গাজায় ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ দিতে ইসরায়েলকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জার্মানি ও ফিনল্যান্ডের
Published: 27th, May 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল যেন জরুরিভিত্তিতে ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দেয়, সে জন্য দেশটির ওপর চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি ও ফিনল্যান্ড। মঙ্গলবার ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে এমন আহ্বান জানান জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস ও ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেত্তেরি অর্পো।
বিগত সপ্তাহগুলোয় গাজা উপত্যকায় হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। একই সঙ্গে সেখানে ১১ সপ্তাহ ধরে ত্রাণ প্রবেশ করতে দেয়নি ইসরায়েলি বাহিনী। সম্প্রতি গাজায় সীমিত পরিসরে ত্রাণ ঢুকতে দেওয়া হলেও তা ঠিকমতো হাতে পাচ্ছেন না ফিলিস্তিনিরা। ইসরায়েলের এই নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে আসছেন বিভিন্ন দেশের নেতারা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মের্ৎসও।
হেলসিঙ্কিতে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মের্ৎসের পাশে ছিলেন পেত্তেরি অর্পোও। গাজায় অবিলম্বে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জার্মানির চ্যান্সেলর বলেন, ‘ভুক্তভোগী মানুষের কাছে যেন সত্যিকার অর্থে ত্রাণ পৌঁছায় তা নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই ইসরায়েলের ওপর চাপ দিতে হবে।’
ফ্রিডরিখ মের্ৎস বলেন, ‘গাজায় আমরা যা দেখেছি, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ ইসরায়েলের হামলায় উপত্যকাটির বেসামরিক লোকজনের ওপর ‘মাত্রাতিরিক্ত’ প্রভাব পড়ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় হত্যাকাণ্ড ও মানুষের দুর্দশা বন্ধ করার আহ্বান জানান মের্ৎস।
গাজায় জরুরিভিত্তিতে ত্রাণ সরবরাহের কথা বলেন অর্পোও। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই অবিলম্বে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিতে হবে। আর ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিত করতে আমাদের ইসরায়েলের ওপর চাপ দিতে হবে। তবে এগুলো ফিলিস্তিনিদের হাতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে হামাস যেন বাধা না দিতে পারে, তা–ও নিশ্চিত করা লাগবে।’
এদিকে মঙ্গলবার ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে সুইডেন। গাজায় বাধাহীন ও দ্রুত ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ইসরায়েলকে বলেছে দেশটি। এক বিবৃতিতে সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলের নিজেদের রক্ষা করার অধিকার রয়েছে। তবে বর্তমানে যুদ্ধ যেভাবে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ণ সরবর হ ত র ণ প রব শ ন শ চ ত কর ইসর য় ল র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পে আগের চেয়ে ২১ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ বেশি হয়েছে: মন্ত্রণালয়
শিল্পে গ্যাস সংকট চরমে দাবি করে ব্যবসায়ীদের দুর্ভিক্ষের শঙ্কা প্রকাশ করার একদিন পরই এ বিষয়ে ভিন্ন তথ্য দিলো মন্ত্রণলায়। গত বছরের তুলনায় শিল্প খাতে ২১ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ বেশি হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) ব্যাখ্যা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে পাঠিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।
এতে বলা হয়েছে, গত বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দিনে গড়ে গ্যাস সরবরাহ হয়েছে ৮২ কোটি ৩০ লাখ ঘনফুট। এবার গড়ে সরবরাহ করা হয়েছে ৯৯ কোটি ৭০ লাখ ঘনফুট। তবে ধীরে ধীরে সরবরাহ আরো বাড়ানো হচ্ছে। এর মধ্যে গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সরবরাহ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। গত বছরের এপ্রিল মাসে দিনে গড়ে সরবরাহ করা হয়েছে ৭২ কোটি ৬০ লাখ ঘনফুট। এবারের এপ্রিল মাসে সরবরাহ করা হয়েছে ১০৮ কোটি ৮০ লাখ ঘনফুট।
এতে বলা হয়, শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে শিল্প–সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পেট্রোবাংলার নজরে এসেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বক্তব্য, শিল্পে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য গত বছরের তুলনায় এবার ছয়টি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) কার্গো বেশি আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে; এর আমদানি মূল্য প্রতি ঘনমিটার ৬৫ টাকা। শিল্প খাতে প্রতি ঘনমিটারের দাম রাখা হয় ৩০ টাকা আর শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুতের ক্ষেত্রে দাম ৩১ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রতি ঘনমিটারে সরকারকে ৩৫ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ২৮ মে থেকে দিনে আরো ১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হবে।
গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বস্ত্র খাতের ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, এভাবে চলতে থাকলে ঈদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা কঠিন হবে। কয়েক মাসের মধ্যে বন্ধ হতে পারে অর্ধেক টেক্সটাইল কারখানা।
টেক্সটাইল কারখানাগুলোর মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ’র সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, “আমাদের উপদেষ্টা সাহেবরা মনে হয় উটপাখির মতো হয়ে গেছে। চারদিকে কী হচ্ছে মনে হয় তারা দেখতে পারছেন না। প্রতিনিয়ত আমাদের লে অফ হচ্ছে। কিছুদিন পরে মানুষ রাস্তায় নামবে। আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে। দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থা হবে যদি আপনি শিল্পকে বাঁচাতে না পারেন।”
ঢাকা/হাসান/ইভা