পঞ্চগড়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতাধীন দরিদ্র ও অসহায় নারীদের জন্য সরকারের ‘ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি)’ কর্মসূচির চাল বিতরণে টাকা নেয়ার অভিযোগে আট ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ১১ জন ইউপি সদস্যের মধ্যে তিন নারী সদস্য জামিন পেয়েছেন। 

মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে পঞ্চগড়ের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের তোলা হলে বিচারক নাহিদ আকতার জুলিয়েট এ আদেশ দেন। 

পঞ্চগড় আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফী এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় কেউ বাদী না হওয়ায় বোদা থানা পুলিশ তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়।

আরো পড়ুন:

বরিশালের সাবেক এমপি জেবুন্নেছা কারাগারে

ডিআরইউতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা মামলায় স্ত্রীসহ জাকির কারাগারে

জেলহাজতে যাওয়া পুরুষ ইউপি সদস্যরা হলেন, বোদা উপজেলার ঝলই শালশিরি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুন ইসলাম, ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খলিলুর রহমান, ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হামিজ উদ্দিন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রিয় নাথ রায়, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুনীল চন্দ্র রায়, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দাহির উদ্দিন, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খাদিমুল ইসলাম এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আশরাফুল ইসলাম। 

জামিনপ্রাপ্ত তিন নারী সদস্য হলেন, ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য শেফালী রাণী; ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বিলকিস বেগম এবং ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রুপালী বেগম।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তদের ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হয়। যদিও এখনো তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) ভিত্তিতে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। বিষয়টি দুদকের তফসিলভুক্ত হওয়ায় অভিযোগপত্রসহ জিডির অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশনের ঠাকুরগাঁও সমন্বিত কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন বলেন, ভিডাব্লিউবি কর্মসূচির চাল বিতরণের অনিয়মের ঘটনায় কেউ বাদী হয়ে মামলা না করায়  মঙ্গলবার বিকেলে ৫৪ ধারায় তাদের আদালতে তোলা হয়। পরে আদালত তিন নারী সদস্যকে জামিন ও আট পুরুষ সদস্যকে জেলহাজতে পাঠান।

পঞ্চগড় আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সূফী জানান, এই ১১ ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি মামলা দায়ের করবে। 

সোমবার (২৬ মে) দিনব্যাপী বোদা উপজেলার ইউনিয়নে দরিদ্র ও অসহায় নারীদের জন্য সরকারের ‘ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি)’ কর্মসূচির ২৫৮ জন উপকারভোগীর মাঝে চাল বিতরণ করা হচ্ছিল। এ সময় উপকারভোগীদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আদায় করছিলেন ইউপি সদস্যরা। পরে স্থানীয়রা বিকেলে তাদের ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে আটকে রেখে সেনাবাহিনীকে খবর দেয়। পরে বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার ভূমি, সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এ সময় অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় এই ১১ ইউপি সদস্যকে আটক করে সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে আদায় করা নগদ ১ লাখ ১৩ হাজার ৯০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। 
 

ঢাকা/নাঈম/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ড র সদস য চ ল ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা 

সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ