চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে সবুজ গাছগাছালির পথ ধরে ক্লাসে যাচ্ছিলেন আবদুল্লাহ আল মুজাহিদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তিনি। প্রতিদিনের চেনা পথে একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলেন মুজাহিদ। দীর্ঘদিন পর অনেকটা পরিত্যক্ত ঝুলন্ত সেতু নতুন রঙে নতুন সেজেছে। মুজাহিদ বললেন, ‘এতদিন ঝুলন্ত সেতুর দিকে তেমন চোখ পড়ত না। কারণ এটি ঢাকা ছিল ঝোপঝাড়ে, প্রবেশপথে ছিল কাঁটাতারের বেড়া। অথচ এ সেতুটি ছিল শিক্ষার্থীদের বিনোদনের একটি ভালো উপলক্ষ।’ গত ১৪ মে সমাবর্তন উপলক্ষে সংস্কার করা হয়েছে চবির ঝুলন্ত সেতু। ছয় বছর ধরে বন্ধ ছিল এই সেতু। শিগগিরই সেতুটি খুলে দেওয়া হবে। মুজাহিদসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বললেন, ‘ঝুলন্ত সেতুর এই জায়গায় আসলে রাঙামাটির কথা মনে পড়ে। এটি খুলে দিলে ক্লাস শেষে এখানে বসে আমরা আড্ডা দেব।’
২০০৯ সালে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর আদলে নির্মিত হয়েছিল চবির এই ঝুলন্ত সেতু। সমাজবিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের সামনে থাকা খালের ওপর সেতুটি অল্প সময়ে ক্যাম্পাসের অন্যতম নান্দনিক ও জনপ্রিয় স্থাপনা। প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী যাতায়াত করতেন এই পথে। কেউ দাঁড়িয়ে ছবি তুলতেন, কেউ খালের ধারে বসে কাটাতেন শান্ত দুপুর।
তবে নির্মাণের ১০ বছর পর ২০১৮ সালের দিকে ঝুলন্ত সেতু বন্ধ হয়ে যায়। সেতুটি জীর্ণ হয়ে পড়েছিল। কাঠের কাঠামোতে পোকায় ধরে, পিলারগুলো হয়ে যায় দুর্বল। শেষে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ভর্তি পরীক্ষার আগে সংস্কারের অজুহাতে সেতুটি কাঁটাতার দিয়ে বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এরপর কেটে গেছে ছয় বছর। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দাবির পরও সংস্কার হয়নি সেতুটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.
শুরু করেছি। সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিনকে প্রধান করে গঠিত হয়েছে সেতু বাস্তবায়ন কমিটি। ঝুলন্ত সেতুটি শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যের প্রতীক। তাই এটি এখন কাঠের বদলে স্টিলের কাঠামোয় আরও মজবুতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নতুন এই সেতু হবে আরও নিরাপদ ও আধুনিক। সেতুর দুই পাশে বসানো হচ্ছে শক্তিশালী পিলার, যুক্ত করা হচ্ছে উন্নতমানের বাতি। খাল পরিষ্কার করে সেটিকে হ্রদে রূপ দেওয়া হচ্ছে। খালের সাথে থাকা পয়োনিঃস্কাশনের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে। রাখা হবে বিকল্প পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা।’
সংস্কার কাজের দায়িত্বে থাকা সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মজুমদার বলেন, ‘আমরা এমনভাবে এটি নির্মাণ করছি, যাতে ভর্তি পরীক্ষার সময় একসাথে শতাধিক মানুষও চলাচল করতে পারে। পাশে একটি ফুলের বাগান তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে, যা পরিবেশকে করে তুলবে আরও রূপময়।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় ওয়ালটনের আনন্দ শোভাযাত্রা ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
ঈদ উৎসব উপলক্ষে খুলনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২ এর ‘আবারো মিলিয়নিয়ার’ ক্যাম্পেইনের ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম। একইসঙ্গে দেশব্যাপী শোভাযাত্রা করেছে ওয়ালটন। দেশের ৭ শতাধিক ওয়ালটন প্লাজায় মেডিকেল ক্যাম্পে দেওয়া হয়েছে ফ্রি চিকিৎসা সেবা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে ২০২৫) সকালে খুলনা নগরীর গ্র্যান্ড প্লাসিড হোটেল থেকে এক শোভাযাত্রা বের হয়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে ক্যাম্পেইনের শোভাযাত্রা এবং ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস এম মাহবুবুল আলম।
এ সময় আরো যুক্ত ছিলেন ওয়ালটন প্লাজার এমডি মোহাম্মদ রায়হান। শোভাযাত্রাটি নগরীর শিববাড়ী মোড় প্রদক্ষিণ করে গ্র্যান্ড প্লাসিড হোটেলে এসে শেষ হয়।
আরো পড়ুন:
জাম্বিয়ার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন
ওয়ালটনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফায়ার সেইফটি প্রশিক্ষণ
শোভাযাত্রায় জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ, জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খান, অর্ধশতাধিক ক্ষুদে ক্রিকেটার, ওয়ালটনের বিভিন্ন প্রোডাক্টের চিফ বিজনেস অফিসারসহ খুলনা জোনের আওতাধীন তিন শতাধিক পরিবেশক, প্লাজা ম্যানেজার ও বিক্রয় প্রতিনিধি অংশ নেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওয়ালটন হাই-টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, “ঈদ মানে উৎসব, ঈদ মানে আনন্দ। আমরা চাই ক্রেতাদের মাঝে সেই আনন্দ ছড়িয়ে দিতে। এরই প্রেক্ষিতে ডিজিটাল ক্যাম্পেইনে মিলিয়নিয়ারসহ বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।এই কার্যক্রমের মাধ্যমে অসংখ্য ক্রেতার জীবনে সৌভাগ্য ও আনন্দের উপলক্ষ্য হতে পেরেছে ওয়ালটন। ইতোমধ্যেই অনেক ক্রেতা ওয়ালটন পণ্য কিনে মিলিয়নিয়ার হয়েছেন। অনেক ক্রেতা লাখপতি হয়েছেন। অসংখ্য ক্রেতা পেয়েছেন বিভিন্ন পুরস্কার। ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের এই আনন্দময় বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দিতে একযোগে দেশব্যাপী বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়েছে।”
ওয়ালটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, দেশজুড়ে ৭ শতাধিক ওয়ালটন প্লাজায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। দিনব্যাপী ক্রেতাসাধারণসহ সবাইকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
তিনি বলেন, “কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষা পলিসির মাধ্যমে ওয়ালটন প্লাজার মাধ্যমে সারা বছরজুড়ে ক্রেতা সাধারণের জন্য নানা সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। এটা ক্রেতাদের জন্য আমাদের দায়িত্বশীলতা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।”
শোভাযাত্রা মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, “দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে দেশে তৈরি পণ্যের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। এতে দেশের অর্থ দেশে থাকবে। দেশীয় শিল্পের টেকসই বিকাশের সঙ্গে তৈরি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি আরো ত্বরান্বিত হবে। ওয়ালটন আমাদের সবার গর্ব। দেশের সীমানা পেরিয়ে ওয়ালটন পণ্য এখন বিশ্বের বহু দেশে রপ্তানি হচ্ছে।”
দেশজুড়ে চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২২ এর আওতায় দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা ও পরিবেশক শোরুম থেকে ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন বা বিএলডিসি সিলিং ফ্যান কিনে ক্রেতারা ‘আবারো মিলিয়নিয়ার’ অর্থাৎ ১০ লাখ টাকা পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া লাখ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারসহ রয়েছে নিশ্চিত পুরস্কার। ঈদ উপলক্ষে ওয়ালটন বাজারে ছেড়েছে আইওটি, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের নতুন সাত মডেলের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার।
ঢাকা/পলাশ/সাইফ