Samakal:
2025-07-12@19:09:05 GMT

মূল্যস্ফীতির পাঠশালা

Published: 23rd, May 2025 GMT

মূল্যস্ফীতির পাঠশালা

মাথায় চিন্তার ঝাঁপি আর বুকপকেট ফাঁকা থাকলে শরীর প্রায়ই ভারসাম্যহীন ঠেকে। বিশেষ করে তাদের, যারা সংসার চালান। সময়টা মাসের প্রথম দিক বলে হাকিম সাহেবের পকেটে টাকা আছে। তবুও তিনি যেন ভারসাম্যহীন। কারণটা হচ্ছে তার পকেটের টাকার ওজন নেই। সবজির দোকানে তিনি দৃশ্যত একটি অস্বাভাবিক ঘটনার অবতারণা করলেন। সবজি বিক্রেতা বুঝতে পারছে না, তার ক্রেতা সত্যি সত্যি তার সঙ্গে মজা করছেন কি-না। কিন্তু হাকিম সাহেবের চাহনি তা বলছে না। একছড়ি কাঁচকলা বিক্রি করার পর মুথাটা এখনও ফেলা হয়নি। বিক্রেতা দোকানের অন্যসব সবুজ সবজির মাঝখানে সেটা রেখে দিয়েছে। কাঁচকলার মুথাটাও সবুজ। সে কারণেই কি হাকিম সাহেবের চোখ ভুল করেছে? সবজি বিক্রেতা বলল, ‘ভাই, এইটডা তো সবজি না, কাঁচকলার মুথা।’ 
জবাবে হাকিম সাহেব বললেন, ‘এখন কলার মুথাও খাইতে অইব।’
ছুটির দিনেও হাকিম সাহেবের মাথাটা নানা কারণে ভারী হয়ে আছে। বাজারের ব্যাগ নিয়ে বের হওয়ার সময় দেখলেন, তার ছেলে তনয় পড়ার টেবিলে অর্থনীতিবিদ স্যামুয়েলসনের ‘মূল্যস্ফীতি’র সংজ্ঞা মুখস্থ করছে। তার মনে হলো, তনয় বুঝে পড়ছে না বলে মূল্যস্ফীতি বিষয়টা তার মগজে ঢুকছে না। তখন তিনি ছেলেকে মূল্যস্ফীতি বোঝাতে গিয়ে নিজেই পড়লেন বিপাকে। ক্লাসে এক শিক্ষকের নদীবিষয়ক গল্প পড়ানোর ধরনটা এতটাই নির্জীব ছিল যে এক ছাত্র দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘স্যার, নদী কী?’ শিক্ষক বললেন, ‘নদী মানে তটিনী।’ তারপর ছাত্র জানতে চাইল, ‘তটিনী কী?’ শিক্ষক বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘তটিনী মানে তরঙ্গিনী।’ ছাত্র সেটিও বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করল, ‘তরঙ্গিনী কী?’ শিক্ষক এবার মহা বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘আরে গাধা, তরঙ্গিনী হচ্ছে স্রোতস্বিনী।’ যে শিক্ষকের কাছে বহু রূপের ধারক ও বাহক নদী কেবলই কিছু বাংলা প্রতিশব্দ, তাঁর কাছে ছাত্র গাধা হিসেবে বিবেচিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। তনয়ও বাবার বেরসিক পাঠদানে মূল্যস্ফীতি বুঝতে না পেরে মাথা চুলকে বারবার পাল্টা প্রশ্ন করে যাচ্ছিল। ছেলের প্রশ্নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাকিম সাহেব বেশি দূর এগোতে না পেরে তিনিও মহা বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘আরে গাধা, মূল্যস্ফীতি হচ্ছে তোর মাথা।’ তারপর তিনি বাজারের ব্যাগ নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বিড়বিড় করে তনয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একহাত নিলেন। আজকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা কী যে পড়ায়! আর তাদের পড়ানোর সময়ই-বা কোথায়! ভালোভাবে পড়ালে তো তনয়কে গাধার মতো মূল্যস্ফীতি মুখস্থ করতে হতো না।
চালের দোকানে গিয়ে হাকিম সাহেবের বিগড়ানো মেজাজ আরেক ধাপ উপরে উঠল। একে তো চালের দাম একদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি আরেক দফা পাঁচ টাকা বেড়ে গেছে। চালবাজির দখল মুখ বুজে সহ্য করে পকেট থেকে তিনি এক হাজার টাকার নোট বের করে পড়লেন আরেক বিড়ম্বনায়। চালবিক্রেতা তার তীক্ষ্ণ চাহনি আর হাতের সংবেদনশীল আঙুল দিয়ে আবিষ্কার করল যে টাকায় টেপ লাগানো। হাকিম সাহেব টাকাটা গতকালই ব্যাংক থেকে নিয়েছিলেন। অনেক নোটের ভেতর একটার ওপর স্বচ্ছ টেপ তার চোখে পড়েনি। আজকাল ব্যাংক থেকে দেওয়া টাকার বান্ডেলের ভেতর হরহামেশা ছেঁড়াফাড়া নোট পাওয়া যায়। ভালোভাবে দেখে না আনলে পরবর্তী সময়ে ব্যাংকও তার দেওয়া ছেঁড়া টাকা ফেরত নিতে চায় না। একটা অপমানিত বোধ হজম করে নিয়ে হাকিম সাহেব দোকানে মাপা চাল রেখে হাঁটা দিলেন। তিনি হোসেনের চায়ের দোকানের যতই নিকটবর্তী হচ্ছেন ততই উত্তপ্ত অধিবেশনের ঢেউ তার কানে লাগছিল। ছুটির দিন বলে দোকানে বসানো অধিবেশনে কোরাম সংকট নেই। এমনিতেও চায়ের দোকানে কোরাম সংকট হয় না। একজন কোনো একটা বিষয়ে আলোচনার অবতারণা করলেই আসর জমে যায়। পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া লোকটিও দাঁড়িয়ে পড়ে। বলে, ‘ভাই, ঠিকই কইছেন।’ যাহোক, হোসেনের দোকানে বসানো অধিবেশনে এ মুহূর্তে আছেন রহমত সাহেব, হাফিজ সাহেব, কাজল সাহেবসহ আরও চারজন। রহমত সাহেব প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জাতীয়তাবাদী আখ্যা দিয়ে তার পক্ষে কথা বলায় কাজল সাহেব উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন। অধিবেশনের রীতি অনুযায়ী পয়েন্ট অব অর্ডারে হাফিজ সাহেব ফিলিস্তিনের প্রসঙ্গ টেনে রহমত সাহেবকে তার বক্তব্য শোধরাতে বললেন। হাকিম সাহেব তাদের দিকে না তাকিয়ে চলে যাচ্ছেন দেখে হাফিজ সাহেব তাকে ডাকলেন চা খেতে।
হাকিম সাহেব বললেন, ‘পাবলিকের পাছায় লাগছে আগুন। আর আপনারা আছেন ট্রাম্পরে নিয়া।’
শান্তিময় পৃথিবীর জন্য এমন একটা গঠনমূলক আলোচনাকে এভাবে কটাক্ষ করায় অধিবেশনের সবাই অবাক হয়ে হাকিম সাহেবের পেছনে তাকিয়ে রইলেন। তবে চাহনি ও কথা বলার ধরন দেখে তারা বুঝতে পারলেন, কোন কারণে আজ হাকিম সাহেবের মেজাজের পারদ ঊর্ধ্বমুখী। চায়ের দোকান অতিক্রম করে হাকিম সাহেব দাঁড়ালেন সবজির দোকানের সামনে। বেশিরভাগ সমজির দাম একশ টাকা কেজি। সাধারণ মানুষ খাবেটা কী। তখন তিনি আর মেজাজ ধরে রাখতে না পেরে কাঁচকলার মুথা কেজি কত জানতে চান। 
হাকিম সাহেব চাল-সবজিসহ যা যা নেওয়ার কথা ছিল, তার কোনোটাই না নিয়ে বাসায় ঢুকলেন। তনয় তখনও স্যামুয়েলসনের ‘মূল্যস্ফীতি’র সংজ্ঞা মুখস্থ করছে।
‘কী রে, মূল্যস্ফীতি কী বুঝতে পারছিস?’ হাকিম সাহেব জিজ্ঞেস করলেন।
‘বাবা, মনে থাকে না।’ তনয় বলল।
‘তোকে আর মূল্যস্ফীতি বুঝতে হবে না। যা, বাজারটা করে নিয়ে আয়। আমার শরীরটা খারাপ বলে কিছু আনিনি।’ হাকিম সাহেব বললেন।
ছেলের হাতে টাকা দিতে হাকিম সাহেব আলমারির ড্রয়ার খুলে অসহায়ের চাহনিতে তাকালেন। এই বাক্সটা জানে কত শত দীর্ঘশ্বাস লোকটা তার কাছে জমা করেছেন। চাকরিতে তার বেতন আহামরি কিছু নয়। গত এক বছরে তার বেতন এক টাকা না বাড়লেও আগের ধারাবাহিকতায় জিনিসপত্র এবং সরকারি ও বেসরকারি সেবার দাম বেড়েছে দেদার। বেড়েছে ওষুধ খরচ, বাসাভাড়া, ছেলে তনয় ও মেয়ে তানিয়ার পড়াশোনার খরচ। সম্প্রতি খরচের খাতায় যোগ হয়েছে হাকিম সাহেবের ছোট ভাই। যে ফ্যাক্টরিতে ভাইটা কাজ করত, সেটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে সে বেকার। মাসের ১০ তারিখের পর থেকে হাকিম সাহেবের চোখের দৃষ্টি কমতে শুরু করে। মাথার ওজনটাই তখন বেশি অনুভূত হয়। 
হাকিম সাহেব ছেলের হাতে বাজারের ফর্দ আর এক সপ্তাহ আগের বাজারদর অনুযায়ী চাল, সয়াবিন তেল ও সবজি কেনার টাকা তুলে দিলেন। তনয়কে এটাও বলে দিলেন যে, বাজার শেষে যা বাঁচবে, সেটা আর ফেরত দিতে হবে না। সঙ্গে রিকশাভাড়াও দিলেন। তনয় আনন্দে ধেই ধেই করে বাজারের ব্যাগ নিয়ে বাসা থেকে বের হলো। সে চালের দোকানে গিয়ে প্রথম হোঁচট খেল। বাবার দেওয়া হিসাবে ব্যাপক গরমিল। মাথা চুলকিয়ে চালের জন্য বরাদ্দের ভেতর দিয়ে সে চাল কিনল ঠিকই। কিন্তু ফর্দে উল্লিখিত পরিমাণের চেয়ে কম। রিকশায় চাল তুলে সে সবজির দোকানে গিয়ে দেখল সেখানে অবস্থা আরও বেগতিক। কিনতে হবে এমন কিছু সবজির বাজার দর ফর্দে লেখা দামের চেয়ে অনেক বেশি। সে হিসাব কষে দেখল পরিমাণে কম নিলেও তার ভাগে বাজার খরচের কিছুই থাকবে না। আপাতত তার ভাগের কথা মাথা থেকে উধাও হয়ে গেল। এখানেও সে বরাদ্দের ভেতর অল্প অল্প করে তিন ধরনের সবজি কিনে রিকশায় তুলল। তারপর সয়াবিন তেলের জন্য মোড়ের স্টোরের সামনে রিকশা থামাল। কিন্তু দোকানে সয়াবিন নেই। সে আরও দুটো দোকানে ঘুরে সয়াবিন পেল না। সে জানতে পারল, সয়াবিনের দাম বাড়াবে বলে সাপ্লাই বন্ধ আছে। দোকানদার তাকে অর্বাচীন এক কোম্পানির এক লিটার সয়াবিন দিয়ে বলল, ‘নিয়া যান। আগামীকাল তাও পাইবেন না।’ 
তনয় রিকশায় করে বাসার গেটে পৌঁছে দেখল হাকিম সাহেব তার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন।
‘রিকশাভাড়া দাও।’ তনয় বলল। 
‘বাজারে যাওয়ার সময় তোর রিকশাভাড়া আলাদা করে দিলাম না?’ হাকিম সাহেব বললেন।
‘বাবা, অনেক হয়েছে। আর মজা নিয়ো না তো।’ তনয় বলল। তার কণ্ঠে ক্ষোভ আর চেহারায় রাজ্যের বিরক্তি। হাকিম সাহেব খেয়াল করে দেখলেন পরিমাণে কম হলেও ফর্দে লিখে দেওয়া বাজারসদাই তনয় নিয়ে এসেছে। তার মানে মানবসৃষ্ট প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে নিতে এটা তনয়ের প্রথম ধাপ। সমীহভরা চাহনিতে তিনি ছেলেকে দেখলেন, একটু কষ্টও পেলেন। তারপর বাপ-ছেলে ধরাধরি করে বাজারসদাই ঘরে তুললেন। তনয় রাগে ফুঁসছে। রিকশাভাড়াসহ বাজার করে যা থাকার কথা ছিল সে পরিমাণ টাকা হাকিম সাহেব তনয়ের হাতে দিলেন।
‘আরে রাখো তোমার টাকা।’ এ কথা বলে তনয় টাকা ছুড়ে ফেলে দিল।
হাকিম সাহেব, তার স্ত্রী রাহেলা ও মেয়ে তানিয়া অবাক দৃষ্টিতে তনয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
‘আচ্ছা বাবা, সয়াবিনের দাম না বাড়া পর্যন্ত কি সাপ্লাই বন্ধ থাকবে? এটা কেমন অরাজকতা! এটা কি মগের মুল্লুক? দেখার কেউ নাই?’ তনয় একনাগাড়ে প্রশ্নগুলো করে গেল। 
‘কী রে, একদিন বাজারে গিয়েই তোর এই অবস্থা! এবার বুঝে দ্যাখ তোর বাবার কী অবস্থা।’ রাহেলা বললেন।
এরপর তনয় আরও দু’দিন স্বেচ্ছায় বাজার করে করেছে। এ দু’দিন হাকিম সাহেব ছেলেকে বাজারসদাইয়ের বর্ধিত মূল্য মাথায় রেখে টাকা দিয়েছেন। একদিন তিনি অফিস থেকে ফিরে তনয়কে দেখলেন পড়ার টেবিলে। সে আগের মতো বকবক করে পড়া মুখস্থ না করে বইয়ের পাতায় বুঁদ হয়ে কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করছে।
‘তনয়, মূল্যস্ফীতি বিষয়টা কি তুই শেষ পর্যন্ত বুঝতে পেরেছিলি?’ হাকিম সাহেব জিজ্ঞেস করলেন।
‘মূল্যস্ফীতি হচ্ছে ব্যাগভর্তি টাকা আর পকেটভর্তি বাজার।’ তনয় বলল।
‘আর মূল্যসংকোচন?’ হাকিম সাহেব জিজ্ঞেস করলেন।
‘মূল্যসংকোচন হচ্ছে তার ঠিক উল্টোটা। মানে পকেটভর্তি টাকা আর ব্যাগভর্তি বাজার।’ তনয় জবাব দিল।
হাকিম সাহেব বিস্ময়ভরা চাহনিতে তনয়ের দিকে তাকিয়ে রইলেন। তিনি নিজে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছেলেকে মূল্যস্ফীতি বোঝাতে পারেনি। অথচ বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে মূল্যস্ফীতির পাঠশালায় গিয়ে কত সহজে সে বিষয়টা বুঝে গেছে। এক মাস পর হাকিম সাহেব বায়তুল মোকররম মার্কেট-সংলগ্ন ওভারব্রিজ পার হওয়ার সময় একটা মিছিল দেখতে পেলেন। পল্টন মোড় থেকে এগিয়ে আসা মিছিলে তিনি কাকে দেখতে পাচ্ছেন? কিন্তু তিনি যা দেখছেন তাতে কোনো ভুল নেই। মিছিলের অগ্রভাবে এটা তনয়। ছেলে কি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েছে? কিন্তু না। মিছিলের অবয়ব এবং স্লোগানে হাকিম সাহেব বুঝতে পারলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক দলের মিছিল নয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিবাদ-সমাবেশ হাকিম সাহেবের চোখে পড়ে না। আবার সরকারের পণ্ডিত ব্যক্তিরাও কখনো বলেন, পণ্যে ভ্যাট বসালে জনজীবনে প্রভাব পড়বে না। তনয়দের মিছিলটা আরো নিকটবর্তী হয়। মিছিলে হাকিম সাহেব যাদের দেখতে পাচ্ছেন তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেণির মানুষ। পিঠ দেয়ালে ঠেকলেও চক্ষুলজ্জায় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না বলে চিরকাল সর্বংসহা শ্রেণি সংখ্যালঘু রয়ে গেল। তাদের জীবনটা বোবা ‘টুথপেস্টে’র মতো। অসৎ সংখ্যালঘু শ্রেণি টুথপেস্টের মতো তাদের টিপতে টিপতে শেষটুকু নিংড়ে নিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে। মিছিলটা ওভারব্রিজের নিচ দিয়ে যাচ্ছে। হাকিম সাহেব ব্রিজের রেলিং ধরে নিচের দিকে ঝুঁকে পড়ে মিছিলটা দেখছেন। খুব ছোট্ট মিছিল। তবুও এক অদ্ভুত ভালোলাগার দৃষ্টিতে তিনি তাকিয়ে আছেন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হ ক ম স হ ব বলল ন জ জ ঞ স করল কল র ম থ পর ম ণ ব রক ত ত রপর সবজ র করল ন র সময় য় বলল

এছাড়াও পড়ুন:

হাসিনার গুম-খুন ভুলিয়ে দেওয়ার মতো নৃশংস আচরণ করবেন না: মজিবুর রহমান

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান (মঞ্জু) বলেছেন, আর যা-ই করেন, হাসিনার আমলের গুম-খুনের কথা ভুলিয়ে দেওয়ার মতো নৃশংস আচরণ করবেন না। তিনি বলেছেন, আওয়ামী-হাসিনার আমলের নৃশংস গুম-খুনের কথা মানুষ তখনই ভুলতে পারে, যখন একই রকম খুন-খারাবি এবং পাশবিক আচরণ আগেকার ‘মজলুমদের’ দ্বারা সংঘটিত হতে থাকবে।

সম্প্রতি পুরান ঢাকায় নৃশংসভাবে ভাঙারি পণ্যের ব‍্যবসায়ী হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে গণ-অভ্যুত্থানের অংশীদার রাজনৈতিক পক্ষগুলোর প্রতি তিনি এই আহ্বান জানান। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের উদ্যোগে ‘ছাত্র-শ্রমিক জনতার গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি: বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

মজিবুর রহমান বলেন, ‘কয়দিন আগেও আমরা সব রাজনৈতিক দল এক দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। কে ছোট, কে বড়—তা নিয়ে প্রশ্ন তুলি নাই। সবাই একে অপরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছি। তাহলে আজ কেন এত বিভেদ? আজ কেন আমরা একে অপরের দিকে আঙুল তুলছি?’

আফসোস জানিয়ে এ বি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা বারবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। কিন্তু পরক্ষণেই আবার ক্ষুদ্র স্বার্থে বিরোধে লিপ্ত হয়েছি। বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও দখলবাজির রোগ কোনো সংস্কার দিয়ে সারবে বলে মনে হয় না। ক্ষমতা পেলেই অন্যের অধিকার হরণের প্রবণতা পেয়ে বসলে কোনো দলের পক্ষেই দেশ পরিবর্তন সম্ভব না। হাসিনার শাসনামলের পুনরাবৃত্তিই যদি হয় তাহলে আমাদের সকলকে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হবে। জুলাইয়ের শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ কেউ আমাদের ক্ষমা করবে না।’

বাবর চৌধুরীর সঞ্চালনায় ও শেখ আব্দুন নুরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ জাতীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ