নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলাম খালাস পেয়েছেন: আসিফ নজরুল
Published: 27th, May 2025 GMT
নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে আসিফ নজরুল এসব কথা বলেন। এর আগে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে আজহারুলকে আজ সকালে খালাস দিয়ে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এ রায় নিয়ে আসিফ নজরুল দেওয়া ফেসবুকে পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো- নির্দোষ প্রমাণ হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পেয়েছেন জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে তার করা রিভিউ সর্বসম্মতিতে মঞ্জুর করেছেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ। আজহারুলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় এবং মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে এর আগে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে আজকের রায়ে।
এই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টির কৃতিত্ব জুলাই গণ–আন্দোলনের অকুতোভয় নেতৃত্বের।
এই সুযোগকে রক্ষা করার দায়িত্ব এখন আমাদের সবার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট আজহ র ল অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণ কী
শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নাগরিকদের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ এবং নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতার মুখে পড়েছে।
গত বছর ছাত্রদের নেতৃত্বে প্রাণক্ষয়ী বিক্ষোভের মুখে দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এরপর জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানানো সত্ত্বেও প্রতিশ্রুত সংস্কারে বিলম্ব, ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভ এবং রাজনৈতিক বিভাজনের মুখে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বাংলাদেশে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা তৈরির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কারণ এখানে তুলে ধরা হলো:
নির্বাচন বিতর্কডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস। তবে এখনো নির্বাচন আয়োজনে সুনির্দিষ্ট তারিখ জানায়নি অন্তর্বর্তী সরকার।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। গত সপ্তাহে দলটি বলেছে, একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী পরিকল্পনা ছাড়া অধ্যাপক ইউনূসের সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখা ‘কঠিন’ হবে।
সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গত সপ্তাহে এক বক্তব্যে ডিসেম্বরে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। এতে সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়ে।
গত বছরের অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা তরুণদের উদ্যেোগে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জোর দিয়ে বলছে, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
সংস্কার নিয়ে অচলাবস্থাহাসিনার বিদায়ের পর অধ্যাপক ইউনূস যে ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই সংস্কারের অগ্রগতি ধীরগতিতে চলছে। তাঁর সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য গঠনের জন্য সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে।
ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তাদের প্রথম দফার সংলাপে কিছু পরিবর্তনের বিষয়ে ব্যাপক সমর্থন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা।
তবে সাংবিধানিক সংস্কার, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ এবং বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ–সংক্রান্ত আরও জটিল কিছু প্রস্তাব নিয়ে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার সংলাপ জুনের প্রথম সপ্তাহে শুরু হবে বলে ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিবাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অস্থিতিশীল অবস্থা জনগণের উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক ও রাজনৈতিক কর্মীদের রাজপথে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভ রাজধানী ঢাকার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে।
এই অস্থিরতা নাগরিকদের উদ্বিগ্ন করে তুলছে। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, যদি শিগগিরই রাজনৈতিক ঐকমত্য না হয়, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
আরও পড়ুনইউনূস সরকারের ওপর চাপ বাড়ার মধ্যেই বাংলাদেশে বিক্ষোভ২৬ মে ২০২৫হাসিনার দলের ওপর নিষেধাজ্ঞাচলতি মাসে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে সামনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে দলটিকে কার্যত বাইরে রাখা হচ্ছে। কিন্তু এতে পরবর্তী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার বিষয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পদক্ষেপ চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর সরকারকে অস্থিতিশীল করতে যে চেষ্টা চালানো হচ্ছে, তাতে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুননির্বাচন নিয়ে চাপের মুখে অধ্যাপক ইউনূসের পদত্যাগের হুমকি২৩ মে ২০২৫