শেখ হাসিনার বিচারের মঞ্চ হবে ফাঁসির মঞ্চ: সারজিস
Published: 6th, February 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমার শত শত ভাইদের হত্যা করে খুনি হাসিনা ভারতে বসে ভিডিও কনফারেন্সে নির্লজ্জের মত বক্তব্য দেয়, শত শত মানুষ হত্যা করে, গুম করে, খুন করে আবার নির্লজ্জের মতো বিচার চায়। খুনি হাসিনার অবশ্যই বিচার হবে। তাকে এনে এই বাংলাদেশে বিচার করে হবে। তার ওই বিচারের মঞ্চ হবে ফাঁসির মঞ্চ।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্বজনদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, যত দ্রুত শহীদ পরিবারের সহায়তার ব্যবস্থা করা যেত; ততটা তাড়াতাড়ি হচ্ছে না। শহীদ পরিবারের সদস্যরা রাস্তায় নেমে এসেছেন; এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। শুক্রবার আমরা শহীদ পরিবারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলব। রোববার তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেদিন তারা নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরবেন।
সারজিস আরও বলেন, এই সরকার যদি শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার করতে না পারে, তাহলে এটি হবে এই সরকারের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা। আমরা সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায় করে নেব। সরকারকে শহীদ পরিবারের প্রতিটি যৌক্তিক দাবি পূরণ করতেই হবে।
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা গণহত্যার বিচার ও সরকারি স্বীকৃতির দাবিতে আজ সকাল সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। পরে সারজিস সেখানে গেলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অবরোধ তুলে নেন শহীদ স্বজনরা।
তাদের পাঁচ দাবি হলো- প্রতিটি হত্যার বিচারের লক্ষ্যে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ১০ দিনের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে; শহীদ ও আহত ভাইদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে; শহীদ পরিবারের দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; শহীদ পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ন্যায্য সম্মানী দিতে হবে এবং শহীদ পরিবারের মাসিক সম্মানির ব্যবস্থা করতে হবে।
পরিবারগুলোর অভিযোগ, তারা গত কয়েক মাস ধরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করা চেষ্টা করে আসছেন। তবে তাদের সে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। জুলাই গণহত্যায় চলমান বিচারিক কার্যক্রমের সমালোচনা করে শহীদ পরিবারগুলো বিষয়টিকে ‘সার্কাস’ বলেও অভিহিত করেছেন। তারা জানান, মারাত্মক ক্র্যাকডাউনের আদেশ দানকারী এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী অনেকেই এখনো বিচারের সম্মুখীন হয়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় নারীকে ধর্ষণ ও নিগ্রহের প্রতিবাদে জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ধর্ষণ ও নিগ্রহের ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে প্রতিবাদে মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আমার বোন ধর্ষিতা কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই’, ‘অবিলম্বে ধর্ষকদের বিচার কর’, ‘জানমালের নিরাপত্তা দাও, নইলে গদি ছেড়ে দাও’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। প্রতিবাদ মিছিল শেষে একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বরের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শামসুল আলম মারুফ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ স্বৈরাচারী সরকারের পতনের মাধ্যমে ইন্টেরিম (অন্তর্বর্তীকালীন) সরকার ক্ষমতায় বসল। কিন্তু এরপর আমরা দেখতে পেলাম নারীদের ওপর একাধিক নিপীড়ন, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনসহ বিগত কয়েক মাসে ঘটিত শত শত মব ভায়োলেন্সের ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে।’
এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘সরকারের এমন আচরণ ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারা, পুলিশের কাঠামোগত সংস্কার না করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম জুলাই–আগস্টের শহীদদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, ‘প্রতিদিন এই ধর্ষণের ঘটনাগুলো সংবাদের শিরোনামে দেখতে দেখতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি বললেও এই কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে প্রতিদিন হাটে-ঘাটে চলতে গিয়ে আমরাও সবাই অনেকখানি অনিরাপদ বোধ করছি। এটা হওয়ার কথা ছিল না। জুলাই অভ্যুত্থানে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব ছিল হাসিনার আমলের সকল দুঃশাসন কাটিয়ে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অথচ একই রকম সংস্কৃতি এখনো বিদ্যমান।’
তাহসীব আরও বলেন, ‘আমরা বিচারের কথা বলি, যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পর আর কেউ এমন ঘৃণ্য কাজ করতে সাহস না পায়। যাতে এই সংস্কৃতি বন্ধ হয়। মুরাদনগরের সেই ধর্ষিতার চাচা বলেছিলেন কাল তাঁর ঘরের কারও সাথে এমনটা হবে না, সে নিশ্চয়তা কোথায়? আমরা সেই নিশ্চয়তার দাবিতে আজ দাঁড়িয়েছি। যতক্ষণ না সেটা নিশ্চিত হচ্ছে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’