মাকে হত্যার ঘটনায় বাবার ফাঁসি চাইল মেয়ে
Published: 23rd, May 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভায় মাকে হত্যার ঘটনায় বাবার ফাঁসির দাবি করেছে মেয়ে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আয়োজিত মানববন্ধনে সে এ দাবি জানায়।
মিরকাদিম পৌরসভার পূর্বপাড়া বটতলা এলাকার গৃহবধূ মিতু আক্তারকে (২৮) ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন তাঁর স্বামী সুমন মিয়া (৪৫)।
হত্যার পর থানায় গিয়ে স্বীকারোক্তি দেন সুমন। এ ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে ‘মিরকাদিম পৌরসভার সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে সুমনের ফাঁসির দাবিতে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে অংশ নেয় নিহত মিতুর আত্মীয়-স্বজনসহ শতাধিক এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে মিতুর বড় মেয়ে মারজানা আক্তার (১২) কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাঁর মায়ের হত্যার বিচার দাবি করে। সে বলে, ‘আমার মাকে হত্যা করেছে আমার বাবা সুমন মিয়া। আমি চাই তার ফাঁসি হোক। আপনাদের কাছে মা হত্যার ন্যায্যবিচার চাই।’
একাধিক মানববন্ধনকারী ‘সুমন মিয়ার ফাঁসি চাই’ স্লোগানে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তারা বলেন, একজন নারীকে এভাবে হত্যা করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিচারহীনতার সংস্কৃতি যেন আর না থাকে– এটাই তাদের প্রত্যাশা।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নিহত মিতুর বাবা মন্টু মিয়া, মা আকলিমা বেগম, ছোট মেয়ে মারজিয়া (৯), ছেলে আবিদ হোসেন (৭) প্রমুখ।
সোমবার রাতে মিতুকে হত্যা করে থানায় হাজির হন সুমন। এ ঘটনায় পরদিন সদর থানায় হত্যা মামলা করেন মিতুর মা আকলিমা বেগম।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫