নিজের মন্ত্রণালয় নিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ‘আমি যেটা নিয়ে খুব অবাক হই– আমার নিজের মন্ত্রণালয় হিসেবে আমাদের খুব অসহায় লাগে, আপনাদের মতোই। আমরা জেলেদের মন্ত্রণালয়। কিন্তু আমাদের জেলেদের জীবন-জীবিকা যেখানে চলে, সেই হাওর-বাওড় ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তারা হাওর-বাওড় ইজারা দেয়, আর আমরা তখন কাতর হয়ে বলি– এটা আমাদের দেন।’

মঙ্গলবার ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে স্থানীয় জেলে সম্প্রদায় ও বাওড় মৎস্যজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 'জল যার জলা তার'– এ নীতি বাস্তবায়নে কাজ করবেন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, দেশের বাওড়ের ইজারা সংক্রান্ত যে জটিলতা রয়েছে, তা স্থানীয়ভাবে সমাধান সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জাতীয় পর্যায়ে সংহতি। সবাই একত্র হলেই এ সমস্যা দূর হবে।

ফরিদা আখতার বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। এ প্রজন্মই সমাজের সব বৈষম্য দূর করবে। প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মাঝে বাওড়ের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমি ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সব দফতরে কথা বলবো। বাওড়পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে বাওড়ের প্রকৃত মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে তাদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। রাজনৈতিক ও সামাজিক সব পক্ষকে এ বিষয়ে সংহত হতে হবে।’ 

এর আগে সকালে উপজেলার বলুহর বাওড় পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা। সে সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান, মৎস্য অধিদফতরের অভ্যন্তরীণ মৎস্য কর্মকর্তা মোতালেব হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট উপদ ষ ট মৎস য

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোনায় শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে জেলের নৌকা আটকে চাঁদা দাবির অভিযোগ

নেত্রকোনার খালিয়াজুরিতে ধনু নদে মাছ ধরতে যাওয়া এক জেলের নৌকা আটকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শ্রমিক দল নেতা কামরুল মিয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জেলে গতকাল শনিবার খালিয়াজুরি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে কামরুল মিয়াসহ অন্তত ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযুক্ত কামরুল মিয়া খালিয়াজুরি উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি। তিনিসহ অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পাঁচহাট গ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগকারী জেলে মো. মামুন মিয়াও একই গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জীবিকার প্রয়োজনে মামুন মিয়া ধনু নদে মাছ ধরেন। উপজেলার পাঁচহাট এলাকায় ধনু নদে কামরুল মিয়াসহ কয়েকজন ব্যক্তি বাঁশের ঘের দিয়ে ‘মিম’ (মাছের আবাসস্থল) তৈরি করে রেখেছেন। স্থানীয় জেলেরা সেখানে মাছ ধরতে গেলে তাঁরা বাধা দেন। গতকাল দুপুরে মামুন মিয়া নদে মাছ ধরতে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁকে বাধা দেন এবং ঘের থেকে ৩০০ মিটার দূরে গিয়ে মাছ ধরতে বলেন। এতে আপত্তি জানালে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ইঞ্জিনচালিত নৌকা, জাল ও বড়শি কেড়ে নিয়ে নিজেদের ঘাটে আটক রাখেন। এ সময় তাঁরা পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে। টাকা না দিলে নৌকা ফেরত দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কামরুল মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মো. আলী উছমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি, তবে মামুন মিয়ার অভিযোগটি সত্য নয়। মামুন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘদিন তিনি ধনু নদে চাঁদাবাজিসহ আমাদের দলের নেতা–কর্মীদের হয়রানি করেছেন। মামুনের কাছে এক ব্যক্তি টাকা পান। সেই কারণে ওই ব্যক্তি তাঁর নৌকা আটক করেছিলেন। এখন তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমাদের শ্রমিক দলের নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।’

খালিয়াজুরি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌস রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনা সত্য হলে এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ