দক্ষিণ এশিয়ার জাতিসত্তাগুলোর মধ্যে সর্বাগ্রে ঔপনিবেশিক সীমান্তছক পেরিয়ে নিজস্ব ধাঁচের রাষ্ট্র গড়তে নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশ জাতি ও বিশ্বাসকেন্দ্রিক শ্রেষ্ঠত্ববাদ অতিক্রম করা এক গণরাষ্ট্র হয়ে আশপাশের অন্যান্য জাতিকেও মুক্তির পথ দেখাবে। বাংলাদেশের জন্ম ভারত ও পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র-ঐতিহ্যকে বড় মুশকিলে ফেলেছে।

‘রাষ্ট্র’ গঠন ও পুনর্গঠনে একাত্তরের অঙ্গীকারগুলোই আবার জীবন্ত হয়েছে ‘৩৬ জুলাই’য়ের আগে-পারে। সমকালে অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের জন্য এত সফল নির্দলীয় জাতীয় জাগরণের নজির নেই। ‘বাংলাদেশ মডেল’ স্বৈরশাসকদের জন্য একটা বৈশ্বিক বার্তা দিয়েছিল।

কিন্তু প্রায় ১০ মাস পর আমরা কোথায় এসে দাঁড়ালাম? গণ অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশ আয়নায় কী দেখছে?

যদি আমরা বিশ্বাস করি ৩৬ জুলাই সফল হয়েছে সৈনিক-জনতার ঐকমত্যে, তাহলে সেই সম্মতিকে সিভিল-মিলিটারি সম্পর্কের ঔপনিবেশিক ধরন সংস্কারেও কাজে লাগাতে হবে।

স্বপ্ন ছিল গণতন্ত্রের উন্নত এক নিরীক্ষার, কিন্তু মিলছে নিরন্তর চলমান এক মবতন্ত্র। সবাই চেয়েছিল বৈষম্যের প্রাচীরগুলো ধ্বংসের কাজ তাৎক্ষণিকভাবে শুরু হবে। কিন্তু এরই মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য প্রশ্নবিদ্ধ ও ধোঁয়াশা হলো অনেকখানি। ‘বিপ্লব’ পুরো বেহাত না হলেও ধুঁকছে। প্রতিদিন শিশুসুলভ গোঁয়ার্তুমিতে রাজধানীর জনজীবন জিম্মি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা বাগ্‌যুদ্ধ পেরিয়ে রাজপথেও পরস্পরের মহড়া দিতে নামছে। গণ-অভ্যুত্থানের রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সম্মতি ও সমর্থনে যে অন্তর্বর্তী সরকার হয়েছে, তার দুই উপদেষ্টার বিদায় চাচ্ছে এক পক্ষ, অন্য পক্ষ সরাতে চাচ্ছে অন্য তিন উপদেষ্টাকে। ৩৬ জুলাইয়ের এই মরণদশায় খোদ রাষ্ট্রকেও আমরা নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে ফেলছি। শক্তিধর দেশগুলোর পাশা খেলায় বুঝে না বুঝে বাংলাদেশকে পক্ষ-প্রতিপক্ষ বানানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। প্রতিনিধি বাছাইয়ের সুযোগহীন জনতা বোবা-বিরক্তি নিয়ে অনির্বাচিত জাতীয় নেতাদের এসব প্রয়াস দেখছেন। তসবিহ গণনার মতো প্রহর গুনছেন নির্বাচনের। তাদের অবিলম্বে এমন রাজনৈতিক সরকার চাই, যারা কেবল প্রত্যাশার বাণী শোনাবে না, জবাবদিহি করবে।

সিভিল-মিলিটারি সম্পর্ক গণ-অভ্যুত্থানের ৮-১০ মাসে কাদের স্বার্থে ও কাদের দ্বারা এত নাজুক অবস্থায় ঠেলে দেওয়া হলো, সেই প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।নির্বাচিত প্রশাসনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

অধিকাংশ মানুষ এখন আর রাষ্ট্র সংস্কারের কথামালায় আস্থা রাখতে পারছে না। তাদের উৎসাহ প্রায় মৃত। তারা ব্যবসা-বাণিজ্যের সংকোচনে পীড়িত। সর্বত্র বেকারত্ব বাড়ছে। কৃষির প্রধান মৌসুমের ফলন নিরাপদে গোলায় উঠলেও শিল্পের অশনিসংকেতের আঁচ গেছে শহরতলিতেও। স্থানীয় সরকার নেই। জাতীয় সরকারও নেই। অথচ মানুষের বুকে চিৎকার করে বলার মতো অনেক কথা।

অভ্যন্তরীণ জরুরি কাজ বাদ দিয়ে সীমান্ত করিডর, বন্দর ইজারার মতো বাড়তি বিতর্কে মানুষ কিছু বলতে চায় এখন। তাই জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন প্রয়োজন। জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আকারে-ইঙ্গিতের চৌহদ্দি ছেড়েও সেই প্রয়োজনের কথা বলছে।

নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মাঠপর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের বড় কাঠামো রয়েছে। তারা বুঝতে পারছে দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় দেশের অভ্যন্তরীণ সামাজিক নিরাপত্তাকাঠামো ভেঙে পড়তে চলেছে। ১৭ কোটি মানুষের রাজনৈতিক অভিভাবকহীন সমাজকে পাহারা দেওয়া ধাপে ধাপে দায়িত্ব পাওয়া কয়েক হাজার সৈনিকের কাজ নয়। সৈনিক-জনতার সেই মৈত্রীকেও প্রাতিষ্ঠানিকতা না দিয়ে ক্রমাগত ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। সিভিল-মিলিটারি সম্পর্ক গণ-অভ্যুত্থানের ৮-১০ মাসে কাদের স্বার্থে ও কাদের দ্বারা এত নাজুক অবস্থায় ঠেলে দেওয়া হলো, সেই প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।

নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে দীর্ঘদিন মাঠে রেখে দেওয়ায় পুরো প্রতিরক্ষাকাঠামো ইতিমধ্যে তার বার্ষিক মানোন্নয়নে পিছিয়ে পড়ছে এবং সেটা নানান সামাজিক দূষণের শিকার হয়ে পড়ারও শঙ্কায় আছে। ১৯৯০ ও ২০২৪–এর জনজাগরণ বাংলাদেশকে যেখানে নিয়ে এসেছে, সেই সমাজকে সামরিক পথে নিয়ন্ত্রণ করা দুরূহ। একে যেকোনো মূল্যে দ্রুত নির্বাচনী গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক পথে চালিত করা জরুরি।

কিন্তু প্রায় ১০ মাস পর আমরা কোথায় এসে দাঁড়ালাম? গণ অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশ আয়নায় কী দেখছে?সংস্কার প্রশ্নে সশস্ত্র বাহিনীর কথা শুনতে সমস্যা কোথায়

এ সময়ে রাষ্ট্র সংস্কার সমাধা করাও গণ-অভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। দরকার ৩৬ জুলাইয়ের ইচ্ছাগুলোকে অতীতের মতো চেতনা-পণ্য না করে প্রশাসনিক পরিবর্তনের ব্যবহারিক অনুবাদ। ‘সংস্কার’ স্বল্পসংখ্যক সুশীল নাগরিকদের কেতাবি বিষয় হতে পারে না। পুলিশ ও প্রশাসনের সংস্কার নিয়ে এখন আর কথাই হচ্ছে না। অথচ স্বাধীনতার পর থেকে এই দুটি পরিসরে পরিবর্তনের প্রয়োজন বেশি উপলব্ধি করেছে জনসমাজ। সংস্কার বিষয়ে পেশাজীবী সংস্থাগুলো বিশেষ করে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাকাঠামো প্রশ্নে সশস্ত্র বাহিনীর প্রাতিষ্ঠানিক মতামত নেওয়াও জরুরি।

যদি আমরা বিশ্বাস করি ৩৬ জুলাই সফল হয়েছে সৈনিক-জনতার ঐকমত্যে, তাহলে সেই সম্মতিকে সিভিল-মিলিটারি সম্পর্কের ঔপনিবেশিক ধরন সংস্কারেও কাজে লাগাতে হবে। তৃতীয় বিশ্বের একটা দেশে সশস্ত্র বাহিনী বারবার নির্বাচনের জন্য বলছে, তাগাদা দিচ্ছে—এটাও অভিনব ঘটনা। বাংলাদেশের জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব সৌভাগ্যবান যে সিভিল কর্তৃত্বে আস্থাশীল সশস্ত্র বাহিনী তাদের রয়েছে। কিন্তু সেই বাহিনীকে প্রতিদিন হেনস্তা ও অপদস্থ না করে জাতীয় সংস্কার এজেন্ডাগুলো নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলা যেতে পারে তাদের সঙ্গে।

এই সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের মাঠে। যুদ্ধকালে সৈনিকেরা অস্ত্রটি কৃষকের হাতে দিয়ে লাঙলে হাত লাগাতেন। ৩৬ জুলাই ভিন্ন আদলে সেই আবেগের পুনর্জন্ম দেখেছে। কিন্তু বেসামরিক সমাজের কেউ অভ্যুত্থানের সেই শক্তিকে অনির্দিষ্ট সময় ক্ষমতায় থাকার প্রত্যয়নপত্র হিসেবে ধরে নিলে জাতীয় স্বার্থ বিপন্ন হবে।

ছদ্ম যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে সিরিয়া, লিবিয়া, ইরাক ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়েছে। বাংলাদেশকে এই সংস্কৃতি থেকেও দূরে রাখতে হবে। ঘরের কাছের মিয়ানমারেও তার আলামত দেখছি আমরা। বাংলাদেশের এ বিষয়ে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা। একই সঙ্গে মবতন্ত্রের আস্ফালন বন্ধে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো সর্বোচ্চ কঠোর হবে, এ–ও জনপ্রত্যাশা।

সিভিল-মিলিটারি সম্পর্কের সংহতি জাতীয় স্বার্থে কত প্রয়োজন, সম্প্রতি পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ তা দেখিয়েছে। বাংলাদেশের বেলাতেও একই কথা খাটে। অথচ ৩৬ জুলাই থেকে মবতন্ত্র দেশকে ওঠবস করাচ্ছে। সামরিক-বেসামরিক নেতৃত্বের দরকারি বোঝাপড়াতেও মবতন্ত্রকে আঘাত করতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুশ ইনের মতো পরিস্থিতিতে আবশ্যকতা ছিল উল্টোটা।

এ অবস্থায়, দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে খাদের কিনার থেকে তুলতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাহসী দেশপ্রেমিক ভূমিকা সময়ের দাবি। রাষ্ট্রকাঠামোর সব সংস্কার গুরুতর রাজনৈতিক প্রশ্ন। এনজিও কায়দায় তা সম্ভব নয়। ছদ্ম যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে সিরিয়া, লিবিয়া, ইরাক ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়েছে। বাংলাদেশকে এই সংস্কৃতি থেকেও দূরে রাখতে হবে। ঘরের কাছের মিয়ানমারেও তার আলামত দেখছি আমরা। বাংলাদেশের এ বিষয়ে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা। একই সঙ্গে মবতন্ত্রের আস্ফালন বন্ধে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো সর্বোচ্চ কঠোর হবে, এ–ও জনপ্রত্যাশা। ইতিমধ্যে মববাজরা নানান রাজনৈতিক স্লোগানের আড়ালে দেশজুড়ে এক অরাজক অবস্থা কায়েম করেছে। জনপ্রতিনিধিত্বহীন সমাজে অভ্যুত্থানের দোহাইয়ে অনেক অনাচার হয়েছে। এসবের শেষ দরকার।

সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্যে এসে শিগগির বাংলাদেশকে নির্বাচনী উৎসবের দিকে নিতেই হবে। এই লক্ষ্যে রাজনীতিবিদদের ব্যর্থতা ও বিলম্ব হবে আত্মঘাতী। দেশে সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচন চায়, অথচ রাজনীতিবিদেরা তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ—এমন নজির বিশ্বে কম। এই ব্যবধান কমাতে উদ্যোগী না হলে গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সশস ত র ব হ ন র র জন ত ক ঔপন ব শ ক ৩৬ জ ল ই ন র জন র হয় ছ ১০ ম স সরক র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
  • কারও কোনো অপরাধ নাই
  • বিশ্বকর্মা পূজা: গাঙ্গেয় শিল্পের উৎসব
  • আজ থেকে বুসান উৎসব, নানাভাবে রয়েছে বাংলাদেশ
  • ‎সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব : ডিসি
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • ঘুম থেকে অনন্ত ঘুমে অস্কারজয়ী রবার্ট রেডফোর্ড
  • ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি
  • শেষ হলো সপ্তম যোসেফাইট ম্যাথ ম্যানিয়া ২০২৫