জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য ঢাকায় একটি করে ফ্ল্যাট দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ জন্য প্রতিটি এক হাজার স্কয়ার ফুটের ২ হাজার ৬০০টি ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৭৬১ কোটি টাকা। এ ছাড়া শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরের আওতায় আলাদা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত অর্থ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য ঢাকার মিরপুরের ১৪ নম্বর সেক্টরে পাঁচ একর জমির ওপর বেশ কিছু ভবন নির্মাণ করা হবে। এ জন্য আগামী বাজেটে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে। তিনি আরও বলেন, সাধারণত জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে বাজেট থেকে ঋণ হিসেবে অর্থ দেওয়া হয়। এবার অনুদান হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। কারণ সংস্থাটি এসব ফ্ল্যাট শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের কাছে বিনামূল্যে হস্তান্তর করবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সচিব মনদীপ ঘরাই সমকালকে বলেন, মোট ১৪ তলাবিশিষ্ট ২৫টি ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটি ভবনে এক হাজার স্কয়ার ফুটের ১০৪টি করে ফ্ল্যাট থাকবে। সব মিলিয়ে ফ্ল্যাটের সংখ্যা দাঁড়াবে ২ হাজার ৬০০। বাজেট পাস হওয়ার পর বরাদ্দ পাওয়া গেলে পরে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।  
 এদিকে নতুন অর্থবছরের শুরু থেকেই শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা দেওয়ার পাশাপাশি আরও এককালীন অর্থ এবং চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে ৫৯৩ কোটি টাকা রাখা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরের মাধ্যমে এসব সুবিধা দেওয়া হবে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ২৩২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। 
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বাজেটেই শহীদ পরিবারের জন্য এককালীন ৩০ লাখ টাকা করে মোট ২৪৭ কোটি ৮০ টাকা এবং আহত ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা (দেশে-বিদেশে), অনুদান ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে ৩৯০ কোটি টাকাসহ মোট ৬৩৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা চেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে আর্থিক সংকটের কারণে এ খাতে ২৩২ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। বাকি ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও ছিল। তাই আগামী বাজেটে এ খাতে বেশ খানিকটা বরাদ্দ বাড়ছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, বর্তমানে এককালীন কিছু অর্থ ও চিকিৎসায় অনুদান দেওয়া হচ্ছে। নতুন বাজেটে এসব কাজ গতিশীল করার পাশাপাশি মাসিক সম্মানী ভাতা দেওয়া হবে। এসব কারণে বাড়তি বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। মাসিক সম্মানী ভাতা ও এককালীন সহায়তা অনুদান ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি’র আওতায় দেওয়া হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের কাজটি এখনও শুরু হয়নি। তাদের চাকরি দেওয়ার চেয়ে কর্মসংস্থানের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে সরকার। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ছাড়াও বেসরকারি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকার আহত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছে। পুনর্বাসনের কাজটিতেও সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর দ দ র খ একক ল ন অন দ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি 

সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (গভর্নেন্স পারফরমেন্স মনিটরিং সিস্টেম- জিপিএমএস)’ বাস্তবায়নে অর্থ উপদেষ্টা  সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে তিন সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করেছে সরকার। 

সম্প্রতি এই কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

কমিটিতে বাকি দুই সদস্য হলেন, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারি কাজের জবাবদিহিতা, দক্ষতা ও জনকল্যাণ নিশ্চিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) পরিবর্তে নতুন সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি (জিপিএমএস) চালু করা হয়েছে। এই জিপিএমএস বাস্তবায়নে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার), বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব কমিটিকে সহায়তা করবেন। তাছাড়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।

এ কমিটি জিপিএমএস বাস্তবায়নের বিষয়ে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসে সেকশন ১-এর আওতায় প্রস্তুত করা পরিকল্পনা অনুমোদন দেবে এবং অর্থবছর শুরুর আগে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করবে এ কমিটি।

এছাড়া, প্রতি অর্থবছর শেষে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের জিপিএমএসের সার্বিক মূল্যায়ন পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেবে। জিপিএমএস বিষয়ে সরকারের দেওয়া অন্য যেকোনো দায়িত্ব পালন করবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেসরকারি ঋণ তলানিতে, তবে ঋণপত্র খোলায় গতি
  • টানা দুই মাস আড়াই বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে
  • তিন মাসে গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি টাকা
  • জুলাই–সেপ্টেম্বরে ঋণছাড়ে এগিয়ে বিশ্বব্যাংক ও রাশিয়া, কোনো অর্থ দেয়নি চীন
  • সিলেটে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ, বাবা-মেয়ে নিহত
  • সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি 
  • ২৯ দিনে প্রবাসী আয় ২৪৩ কোটি ডলার