বাড়ির পাশের একটি গাছে তাল দেখে খেতে ইচ্ছে করে নয় বছর বয়সী রাকিব উদ্দিনের। তিন বছরের দুই চাচাতো ভাই ইমাদুল হোসেন ও সিফাত উল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে গাছ থেকে তাল পাড়তে যায় সে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাছেও ওঠে রাকিব। কয়েকটি তাল পাড়ার পর খুশিতে আত্মহারা ছিল ওই তিন শিশু। তবে, তাদের আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।

গাছের মালিক মির্জা মোল্লা হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হন। তিনি রাকিবকে গাছ থেকে টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর শিশুটির মুখে, বুকে ও গলায় পা দিয়ে একের পর এক লাথি মারতে থাকেন তিনি।

শিশু রাকিব বারবার আকুতি জানালেও মন গলেনি গাছ মালিকের। উল্টো তিনি হাতে থাকা দা দিয়ে অবুঝ শিশুটিকে কোপানোর হুমকি দেন। পরে মির্জা মোল্লা শিশু রাকিবকে ছেড়ে দেন।

আরো পড়ুন:

পুঠিয়ায় খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের সাড়ে ৪ মাস পর আ.

লীগ নেতার মৃত্যু

দিনাজপুরে মা-মেয়েকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন 

পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামে এমন অমানবিক ঘটনাটি ঘটে। গত বুধবার (২১ মে) ঘটনাটি ঘটলেও জানাজানি হয় সোমবার (২৬ মে)। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে জানতে পারে ওই তিন শিশুর পরিবারও। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ফরিদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর বাবা জাফর প্রামাণিক।

অভিযুক্ত মির্জা মোল্লা গোপালনগর মৃধাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল কোবাদ মোল্লার ছেলে। তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। 

নির্যাতনের শিকার রাকিবের বাবা জাফর প্রামাণিক বলেন, “আমরা প্রথমে ঘটনাটা জানতে পারিনি। ছেলেও হয়তো ভয়ে আমাদের কাউকে জানায়নি। ফেসবুকে ভিডিও দেখার পর এবং সোমবার সকালে অনেকে আমাকে বিষয়টি বলার পর জানতে পারি। এমন অমানবিক নির্যাতন কেউ করতে পারে ভাবতেই পারছি না। আমি ঘটনার বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।”

এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে অভিযুক্ত মির্জা মোল্লার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল।

পাবনার ফরিদপুর থানার ওসি হাসনাত জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর শিশুটির পরিবার জানতে পারে বিষয়টি। ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে সোমবার সকালে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক থাকায় তাকে আটক করা যায়নি। অভিযান অব্যাহত আছে। আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের ওডিশায় বাংলাদেশি সন্দেহে আটক ৪০৩ জনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

ভারতের ওডিশা রাজ্যের ঝাড়সুগুদা জেলায় অবৈধ বাংলাদেশী সন্দেহে আটক ৪৪৪ জনের মধ্যে ৪০৩ জনকে ছেড়ে দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। তারা সবাই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। গত সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের আটক করা হয়।

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যান বোর্ডের চেয়ারম্যান সমিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের যেসব পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশকেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, মুক্তি পাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশিরভাগই বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। তাদের আটক করেছিল ওডিশার ঝাড়সুগুদা পুলিশ।

তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও অবৈধ অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করার নাম করে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের বেআইনিভাবে আটক করে বিজেপিশাসিত ওডিশা সরকার।

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা, পূর্ব মেদিনীপুর, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে অনেক শ্রমিক ওডিশায় কাজ করতে যান। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, সেসব শ্রমিকদেরই বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে আটক করা হচ্ছে।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব ওডিশা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্রমিকদের মুক্তির অনুরোধ করেছিলেন। প্রথমে ওডিশা পুলিশ আটক ব্যক্তিদের বৈধ নথি না থাকার অভিযোগ করলেও পরে নিজেদের ভুল স্বীকার করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ