রাজধানীর মতিঝিলে এনসিটিবি ভবনের সামনে বিভিন্ন জাতিসত্তার নাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তাদের দাবি, মুজিববাদী সংবিধানের কারণেই এ হামলা হয়েছে। দেশকে অস্থির করতে দেশ-বিদেশে চক্রান্ত চলছে।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতিগত ও বাংলাদেশ প্রশ্নে বিভাজিত করার হীন উদ্দেশ্যে এনসিটিবির সামনে হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে এই দাবি তুলে ধরে সংগঠন দুটির শীর্ষ নেতৃত্ব।

বিক্ষোভ সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘‘এই মুজিববাদী সংবিধানের কারণেই আজ আমাদের পাহাড়ি এই ভাই-বোনদের ওপর হামলা হয়েছে। বাংলাদেশকে অস্থির করতে দেশের বাইরে ও ভেতর থেকে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। দ্রুত নির্বাচনের ব্যাপারে সেনাপ্রধানের বক্তব্য যে, ‘দ্রুতই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে’ কথার সাথে সুর মেলানো রাজনৈতিক দলগুলোই আজকের এই হামলার সাথে জড়িত। আমি পাহাড়িদের বলতে চাই, আপনারা শান্ত থাকুন। যারা রাজপথে রক্তের বন্যা বইয়েছে, তাদের অতি দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’’

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘‘আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, আজকের এই হামলায় যারা জড়িত ছিল এবং এর পেছনে কারো মদদ ছিল কি না, খুঁজে বের করে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করুন। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’’

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘‘রূপাইয়ার মাথায় লাগা ১২টি সেলাই এদেশের গভীর ক্ষতকে নির্দেশ করে, আমাদের এই আইনশৃঙ্খলা ও ইন্টেলিজেন্স বাহিনীর ব্যর্থতাকে নির্দেশ করে। কীভাবে একই জায়গায় দুটি গ্রুপ সম্পূর্ণ বিপরীত এজেন্ডা নিয়ে কর্মসূচি ডাকতে পারে? হামলা শেষ হবার পর সেখানে পুলিশ বাহিনীর অবস্থান অনেকটা বাংলা সিনেমার মত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো কর্মক্ষেত্রে তাদের দায়বদ্ধতা দেখাচ্ছে না। মন্ত্রণালয় যদি বাহিনীগুলোর এই অকার্যকারিতার কোনো ব্যবস্থা না গ্রহণ করে, তবে এগুলো আরো বাড়তেই থাকবে। পোশাকধারী ও পোশাক ছাড়া যারাই জুলাই হত্যাকাণ্ড ও আজকের এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত ছিল, তাদের কঠোর বিচারের আওতায় আনতে হবে।’’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘‘আজকে এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাহিনী সেখানে উপস্থিত ছিল। কিন্তু তারা কিছুই করেনি। আমাদের ইনটেলিজেন্স বাহিনী কী করেছে? তারা তাদের কোনো দায়িত্ব পালন করেনি। সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় আমরা দেখেছি, এমন ঘটনা ঘটলে পুলিশ ও ইন্টেলিজেন্স বাহিনীগুলো অনেক তৎপরতা দেখাতো, লোকজনদের বাড়ি থেকে তুলে আনতো। কিন্তু বর্তমানে প্রশাসনের নির্লিপ্ত ভূমিকা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়।’’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিষদের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘‘মুজিববাদী সংবিধান আমাদের প্রত্যেকটি জাতিকে এক সূত্রে বাঁধতে পারেনি। এই সংবিধান পাহাড়িদের আমাদের আপন করতে দেয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে অবহেলাকে আমরা ধিক্কার জানাই। আজ যারা এই ন্যক্কারজনক হামলার সাথে জড়িত, তাদের সকলকে অতি দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী কালচারাল হেজিমনিকে ফিরিয়ে আনতে আবার একটি মহল সক্রিয় হয়েছে, আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পাহাড়ি ভাইদের বলছি, বিদেশি পৃষ্ঠপোষকদের করা ষড়যন্ত্রে পা দেবেন না। আমাদের মধ্যে যে মতপার্থক্যগুলো রয়েছে, সেগুলো সমাধানের জন্য আলোচনায় বসতে হবে। কোনো সংঘাত-মারামারিতে জড়ানো যাবে না।’’

বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/রায়হান/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ধানমন্ডি ৩২ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ আটক সেই কিশোরকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক কিশোরকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ধানমন্ডি থানা থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

আজ সকাল ১০টার দিকে ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরকে আটক করা হয়েছিল। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায়।

আজ বিকেলে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, আটক কিশোরটি গ্রামের বাড়ি থেকে আজ সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর দেখতে এসেছিল। তার বাড়িতে খোঁজ নিয়ে তার সম্পর্কে সন্দেহজনক বা খারাপ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সেই কারণে তাকে ধানমন্ডি থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

কিশোরকে আটকের পর পুলিশ বলেছিল, আটক কিশোরের আচরণ সন্দেহজনক। তাঁর কথা বিভ্রান্তিকর। সে নিজেকে শিক্ষার্থী পরিচয় দিচ্ছে। একবার বলছে সে ছাত্রদল করে। আরেকবার বলছে ছাত্রশিবির করে। আটক কিশোরের ব্যাগে পাওয়া কাগজপত্রসহ অন্যান্য আলামত দেখে মনে হচ্ছে, সে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ডাকা আজ ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

কোনো ব্যক্তি নাশকতা করতে পারে, এমন সন্দেহ হলেই তাঁকে আটক করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় গত মঙ্গলবার এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনধানমন্ডি ৩২ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ কিশোরকে আটক করল পুলিশ৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জানমালের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন
  • বর্তমানে যে অবস্থা, তাতে নির্বাচনে অসুবিধা নেই: উপদেষ্টা
  • তফসিলের আগেই লটারির মাধ্যমে মাঠ প্রশাসন ঢেলে সাজানো হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ১৭ নভেম্বর ঘিরে প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ইমাম শাফেয়ি (রহ.): আলেম কবি, তত্ত্বজ্ঞানী ইমাম ও উসুল শাস্ত্রের পথিকৃৎ
  • আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে গভীর উদ্বেগ জিএম কাদেরের
  • জ্বালাও-পোড়াওয়ের রানি পালিয়ে বিদেশে আছেন: জাহিদ হোসেন
  • গোপালগঞ্জে গণপূর্ত ও গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রোল বোমা, পিকআপে আগুন 
  • ধানমন্ডি ৩২ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ আটক সেই কিশোরকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ
  • কক্সবাজারে নিরাপত্তা জোরদার