বাজেটে রংপুরের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে সমাবেশ, প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি
Published: 27th, May 2025 GMT
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে রংপুরের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে সমাবেশ করেছে গণসংহতি আন্দোলন। পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে ‘বৈষম্যমূলক বরাদ্দের ধারাবাহিকতা নয়, আসন্ন জাতীয় বাজেটে রংপুরের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবিতে’ এ সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রংপুর বিভাগের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য দেখা যাচ্ছে। সরকারি বাজেটে রাজধানীকেন্দ্রিক এবং দক্ষিণাঞ্চলকেন্দ্রিক উন্নয়ন কার্যক্রম প্রাধান্য পেয়েছে। উত্তরাঞ্চল, বিশেষ করে রংপুর বিভাগ থেকে সেই অনুযায়ী বরাদ্দ নিশ্চিত করা হয় না। এতে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, শিল্পায়ন, কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মানোন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমান বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে রংপুরে বৈষম্যের জন্য আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি দায়ী। উত্তরবঙ্গ, বিশেষ করে রংপুরের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিকভাবে উপেক্ষিত। এই বৈষম্য নিরসনে বাজেটে ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করতে হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সদস্যসচিব মুফাখখারুল ইসলাম, রংপুর মহানগরের আহ্বায়ক আবদুল জব্বার সরকার, সংগঠক রুবেল আশরাফ, রংপুর মহানগর দরজি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জোবাইদুল ইসলাম, হারাগাছ থানার সংগঠক আজিজার রহমান, ছাত্র ফেডারেশনের রংপুর জেলার আহ্বায়ক এ কে কাজল রায়, সম্পাদক আল তানজীল প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন গণসংহতি আন্দোলন রংপুর জেলার প্রচার ও দপ্তর সমন্বয়ক প্রত্যয়ী মিজান।
পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা। স্মারকলিপিতে রংপুর বিভাগের জন্য বাজেট বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষিপ্রধান অঞ্চলে কৃষি উপকরণের সহজপ্রাপ্যতা, সরকারি হাসপাতালের উন্নয়ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আধুনিকীকরণসহ ১৬টি দাবি জানানো হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ম রকল প র জন য ব বর দ দ সরক র ন নয়ন
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি