সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার বিভিন্ন গ্রামে বহু বছর ধরে শীতলপাটি বুনে আসছেন নারীরা। এর পাশাপাশি রয়েছে বাঁশ-বেতের নানা পণ্যসহ অন্যান্য কুটিরশিল্পও। তবে এখন এসব শিল্পে ভাটা পড়েছে। কাঁচামাল, পুঁজি ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটির শিল্প।

এই পরিপ্রেক্ষিতে শীতলপাটির হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আজ মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ‘বাংলাদেশের প্রান্তিক পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন’—শীর্ষক একটি প্রকল্পের অবহিতকরণ সেমিনারে তাঁরা এ কথা বলেন।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক সুচিত্রা রায় এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল হক।

সেমিনারে জানানো হয়, হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী পেশাগুলোর পুনরুদ্ধার, প্রান্তিক শিল্পীদের আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং জাতীয় উন্নয়নে তাঁদের অংশগ্রহণ বাড়াতেই এ প্রকল্প কাজ করছে। প্রকল্পের আওতায় দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং পণ্যের প্রসার ও বিক্রয়ের সুবিধার্থে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা অংশগ্রহণকারীরা জানান, একসময় জেলার বিভিন্ন গ্রামে বাঁশ-বেতের পণ্য ও শীতলপাটি ব্যাপকভাবে তৈরি হতো। সুনামগঞ্জের তৈরি শীতলপাটি বিদেশেও, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হতো। কিন্তু এখন তা অনেকটাই কমে গেছে। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই শিল্পে আবারও সুদিন ফিরতে পারে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, সুনামগঞ্জে শীতল পাটিসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হলে দেশও সমৃদ্ধ হবে। যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। প্রশাসন সহযোগিতা করতে চায়, তবে তার আগে উদ্যোগ দেখাতে হবে। প্রশাসন পৃষ্ঠপোষকতা দিতে প্রস্তুত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ তলপ ট

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে চার হাজার একর জায়গা উদ্ধারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অভিযান

চট্টগ্রামে দখল হয়ে যাওয়া প্রায় চার হাজার একর জায়গা উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় নগরের উত্তর কাট্টলী এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। টানা তিন দিন এ উচ্ছেদ অভিযান চলবে। অভিযানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন।

অভিযানে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা হলেন জেলা প্রশাসনের কাট্টলী সার্কেল ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার হুছাইন মুহাম্মদ, পতেঙ্গা সার্কেল ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার ফারিস্তা করিম ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. মঈনুল হাসান। উচ্ছেদ অভিযানে সহায়তা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ উচ্ছেদ অভিযান শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেদখলে থাকা জায়গা উদ্ধারে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবার। এসব জমি উদ্ধার করে কাঁটাতার দিয়ে খুঁটি দেওয়া হবে। এরপর সেখানে বনায়ন করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, নগরের উত্তর হালিশহর থেকে উত্তর কাট্টলীর বাংলা বাজার পর্যন্ত সাগর উপকূলের নগর অংশে প্রায় চার হাজার একর ভূমি দখল করে ফেলেছেন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম, সাবেক সংসদ সদস্য দিদারুল আলম। প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে মোস্তফা-হাকিম গ্রুপ, যমুনা গ্রুপ, জলিল কোম্পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের সুরক্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নগরবাসীকে রক্ষায় সৃজিত গাছ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে এই চার হাজার একর জমি দখল করে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ