তাঁরা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। আজ মঙ্গলবারও বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। কর্মচারী নেতারা বলছেন, এখন সারা দেশের কর্মচারীরাও তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

তিন দিন ধরে সচিবালয়ে একাধিক সংগঠনের আহ্বানে আন্দোলন কর্মসূচি চলছিল। গতকাল সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব সংগঠন মিলে ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম’-এর ব্যানারে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

এ দিকে সচিবালয়ে আজ সব ধরনের দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকার কথা জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ তথ্য জানিয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) গতকাল রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বাংলাদেশ সচিবালয়, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা এবং আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি গত ১০ মে জারি করা হয়। গতকাল রাতে তা আবার গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন হয়। এর পর থেকে এই অধ্যাদেশের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। আন্দোলনের মধ্যেই রোববার সন্ধ্যায় ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে সরকার।

কর্মচারীদের অভিযোগ, সাড়ে চার দশক আগের বিশেষ বিধানের কিছু ‘নিবর্তনমূলক ধারা’ সংযোজন করে অধ্যাদেশটি করা হয়েছে।

অধ্যাদেশটি প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল বেলা ১১টায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা মিছিল করে সচিবালয় চত্বরের বাদামতলায় জমায়েত হন। এরপর তাঁরা সচিবালয়ের ভেতর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে সমাবেশ করেন। এরপর আবারও মিছিল নিয়ে বাদামতলায় জমায়েত হন তাঁরা। একপর্যায়ে সচিবালয়ের মূল ফটকের কাছে যান তাঁরা। এ সময় প্রধান ফটকসহ সচিবালয়ের বিভিন্ন ফটক বেশ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ দেখা যায়। পরে সেখান থেকে সরে এসে আবারও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে আসেন কর্মচারীরা।

বেলা আড়াইটার দিকে সেখানে ঐক্য ফোরামের নেতারা আজ মঙ্গলবারের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মো.

বাদীউল কবীর বলেন, ‘কর্মসূচি ততক্ষণ পর্যন্ত চলমান থাকবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত এই ‘কালো’ আইন বা অধ্যাদেশ সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার না করা হবে। এই আইন বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে চলমান কর্মসূচি সমাপ্ত হবে।’ তিনি আজ সকাল ১০টায় সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে মিছিল নিয়ে সচিবালয় চত্বরের বাদামতলায় সমবেত হওয়ার আহ্বান জানান।

ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের আরেকাংশের সভাপতি মুহা. নূরুল ইসলাম বলেন, সারা দেশের কর্মচারীরা তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

আন্দোলনের নেতারা জানান, গতকাল আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকায় সেই বৈঠক সম্ভব হয়নি। বৈঠকের সময় ঠিক হলে তা সাংবাদিকদের জানিয়ে দেওয়া হবে।

বর্তমানে দেশে ১৫ লাখের মতো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। আইন অনুযায়ী সবাই কর্মচারী। নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের চারটি বিষয়কে অপরাধের আওতাভুক্ত করা হয়।

অপরাধগুলো হলো: সরকারি কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে, অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন, অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তাঁর কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তাঁর কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন এবং যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তাঁর কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন, তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। আর অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে কেন দণ্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে দণ্ড আরোপ করা যাবে। এভাবে দণ্ড আরোপ করা হলে দোষী কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। তবে রাষ্ট্রপতির দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা যাবে।

কলমবিরতিতে যাচ্ছে ২৫টি ক্যাডার

দাবি আদায়ে আজ দুই দিনের কলমবিরতি কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে প্রশাসন ক্যাডার বাদে সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলার প্রতিবাদে এবং নিজ নিজ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়ে মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে কোটা বাতিল ও সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনার দাবিতে এ কর্মসূচি পালিত হবে।

আজ ও আগামীকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারা দেশে সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা এ কর্মসূচি পালন করবেন। গতকাল আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ অন্যান্য জরুরি সেবা কার্যক্রম এই কলমবিরতি কর্মসূচির আওতাবহির্ভূত থাকবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির জন্য ২৫ ক্যাডারের ১২ জন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বিষয়টি সমাধানের জন্য আশ্বস্ত করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টিকে আটকে রাখা হয়েছে। উপরন্তু সম্প্রতি কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান। অথচ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সরকারি বিধিবিধান-বহির্ভূত কার্যকলাপের পরও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ ছাড়া একটি নির্দিষ্ট ক্যাডারের গোষ্ঠীস্বার্থে উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিসংখ্যান, ডাক, পরিবার-পরিকল্পনা, কাস্টমস ও ট্যাক্স ক্যাডারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক য ড র র কর মকর ত উপদ ষ ট র জন য স ত কর গতক ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দুই দিনের কলমবিরতি কর্মসূচিতে যাচ্ছে ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন

দাবি আদায়ে আগামীকাল মঙ্গলবার দুই দিনব্যাপী কলমবিরতি কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে প্রশাসন ক্যাডার বাদে সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলার প্রতিবাদে এবং ‘কৃত্য পেশাভিত্তিক’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, উপসচিব পদে পদোন্নতিতে কোটা বাতিল ও সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনার দাবিতে এ কর্মসূচি পালিত হবে।

আগামীকাল ও পরদিন বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারা দেশে সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা এ কর্মসূচি পালন করবেন। আজ সোমবার আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ অন্যান্য জরুরি সেবা কার্যক্রম এই কলমবিরতি কর্মসূচির আওতাবহির্ভূত থাকবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির জন্য ২৫ ক্যাডারের ১২ জন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বিষয়টি সমাধানের জন্য আশ্বস্ত করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টিকে আটকে রাখা হয়েছে। উপরন্তু সম্প্রতি কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান। অথচ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সরকারি বিধিবিধান–বহির্ভূত কার্যকলাপের পরও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ ছাড়া একটি নির্দিষ্ট ক্যাডারের গোষ্ঠীস্বার্থে উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিসংখ্যান, ডাক, পরিবার-পরিকল্পনা, কাস্টমস ও ট্যাক্স ক্যাডারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন উপসচিব পদে কোটা নিয়ে যে সুপারিশ করেছে, তা নিয়েও আপত্তি জানিয়ে পরিষদ বলেছে, আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

ওই সব দাবিতে এর আগে ২০ মে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫ ক্যাডারের সদস্যরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এ ছাড়া গত ২ মার্চ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সারা দেশে ১ ঘণ্টার কলমবিরতি কর্মসূচি ও ২৬ ডিসেম্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের
  • ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কলমবিরতি পালন
  • সচিবালয় ঘিরে উত্তাপ
  • বৃহস্পতিবারের মধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি
  • দুই দিনের কলমবিরতি কর্মসূচিতে যাচ্ছে ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন